এই ছবি ঘিরেই যত বিতর্ক। ছবি: ফেসবুক।
এমন বিতর্কে খুব একটা জড়াননি আগে। জড়ালেন তো জড়ালেন খোদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি পোস্ট করে।
বার্লিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ছোট পোশাক পরে বসা একটি ছবি পোস্ট করেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। সেই ছবি পোস্ট করার পর থেকেই একের পর এক তির্যক মন্তব্য আসতে থাকে ওই ছবির উদ্দেশে। মুখে কিছু না বললেও এর পর আর একটি ছবি পোস্ট করেন অভিনেত্রী যা নিঃসন্দেহে এই বিতর্কের কৌশলী জবাব বলেই মনে করছেন অনেকে।
মঙ্গলবার বার্লিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দু’টি ছবি পোস্ট করেছিলেন অভিনেত্রী যার একটি নিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছোট পোশাকে অভিনেত্রীর পায়ের উপর পা তুলে বসার ভঙ্গিকে ‘অসম্মান প্রদর্শন’ বলে ব্যাখ্যা করেন বেশ কিছু ফেসবুক ইউজার। একজন ইউজার শিরীষ পানওয়ালকর মন্তব্য করেছেন, “প্রিয়ঙ্কা আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসে আছেন। এই বোধটুকু থাকা উচিত, তাঁর সামনে আপনার পা ঢেকে বসা উচিত।” অন্য এক ইউজার অবনী বরকার লেখেন, “হতে পারে আপনি একজন আন্তর্জাতিক তারকা কিন্তু মোদীজিকে আপনার সম্মান করা উচিত। দেখুন কী ভাবে আপনি তাঁর সামনে বসে আছেন!” এমনই অসংখ্য সমালোচনায় ভরে যায় প্রিয়ঙ্কার সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট। প্রিয়ঙ্কার পোস্ট করা দু’টি ছবিতেই গম্ভীর মুখে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। তাহলে কি নরেন্দ্র মোদীও প্রিয়ঙ্কার ছোট পোশাকের জন্যই অস্বস্তিতে পড়েছিলেন! সে উত্তর অবশ্য জানা যায়নি। হয়তো কখনও জানা যাবেও না।
জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রথম সারির সেলিব্রিটি বা রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর নামের সঙ্গে পোশাক বিতর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠার ঘটনা নতুন কিছু নয়। ২০১৬-র আগস্ট নাগাদ নিজের পোশাকে নরেন্দ্র মোদীর ছবি ছাপিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন রাখী সবন্ত। ওই পোশাকে নরেন্দ্র মোদীর ছবি যে ভাবে ছাপা হয়েছিল তা দেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে খুবই অবমাননাকর, এই অভিযোগে ওই বছর নভেম্বরে রাখীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়। প্রিয়ঙ্কার পোশাক ‘কুরুচিকর’ এমন অভিযোগ অবশ্য কেউ করেননি।
আরও পড়ুন: সেটে ভেঙে পড়ল ছাদ, অল্পের জন্য বাঁচলেন শাহরুখ
এরও আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পোশাক বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল এক আইএএস অফিসারের। ৯ মে, ২০১৫-এ ছত্তীসগঢ় গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তাঁকে ইনফর্মাল পোশাকে স্বাগত জানাতে এসে কোপের মুখে পড়তে হয় আইএএস অফিসার অমিত কাটারিয়াকে। কেন তিনি এই পোশাকে, সানগ্লাস পড়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনে এলেন, তা লিখিতভাবে জানতে চায় তাঁর সংশ্লিষ্ট দফতর। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয়টি নিয়েও ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে সে সময়।
পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পোশাক বিতর্কে নাম জড়ায় আমেরিকার তত্কালীন ‘ফার্স্ট লেডি’ মিশেল ওবামাও। যে পোশাকে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মিশেল, ভারতীয় মূল্যে ওই পোশাকটির দাম প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। তবে পোশাক যত দামিই হোক না কেন, তা মোটেই পছন্দ হয়নি বেশ কিছু গোঁড়া খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষের। ফলে তা নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড় ওঠে।
ছবিতে প্রিয়ঙ্কার ‘জবাব’।
তবে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিকতম সাক্ষাতের পর তৈরি হওয়া পোশাক বিতর্কের ক্ষেত্রে অবশ্য বেশ সুকৌশলে তার জবাব দিয়েছেন প্রয়ঙ্কা চোপড়া। এই সব সমালোচনার জবাবে প্রিয়ঙ্কা আর একটি ছবি পোস্ট করেন। এই ছবিতে প্রিয়ঙ্কা তাঁর মায়ের সঙ্গে বসে আছেন। দু’জনেরই পোশাক ছোট, এবং দু’জনেরই অনাবৃত পা ছবিতে স্পষ্ট ভাবে দৃশ্যমান। ছবির ক্যাপশনে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘লেগ্স ফর দ্যা ডে’। আর এই ছবিটি পোস্ট করার ঘণ্টা চারেকের মধ্যে এক লক্ষেরও বেশি লাইক পড়েছে। এ বার প্রিয়ঙ্কা নিশ্চই খুব খুশি! কারণ, প্রথম ছবিটির বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্যের মোট সংখ্যার তুলনায় জবাবি ছবির লাইকের সংখ্যা অনেক গুণ বেশি।