পীযূষ পাণ্ডের প্রয়াণে শোকের পরিবেশ। ছবি: সংগৃহীত।
প্রয়াত ‘অ্যাডম্যান’ পীযূষ পাণ্ডে। বিজ্ঞাপনদুনিয়ায় তৈরি হল বড় শূন্যস্থান। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয়, আইকনিক বিজ্ঞাপনের নেপথ্যে ছিল তাঁরই কলম। ‘ফেভিকল’, ‘ক্যাডবেরি’, ‘ভোডাফোন’— যে কোনও বড় সংস্থার বিজ্ঞাপনই তাঁর তৈরি। ৭০ বছর বয়সে শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। শোকপ্রকাশ তাবড় তারকাদের।
পীযূষের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে ‘অব কি বার মোদী সরকার’ পঙ্ক্তিও পীযূষের সৃষ্টি। প্রধানমন্ত্রী এ দিন সমাজমাধ্যমে লেখেন, “শ্রী পীযূষ পাণ্ডেজি তাঁর সৃজনশীলতার জন্য সমাদৃত ছিলেন। বিজ্ঞাপন ও যোগাযোগের দুনিয়ায় তাঁর অবদান পাহাড়প্রমাণ। ওঁর মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ। ওঁর পরিবার ও অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা। ওম শান্তি।”
বলিউডের শাহেনশা অমিতাভ বচ্চন শোকপ্রকাশ করেছেন। নিজের ব্লগে লেখেন, “ক্রিয়েটিভ জিনিয়াস… কাছের বন্ধু, পথপ্রদর্শক… আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। দুঃখপ্রকাশ করার ভাষা নেই। স্তব্ধ! নিঃশব্দ!” অমিতাভের সঙ্গে একাধিক কাজ করেছেন পীযূষ। ১৯৯০-এর সময়ে যখন ভারত লড়ছে পোলিও রোগের সঙ্গে, সেই সময় পীযূষের কলমের কণ্ঠ হয়ে ওঠেন অমিতাভ। পীযূষের লেখা ‘দো বুন্দ জ়িন্দগী কে’র অনুরণন শোনা যেত চারিদিকে। পোলিও রোগের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে এবং পোলিওমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে ওই কলমের জোর ছিল প্রবল। গুজরাত পর্যটনের জন্যও একসঙ্গে কাজ করেন তাঁরা। বিখ্যাত হয় ‘কুছ দিন তো গুজ়ারো গুজরাত মেঁ’।
শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে অমিতাভ বচ্চন। ছবি: এক্স
পীযূষের মৃত্যুতে হতভম্ব সঙ্গীত পরিচালক শঙ্কর মহাদেবন। ১৯৯৪ সালের জনপ্রিয় ‘ক্যাডবেরি’র বিজ্ঞাপনে কণ্ঠ দিয়েছিলেন শঙ্কর। শোকবার্তায় পীযূষের রসবোধের প্রশংসাও করেন তিনি। “তোমার কথা খুব মনে পড়বে বন্ধু… কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না।”
অভিনেত্রী-রাজনীতিক স্মৃতি ইরানি, নির্মলা সীতারমণ থেকে পরিচালক হংসল মেহতা, বিবেক অগ্নিহোত্রী— শোকপ্রকাশ করেছেন বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির তারকারা। প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘ওগিল্ভি ইন্ডিয়া’র মুখ ছিলেন পীযূষ। বিজ্ঞাপনের দুনিয়ায় অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। যে কোনও দ্রব্য বিক্রি করাই নয়, তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের আবেগকে মিশিয়ে দিতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ২০২৩ সালে ‘ওগিল্ভি ইন্ডিয়া’র কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন। বিজ্ঞাপনের কাজের পাশাপাশি মাঝে মাঝে পর্দায়ও দেখা গিয়েছে তাঁকে।