Rajkummar Rao

চিত্রনাট্যের দুর্ভাগ্য নাকি রাজকুমারের?

সন্ত্রাসবাদের প্রশিক্ষণ নিয়ে জেহাদি ওমর পৌঁছে যায় দিল্লি। চার জন বিদেশিকে অপহরণ করে সে। অপহরণের কায়দাটা বেশ সময় নিয়ে দেখিয়েছেন হনসল।

Advertisement

অন্তরা মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ০০:১১
Share:

টিজ়ার বা ট্রেলার দেখে মনে হয়েছিল, একটা টানটান থ্রিলারে মোড়া বায়োপিক। কিন্তু কতকগুলো ঘটনার ক্রমানুসার ছাড়া ছবিটা কিছুই হতে পারল না। ‘শাহিদ’-এর মতো ছবির একটা সুন্দর নির্মাণ যে পরিচালক করেছিলেন, তিনিই ‘ওমের্তা’য় এ ভাবে সূক্ষ্মতা হারালেন? অবিশ্বাস্য!

Advertisement

ওমর সইদ শেখের গল্প ‘ওমের্তা’। ওমরের নামের সঙ্গেই ‘ওমের্তা’কে মিলিয়েছেন হনসল মেটা। কিন্তু গল্পটাকে এক জন সন্ত্রাসবাদীর বাস্তব জীবনটার সঙ্গে মেলাতে পারেননি! এ দিকে বায়োপিক। তাই লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্স থেকে হঠাৎ প়ড়াশোনা ছেড়ে জেহাদে নাম লেখায় ছবির ওমর, কিন্তু তার কোনও পোক্ত কারণ দেখানো হয় না। তখনকার যুগোস্লাভিয়ায় ১৯৯০-এর গৃহযুদ্ধে বসনিয়ার মুসলিমদের উপর ঘটে চলা অত্যাচার, নিপীড়ন, হত্যার ছবি দেখেই নাকি সে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে জেহাদের। আবার পরের দৃশ্যেই তার ভিতরকার সেই যুদ্ধটা দিক বদলে নেয় কাশ্মীরে! ‘আজাদ কাশ্মীর’-এর স্বপ্নে বুঁদ হয়ে। এ রকম হঠকারী চিত্রনাট্য ইদানীং কালে বেশ কম দেখা গিয়েছে!

সন্ত্রাসবাদের প্রশিক্ষণ নিয়ে জেহাদি ওমর পৌঁছে যায় দিল্লি। চার জন বিদেশিকে অপহরণ করে সে। অপহরণের কায়দাটা বেশ সময় নিয়ে দেখিয়েছেন হনসল। কিন্তু এক সেকেন্ডের জন্যও গা ছমছম করবে না আপনার! কারণ কোনও ছন্দ নেই, ওঠাপড়াও নেই। অপহরণের ঘটনায় খুব সহজে ওমর ধরা পড়ে যায় পুলিশের হাতে। সহজে ছাড়াও পেয়ে যায়! কান্দাহারের সেই কুখ্যাত বিমান হাইজ্যাকের ঘটনা, যা ১৯৯৯ সালে কাঁপিয়ে দিয়েছিল বিশ্বকে, সেই ঘটনায় কয়েক জন সন্ত্রাসবাদীকে ছেড়ে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষগুলোর প্রাণের বিনিময়ে। তাদের মধ্যেই ছিল ওমর। অথচ ভারতের বিদেশ নীতির এত গুরুত্বপূর্ণ একটা অধ্যায়কে নেড়েচেড়েও দেখলেন না পরিচালক। মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লের নৃশংস হত্যার মোটিভও কেমন যেন মিয়ানো!

Advertisement

ওমের্তা পরিচালনা: হনসল মেটা অভিনয়: রাজকুমার রাও, রাজেশ তৈলং, রুপিন্দর নাগরা ৪/১০

ঘটনার অভিঘাত নেই, অ্যাকশনের তাৎপর্য নেই, নারী চরিত্রদের জোরালো উপস্থিতি নেই— অথচ এতটা ‘লেয়ার্ড’ একটা বিষয় বেছেছিলেন পরিচালক। যার রাজনীতি এখনকার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক গুরুতর হতে পারত। কিন্তু পুরনো কয়েকটা ঘটনার ক্লিপিংস জোগাড় করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েই দায় সেরেছেন তিনি। ওমরের ভিতরকার অন্ধকারটাকে হাতড়ে দেখার চেষ্টাও করেননি। পরিচালক হিসেবে হনসলেরও অনেক নম্বর কাটা গেল। রাজকুমার তাঁর

প্রতিভা অনুসারে অনেকটা চেষ্টা করলেন, শুধু ব্রিটিশ উচ্চারণটা নিখুঁত করতে পারলেন না। আধসিদ্ধ চিত্রনাট্যে নিজেকে অপচয়ই করলেন শুধু, দুর্ভাগ্য!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন