Raveena Tandon

খসে পড়ছে রুপোলি তবক

বলিউডের দলাদলির রাজনীতি ও তিক্ততা নিয়ে সরব দুই ভুক্তভোগী তারকাবিবেক ইন্ডাস্ট্রির অংশ হয়েও কোণঠাসা হয়েছেন। আর সুশান্ত তো ছিলেনই ‘আউটসাইডার’।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২০ ০৩:২৪
Share:

রবিনা-বিবেক

সুশান্ত সিংহ রাজপুতের শেষকৃত্যে যখন বিবেক ওবেরয় হাজির হন, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। বাকি যাঁরা সে দিন উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা প্রায় সকলেই সুশান্তের বন্ধু বা সহকর্মী। সোমবার রাতে যখন বিবেক সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, কেন তিনি সুশান্তের শেষ যাত্রায় গিয়েছিলেন, তখন বিষয়টা স্পষ্ট হয়। বিবেক যে ভাবে ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন, সেই চক্রব্যূহে আটকে পড়েছিলেন সুশান্তও। বিবেক লিখেছেন, ‘‘যদি পারতাম, নিজের জার্নি ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতাম সুশান্তের সঙ্গে। তা হলে হয়তো ওর কষ্ট খানিকটা কমত। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁরা এটাকে নিজেদের পরিবার বলেন, তাঁদের চিন্তাভাবনা করার সময় হয়েছে। কুকথা কমিয়ে যত্ন বেশি নিতে হবে, ক্ষমতাকে হাতিয়ার না করে, উদার হতে হবে, ট্যালেন্টকে ভেঙে গুঁড়িয়ে না দিয়ে তাকে সম্মান করতে হবে। তবেই পরিবার হয়ে উঠতে পারবে এই ইন্ডাস্ট্রি।’’

Advertisement

‘কোম্পানি’, ‘সাথিয়া’, ‘যুবা’-এর পরেও দীর্ঘ সময় খালি হাতে বসে থাকতে হয়েছে বিবেককে। ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের সঙ্গে প্রেম এবং তার জেরে সলমন খানের সঙ্গে শত্রুতার মাশুল দিতে হয়েছিল অভিনেতাকে। একমাত্র রামগোপাল বর্মা ছাড়া আর কেউ তাঁকে মলাট চরিত্র দেননি। ভিলেন বা পার্শ্বচরিত্রে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বিবেককে। সলমনের রোষে পড়ার কারণে সব ক্যাম্পই ব্রাত্য করে দিয়েছিল তাঁকে। সুশান্তের মৃত্যুর পরে শমিতা শেট্টি বা কোয়েনা মিত্ররাও সরব হয়েছেন বলিউডের রাজনীতি নিয়ে। কিন্তু আসল প্রশ্ন তাঁদের নিয়ে, যাঁরা নিজেদের প্রমাণ করেছিলেন, সুপারহিট ছবি দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও বলিউড অবজ্ঞা করেছে তাঁদের। বিবেক ইন্ডাস্ট্রির অংশ হয়েও কোণঠাসা হয়েছেন। আর সুশান্ত তো ছিলেনই ‘আউটসাইডার’।

এ দিন রবিনা টন্ডনও ইন্ডাস্ট্রির ক্যাম্প ও ‘মিন গার্ল গ্যাং’ নিয়ে সরব। রবিনা টুইট করেছেন, ‘‘ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যাম্প আছে। অন্যকে নিয়ে মজা করা, নায়ক বা তাঁর প্রেমিকার আবদারে ছবি থেকে অন্য অভিনেতাকে সরিয়ে দেওয়া... এ সবই আছে। যখন কেউ সত্যিটা বলে, তখন তাকে মিথ্যুক, পাগল, সাইকোটিক বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়। যদিও এই ইন্ডাস্ট্রিতেই আমার জন্ম। এই ইন্ডাস্ট্রি অনেক কিছু দিয়েছে। তবুও কয়েক জনের নোংরা রাজনীতি এর স্বাদই তেতো করে দিয়েছে। ইন্ডাস্ট্রির ইনসাইডার হলেও এই ধরনের নোংরা রাজনীতির মুখোমুখি হতে হয়।’’ অনেকে মনে করছেন, রবিনার নিশানা গৌরী খান বা করিনা কপূরদের গার্ল গ্যাং। কেরিয়ারের মধ্যগগনে থাকতে থাকতেই সরে যেতে হয়েছিল রবিনাকে। গোবিন্দ ও তাঁর জুটি ভেঙে যায়। সে জায়গায় চলে আসেন করিশ্মা কপূর। তখন গৌরী খান ইন্ডাস্ট্রির একটা খুঁটি। শাহরুখ খানের নায়িকা কে হবেন, অন্যান্য পরিচালকেরা কাকে নেবেন ছবিতে— সে সব ক্ষেত্রেও প্রভাব খাটানোর ক্ষমতা রাখতেন গৌরী। আর অন্যদের নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতে যে কপূর সিস্টারস ও তাঁদের বন্ধুদের জুড়ি নেই, সে কথা সকলেরই জানা।

Advertisement

আরও পড়ুন: অভিযোগে এ বার বিদ্ধ ‘খান’দান

পদবি বচ্চন হওয়া সত্ত্বেও থমকে গিয়েছিল অমিতাভ-পুত্রের কেরিয়ার। ফ্লপের বোঝা কোণঠাসা করে দিয়েছিল অভিষেককে। সুশান্তের ঘটনা এটাও বুঝিয়ে দিল যে, ছবি হিট হওয়াও যথেষ্ট নয়। ব্যক্তিগত পিআর আর খুঁটির আশ্রয়ও জরুরি। তারকারা যে ভাবে মুখ খুলছেন, তাতে স্পষ্ট সুশান্তের মৃত্যু ইন্ডাস্ট্রির চোরাকুঠুরির আগল ভেঙে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন