বলিউডের গতে বাঁধা বাণিজ্যিক ছবিগুলোও ক্রমশ তার গতিপথ বদলাচ্ছে। নাচ-গান-গ্ল্যামারের অতিরঞ্জন থাকলেও, তা আগের চেয়ে অনেক পরিশীলিত, বুদ্ধিদীপ্ত। আকিভ আলির ‘দে দে পেয়ার দে’ সেই পথেই একটা পদক্ষেপ।
ছবির লুক-পোস্টার ইত্যাদি দেখে মনে হতে পারে, বাণিজ্যিক এন্টারটেনমেন্ট মুভিগুলো যেমন হয়, এই ছবিও তাই। এত দিন সাধারণত এই ধরনের ছবিতে কাহিনি এবং তার ন্যারেশনের উপরে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো না। চারটে গান, দুটো অ্যাকশনের মাঝে কিছু সংলাপ... ব্যস ওটাই মশালা এন্টারটেনমেন্ট। গত দু’বছরে ইন্ডাস্ট্রি বুঝে গিয়েছে, ব্রেনলেস বিনোদনে দর্শকের আর রুচি নেই। তাই ‘দে দে পেয়ার দে’তে সব রকম উপাদান থাকলেও উপস্থাপনায় যত্নের ছাপ দর্শককে আকর্ষণ করবে।
ছবির পোস্টার দেখে বোঝা যাচ্ছে, রকুল প্রীত এবং তব্বু— এই দুই নায়িকার মাঝে অজয়। গল্পের শুরুতেই দেখিয়ে দেওয়া হয়, অজয় আর তব্বুর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। স্ত্রী এবং দুই ছেলেমেয়েকে ছেড়ে সে এখন লন্ডনের বাসিন্দা। সেখানে রকুলের সঙ্গে প্রেম। বয়সের ফারাক নিয়ে অজয় আর রকুল নিজেরাই মজা করে। রোম্যান্টিক কমেডিতে কিছু ড্রামা তো আনতেই হবে। অজয় যখন ভারতে নিজের পরিবারের সঙ্গে প্রেমিকাকে আলাপ করাতে নিয়ে আসে, সমস্যা তৈরি হয় তখন। এই পর্যায়ে কিছু গোঁজামিল, অতিকথন রয়েছে। কিন্তু স্রেফ তব্বুর অভিনয় এবং অভিব্যক্তি সেই বাধাগুলোকে মসৃণ করে দেয়।
দে দে পেয়ার দে পরিচালনা: আকিভ আলি অভিনয়: অজয়, তব্বু, রকুল প্রীত ৫.৫/১০
আকিভ আলির এটা প্রথম ছবি। কিন্তু গল্প লভ রঞ্জনের। যাঁর হাত থেকে ‘পেয়ার কা পঞ্চনামা’ সিরিজ় এবং ‘সোনু কে টিটু কী সুইটি’ বেরিয়েছে। এ ছবির গল্পের মধ্যেও একটা সতেজতা রয়েছে। শুধু অজয় আর রকুলের সমস্যায় তব্বুকে অনুঘটকের দায়িত্ব দেওয়াটা ক্লিশে।
দ্বিতীয়ার্ধে এলেও এ ছবির সেরা পারফর্মার তব্বু। অ্যাকশন-কমেডিতে অজয় যতটা দড়, রোম্যান্টিক দৃশ্যে ততটা নন। নতুন মুখ হিসেবে রকুল প্রীতও ভাল।
ছবির প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধ অনেক মজবুত। নির্মাতারা চাইলে প্রথমার্ধে রকুল আর অজয়ের প্রেমের অংশ কাটছাঁট করতেই পারতেন। তব্বু এন্ট্রি নেওয়ার পর থেকেই ছবিতে অনেক ভাল মুহূর্ত তৈরি হয়। বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পরেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছু একান্ত বোঝাপড়া থেকেই যায়। অজয় আর তব্বুর শেষ হয়ে যাওয়া প্রেম রেশ ছেড়ে যায়। ওটাই ছবির মূলধন।