করোনা নয়, কোন ভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে? ফাইল চিত্র।
শীতের মরসুম পড়তেই এক ভাইরাসকে ঘিরে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বিশ্বের অন্তত ৩৬টি দেশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, ভাইরাসের সংক্রমণে যে অসুখ হচ্ছে লক্ষণগুলি হল নাক বন্ধ, গলা ব্যথা, মৃদু জ্বর সঙ্গে খুসখুসে কাশি। যাকে এক কথায় ‘ফ্লু’ বলা হয়। কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গও দেখা দিচ্ছে। ভাইরাস প্রতিরোধে তাই ‘ফ্লু’এর টিকা নিয়ে রাখারই পরামর্শ দিচ্ছে হু।
কী ভাইরাস ছড়াচ্ছে?
আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, ভাইরাসটি নতুন নয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা এ (এইচ৩এন২) ভাইরাসেরই পরিবর্তিত রূপ। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস মাঝেমধ্যেই তার ভোল বদলায়। এ বছর ভাইরাসটির জিনে রাসায়নিক পরিবর্তন (মিউটেশন) ঘটে নতুন এক উপরূপ তৈরি হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সাবক্ল্যান্ড কে’। ভাইরাসটির সংক্রমণে তাই ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই লক্ষণ দেখা দিচ্ছে।
আক্রান্তদের মধ্যে কী কী উপসর্গ দেখা দিয়েছে?
‘অ্যাকিউট নিউমোনিয়া’ হচ্ছে অনেকের। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফুসফুস। প্রবল শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে।
আরও এক ধরনের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তা হল বুকে ব্যথা। রোগীরা জানাচ্ছেন, শ্বাস নিতে গেলেই বুকে যন্ত্রণা হচ্ছে। হৃৎস্পন্দনের হারও বাড়ছে। যাঁদের আগে থেকেই হার্টের রোগ রয়েছে, তাঁদের মায়োকার্ডাইটিসের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে হৃদ্পেশিতে প্রচণ্ড প্রদাহ হয়। বুকে চাপ চাপ ব্যথা অনুভূত হয়।
শরীরে জলশূন্যতা দেখা দিচ্ছে অনেকের। সেই সঙ্গেই বমি ভাব, ডায়েরিয়া, মুখের ভিতর শুকিয়ে যাচ্ছে, গাঢ় রঙের প্রস্রাব হচ্ছে। চোখ ফুলে যাচ্ছে, প্রচণ্ড ক্লান্তি দেখা দিচ্ছে।
শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে, আচমকা, জ্ঞান হারিয়ে ফেলার মতো লক্ষণও দেখা দিচ্ছে অনেকের।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, যাঁদের হাঁপানি আছে, নিয়মিত ইনহেলার নিতে হয় অথবা নেবুলাইজ়ার নেওয়ার দরকার হয়, তাঁদের ফ্লুয়ের টিকা নিয়ে রাখা ভাল। ফ্লু-এর টিকা মানে হল ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক। এই টিকা ০.৫ মিলিলিটার ডোজ়ে প্রতি বছর নিতে হবে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস যে হেতু বছর বছর তার চরিত্র বদলে ফেলে, তাই এক বার টিকা নিয়ে রাখলে কোনও কাজ হবে না। প্রতি বছরই নিয়ম করে প্রতিষেধক নিতে হবে।