Celebrity Durga Puja Special 2025

লোখাণ্ডওয়ালায় আমার পুজো বিশ্ববিখ্যাত, মুম্বইয়ের মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজো আমারই পুজোর অনুকরণে হয়!

থিমের পুজো আবার কী? রাজারাজড়া যে পুজোর প্রচলন করে গিয়েছেন সেই সনাতনী পুজোর আরাধনা করি।

Advertisement

অভিজিৎ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:২৪
Share:

মুম্বইয়ে নিজের পুজোয় ঢাক বাজাচ্ছেন অভিজিৎ ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।

মুম্বইয়ে লোখান্ডওয়ালার পুজো মানেই অভিজিৎ ভট্টাচার্যের পুজো। কত লোক এল-গেল! এক বছর, বড়জোর দু’বছর! তার পরেই রণে ভঙ্গ দেন তাঁরা। আপনাদের কুমার শানুই তো দু’বছর পুজো করে ছেড়ে দিয়েছেন। আর প্রত্যেক বছর আমার পুজোর জৌলুস বাড়ছেই!

Advertisement

আমার পুজো বিশ্ববিখ্যাত। কলকাতা, মুম্বইয়ের কথা ছেড়ে দিন। পৃথিবীর নানা জায়গা থেকে মানুষ আমার পুজো দেখতে আসেন। চতুর্থী থেকে দর্শনার্থীদের জন্য মণ্ডপ খুলে দেওয়া হয়। তার আগে বর্ধমান থেকে আসেন মৃৎশিল্পী। তিনি শুধু আমাদেরই প্রতিমা তৈরি করেন। সাবেকি প্রতিমা বানান। অনেকে বলেন, থিমের প্রতিমা বা পুজো হবে না? আমি সঙ্গে সঙ্গে ধমক দিই। থিমের পুজো আবার কী? কী বানাতে গিয়ে কী বানিয়ে দেবে! দেখা যাবে, ইসলামিক দেশের কোনও কিছু মায়ের আদলে জুড়ে দিল! না না, ও সবে নেই। রাজারাজড়া যে ভাবে পুজো করতেন সেই সনাতনী পুজোতেই বিশ্বাসী।

মুর্শিদাবাদ থেকে আসে ঢাকির দল। ষষ্ঠী আসার আগেই আমাদের পুজো জমজমাট। জানেন, আমার পুজোর অনুকরণে মুম্বইয়ে কত পুজো হয়! বিখ্যাত মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজোতেই তো আমার পুজোর হুবহু ছায়া! সব কিছু দেখি আর হাসি। গর্ব অনুভব করি।

Advertisement

ঢাকের তালে কোমর দোলান অভিজিৎ নিজেও। ছবি: সংগৃহীত।

আগে নিজে তদারকি করে বাজার-হাট, রান্না— সব দেখতাম। এখন পরের প্রজন্ম যোগ দিয়েছে। সকলে মিলে হাতে হাতে কাজ করি। নিখুঁত ভাবে সব কাজ হয়ে যায়। এই এক ব্যাপারে দুর্গা মা আমার উপরে পক্ষপাতদুষ্ট। আমার পুজো বিশ্বখ্যাত। আমার দুটো গানও তা-ই। এখনও দুর্গাপুজো মানেই আমার গাওয়া ‘ঢাকের তালে কোমর দোলে’ আর ‘এলো যে মা’ সব জায়গায় বাজবেই। বিশ্বাস করুন, আমার উপরে দেবীর এই কৃপা দেখে অনেকে হিংসায় জ্বলেন!

পুজো মানেই আড্ডা, খাওয়াদাওয়া, গানবাজনা, ঢাক বাজানো। চারটে দিন সব দুঃখ ভুলে থাকার দিন। খিচুড়ি, লাবড়া, বেগুনি, চাটনি— এ সব থাকেই। প্রচুর অবাঙালি যোগ দেন তো। তাঁদের কথা ভেবে নিরামিষ চপ, পনিরের বিশেষ পদ মেনুতে জুড়ে দিয়েছি। আমাদের পাড়ায় মোট পুরুষ সদস্য ৫০ জন। আমরা এই চারটে দিন এক রকম ধুতি-পাঞ্জাবিতে সাজি। ইতিমধ্যেই দর্জি এসে ট্রায়াল নিয়ে গিয়েছেন। সাদা ধাক্কাপাড় ধুতিতে রঙিন কাজ। সেই রঙে রং মিলিয়ে পাঞ্জাবি। গানের অনুষ্ঠান হয়। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় কী জানেন? কেউ আমায় গাইতেই সুযোগ দেন না! তাতে অবশ্য একটুও রাগ করি না। নতুন নতুন শিল্পী এসে গান শুনিয়ে যায়। আমার এতেই তৃপ্তি।

কলকাতায় কাজের সূত্রে, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে প্রায়ই যাই। অনেক সময় তাঁরা অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “কী রে! পুজোয় কলকাতায় আসতে ইচ্ছে করে না?” আমারও মনকেমন করে। কলকাতার পুজোয় যোগ দিতে মন চায়। কিন্তু এখানে যে আমার ঘরের পুজো! নিজের মেয়ের বিয়ে ফেলে পরের বাড়ির বিয়েতে কে নাচতে যায়, বলুন? দশমীর দিন কোনও বছর মুম্বইয়ে থাকি না। বিদেশে গানের জলসা থাকে। প্রত্যেক বছর এক মাসের জন্য অনুষ্ঠান করতে চলে যাই। এ বছরও যাব।

পুজোর তদারকিতে অভিজিৎ। ছবি: সংগৃহীত।

আর একটা মজার কথা। আনন্দবাজার ডট কম থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আমি তো খুবই রোম্যান্টিক মনের মানুষ। পুজোয় কি এখনও প্রেমে পড়ি? সপাট জানিয়ে দিয়েছি, এখনও আমায় দেখলেই মেয়েরা হুড়মুড়িয়ে এমন প্রেমে পড়ে যে, আমি কাকে ছেড়ে কার প্রেমে পড়ব? চারটে দিন ধুতি-পাঞ্জাবির সাজ যেন আমার রূপের জৌলুস আরও বাড়িয়ে দেয়। উচ্চতাও যেন বেড়ে যায় আমার!

এমন সুপুরুষের প্রেমে না পড়ে কোনও মেয়ে থাকতে পারে? সবই মা দুর্গার কৃপা!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement