প্রাপ্তি শুধুই সারার দর্শন

ছবিতে লাভ স্টোরিকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে উত্তরাখণ্ডের বিধ্বংসী বন্যাকে (২০১৩) ক্লাইম্যাক্স হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে তাতেও লাভ স্টোরিকে বাঁচানো যায়নি।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৫
Share:

কেদারনাথ ছবির একটি দৃশ্য।

উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি পথ, ঘন সবুজ উপত্যকা, লাভ জিহাদ, নায়ক-নায়িকার মধ্যে আর্থিক বৈষম্য, নায়িকার রাগী বাবা, ভিলেন প্রেমাস্পদ... সবই ছিল। কিন্তু গল্পের বাঁধুনি এত আলগা যে, হড়পা বানের মতো ছবিটাও ভেসে গেল!

Advertisement

অভিষেক কপূর পরিচালিত ‘কেদারনাথ’ হতে পারত প্রেমের এক কালজয়ী গল্প। সে সম্ভাবনা ছিল। নায়িকা পুরোহিতের ডাকসাইটে কন্যা মন্দাকিনী (সারা), নায়ক মুসলমান পিঠু মনসুর (সুশান্ত)। লাভ জিহাদের ডঙ্কা তুলে হিন্দুবাদীরা যতই চেঁচামেচি করুন, গল্পে তার এতটুকু ঝাঁজ নেই। অমিত ত্রিবেদীর সুরে ‘কাফিরানা’, ‘জান নিসার’-এর মতো গান প্রেমের আবেশ তৈরি করলেও দর্শকের মনে তা ছাপ ফেলতে পারল না। সে ব্যর্থতা অবশ্যই কনিকা ধিঁলোর চিত্রনাট্যের। ছবির প্রথমার্ধে এমন কিছুই হল না, যার জন্য দ্বিতীয়ার্ধের অপেক্ষা করা যায়। তৈরি হল না কোনও আবেগঘন মুহূর্ত বা গল্পের উত্তরণের সিঁড়ি।

ছবিতে লাভ স্টোরিকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে উত্তরাখণ্ডের বিধ্বংসী বন্যাকে (২০১৩) ক্লাইম্যাক্স হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে তাতেও লাভ স্টোরিকে বাঁচানো যায়নি। বন্যার তোড়ে একের পর এক বাড়ি-স্থাপত্য জলের গর্ভে যে ভাবে হারিয়ে যায়, তা পর্দায় দেখতে মন্দ লাগেনি। সেই ভিএফএক্স ভাল। সাম্প্রতিক সময়ের নিরিখে ধর্ম-রাজনীতির অশুভ আঁতাত নিয়ে ছবিতে ইঙ্গিতও ছিল। কিন্তু সেই সম্ভাবনাকেও ঠিক মতো এক্সপ্লোর করা হয়নি।

Advertisement

কেদারনাথ
পরিচালনা: অভিষেক কপূর
অভিনয়: সুশান্ত, সারা, পূজা, নিতিশ, নিশান্ত
৫/১০

ছবির একমাত্র প্রাপ্তি সারা আলি খান। প্রথম ছবির নিরিখে তিনি বেশ স্বতঃস্ফূর্ত। আবেগের দৃশ্যেও সারা বেশ সম্ভাবনাময়। সুশান্তের এটা সেরা অভিনয় নয়। কিছু কিছু দৃশ্যে তাঁর অতি অভিনয় বরং চোখে লাগে। সারার ধর্মনিষ্ঠ বাবার চরিত্রে অনেক দিন পরে পর্দায় দেখা গেল মহাভারতের কৃষ্ণ অর্থাৎ নিতিশ ভরদ্বাজকে। সারার দিদির চরিত্রে পূজা গোর ও প্রেমিকের ভূমিকায় নিশান্ত দাহিয়া মন্দ নন। তবে নিশান্তের চরিত্রটিকে কালো দাগের পরিবর্তে ধূসরতার মোড়কে দেখানো যেত।

পরিচালকের বোধহয় ইচ্ছে ছিল ছবিটিকে সারার ‘ড্রিম ডেবিউ’ হিসেবে দেখানোর। সেই চেষ্টায় তিনি খামতি রাখেননি। সারা সম্পর্কিত ভূরি ভূরি অনুষঙ্গ রয়েছে ছবিতে। মনসুরের নাম বললেই সারার কিংবদন্তি ঠাকুরদার নামই আপামর ভারতীয়র মনে আসে। ছবিতে ক্রিকেটের অনুষঙ্গও এসেছে অবশ্য। মায়ের মতোই ডেবিউ ছবিতে ‘গরিব নায়ক-ধনী নায়িকা’র চেনা ছকে হাতেখড়ি হল সেফ-অমৃতার কন্যার। তবে গল্পের সাহায্য পেলে তাঁর শুরুটা সর্বতোসুন্দর হতো!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন