Kamal Haasan

রাজ রাজ চোল মোটেই হিন্দু ছিলেন না! ‘পোন্নিয়িন সেলভান’ বিতর্কে যোগ দিলেন কমল হাসন

পরিচালক ভেত্রিমারানের দাবি, রাজ রাজ চোল হিন্দু রাজা ছিলেন না। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ভারতে আসার পর ‘হিন্দু’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে বলে জানান তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২২ ১৪:৪৮
Share:

‘পোন্নিয়িন সেলভান’-বিতর্কে যোগ দিয়ে কী বললেন কমল হাসন?

মণি রত্নমের ‘পোন্নিয়িন সেল্ভান ১’ মুক্তি পেয়েছে সেপ্টেম্বরের শেষে। ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন এবং বিক্রম অভিনীত সে ছবি দর্শকের মন কেড়ে নিলেও ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুললেন দক্ষিণীরা। জাতীয় পুরষ্কারজয়ী তামিল পরিচালক ভেত্রিমারানের দাবি, রাজ রাজ চোল হিন্দু রাজা ছিলেন না। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ভারতে আসার পর ‘হিন্দু’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে বলে জানান তিনি। খ্রিস্টীয় ৮ শতকের এক জন শাসককে হিন্দু বলা আদৌ যুক্তিযুক্ত কি না, প্রশ্ন তুলেছেন ভেত্রিমারান। এতেই ফের দানা বেঁধেছে বিতর্ক।

Advertisement

ছবির মূল আখ্যান আবর্তিত হয়েছে চোল সাম্রাজ্য এবং সিংহাসন দখল ঘিরে। রাষ্ট্রকূটদের উপর চোল যুবরাজ আদিত্য কারিকলনের আক্রমণ দিয়ে গল্পের সূত্রপাত। যুদ্ধ শেষে যুবরাজ আদিত্য (বিক্রম) নিজের অন্যতম বিশ্বস্ত সেনাপতি ভান্থিয়াথেবন (কার্থি)-কে গুপ্তচর হিসাবে পাঠিয়ে দেন, চোল রাজ্যের উপর কাদের কুনজর রয়েছে তা খুঁজে বার করতে। সেখান থেকেই আস্তে আস্তে খুলতে থাকে ছবির জট। গল্পের মাঝে আসেন যুবরাজ আদিত্যের ভাই যুবরাজ পনিয়ন সেলভান (জয়ম রবি)। গল্প যত গড়ায় ততই বোঝা যায়, বাইরের শত্রুর থেকে ভিতরের শত্রুর সংখ্যা বেশি। চোল বংশ ছাড়া আরও কিছু দক্ষিণ ভারতীয় রাজবংশের উল্লেখ রয়েছে এই ছবিতে। তাদের অধিকাংশই চোলদের শত্রু। তবে চোলদের সব সময়েই হিন্দু শাসক হিসাবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে এ ছবিতে।

তা দেখে ভেত্রিমারান বলেছিলেন, “ক্রমাগত আমাদের প্রতীকগুলি আমাদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ভল্লুভারকে গেরুয়াকরণ করে কিংবা রাজ রাজ চোলকে হিন্দু রাজা হিসাবে দেখিয়ে আসলে মূল সত্যিটাকে ঘাঁটা হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে চলেছেন। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, সিনেমা এমন এক মাধ্যম যা সকলের কাছে তথ্য পৌঁছে দেয়। ঠিক হলে ঠিক, ভুল হলে ভুল। আর রাজনীতির কাজ কিন্তু ইতিহাস সুরক্ষিত করা, যেটা আমরা ভুলতে বসেছি।” তাঁর এই বক্তব্যে খেপে ওঠেন বিজেপি নেতা এইচ রাজা। বলেন, “ভেত্রিমারানের মতো ইতিহাসে দখল নেই আমার। তবু রাজ রাজের তৈরি দুটি চার্চ এবং দুটি মন্দিরের কথা আমি বলতে পারি। নিজেকে তিনি শিবপদ সেকারন নামে পরিচয় দিতেন। তিনি হিন্দু নন এর পরও? তা হলে ঠিক কী?”

Advertisement

জবাবটা দিলেন দক্ষিনের অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ কমল হাসন। তামিল পরিচালককে সমর্থন করে বললেন, “সত্যিই তো! রাজ রাজ চোলের আমলে ‘হিন্দু ধর্ম’ বলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। বইনবম, শিবম এবং সমনাম— এই তিন গোষ্ঠীর কথা জানা যায়। যাঁদের এক ছাতার তলায় এনে পরবর্তী কালে ‘হিন্দু’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন ব্রিটিশরা। তাঁরা জানতেন না কোনটার উচ্চারণ কী। যেমন থুথুকুণ্ডি-কে করে দিয়েছিলেন তুতিকোরিন, তেমন এটাও স্বরবিকৃতি।”

যদিও ‘পোন্নিয়িন সেল‌ভান’ দেখার পর কমলের দাবি, ইতিহাস বিকৃত না করে, গল্পের গরু গাছে না তুলে অথবা অহেতুক ভাষা বিভ্রান্তি তৈরি না করে ছবি করার চেষ্টা করা ভাল। তাতে যা হয়, সেটা বাস্তবের কাছাকাছি থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন