Mekhla Dasgupta

‘ক্ষমতা পেলেই মানুষ যে কেন দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে যায় বুঝি না’, নজরুলের দেশপ্রেম নিয়ে কী বললেন মেখলা?

এই গানটি খুব ছোটবেলায় শিখেছিলেন মেখলা। গানের মধ্যেই রয়েছে দেশপ্রেমের ছোঁয়া। আলাদা করে দেশপ্রেমের কথা বলতে হয় না। তাই এই গানটিকেই বেছে নিয়েছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৫ ১৮:১২
Share:

মেখলার কণ্ঠে নজরুলগীতি। ছবি: সংগৃহীত।

দেশপ্রেমের অর্থ ঠিক কী? ঠিক কী ভাবে প্রমাণ করা যায় দেশপ্রেম? বিজ্ঞজনেরা হয়তো অনেক ভাল বলতে পারবেন। তবে দেশপ্রেমের সংজ্ঞাটিকে সাধ্যমতো ধরার একটা চেষ্টা করেছেন গায়িকা মেখলা দাশগুপ্ত, তাঁর সাম্প্রতিক এক মিউজ়িক ভিডিয়োয়। স্বাধীনতা দিবসের ঠিক পরেই তিনি গেয়েছেন কাজী নজরুল ইসলামের গানটি— ‘কালের শঙ্খে বাজিছে আজও তোমারই মহিমা, ভারতবর্ষ...’

Advertisement

ভিডিয়োর মধ্যে দেশপ্রেম নিয়ে নানা বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। সবটাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি। কিন্তু কেন? মেখলা বলেন, “এই ভিডিয়ো যে ভাবনা নিয়ে তৈরি করেছি, সেই ভাবনা তুলে ধরার মতো বাজেট আমার কাছে ছিল না। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ভিডিয়োটা করা।”

এই গানটি খুব ছোটবেলায় শিখেছিলেন মেখলা। গানের মধ্যেই রয়েছে দেশপ্রেমের ছোঁয়া। তাঁর বক্তব্য, আলাদা করে দেশপ্রেমের কথা বলতে হয় না তাঁকে। তাই এই গানটিকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। মেখলার কথায়, “যাঁরা আমাদের যুগে যুগে সমৃদ্ধ করেছেন, তাঁদের এই গানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তাঁদের জীবন্ত ভাবে দেখতে পাব।”

Advertisement

দেশপ্রেমের প্রসঙ্গেও কথা বলেন মেখলা। তিনি মনে করেন, একটা সময়ে দেশকে নিজের মায়ের চোখে দেখা হত। মাকে যে শ্রদ্ধা করা হয়, একই রকম শ্রদ্ধা থাকত দেশের জন্য। মেখলা বলেছেন, “অন্য দেশগুলিকে শুধু দেশ হিসেবেই দেখা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের কবি- সাহিত্যিকেরা দেশকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কিন্তু আজকাল মুখে দেশমাতৃকা বললেও, কাজে সেটা প্রকাশ পায় না। মায়ের মতো সত্যিই দেখলে, দেশে আর কোনও সমস্যাই থাকত না। বর্ষায় রাস্তাঘাট খারাপ হয়ে যায়। সত্যিই দেশকে ভালবাসলে কি এমন হত? ক্ষমতা পেয়ে গেলে মানুষ এত দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে কেন, জানি না।”

দেশমাতৃকা, ভারতমাতা, এমন নানা নামে দেশকে ডাকা হয়। কিন্তু তার পরেও নারীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে— এই প্রসঙ্গও রয়েছে মেখলার ভিডিয়োয়। একটি পংক্তি রয়েছে গানে, “জগৎ-সভা মাঝে তাহারি সন্তান আজি মলিন মুখ লাজে বিমর্ষ...।” বহু যুগ আগে ইংরেজদের শাসনের সময়ে এই গান লিখেছিলেন নজরুল ইসলাম। কিন্তু স্বাধীনতার ৭৮ বছর পরেও এই পংক্তি প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন মেখলা। একটি অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন তিনি। “কিছু মানুষের সত্যিকারের দেশপ্রেমের অভাবে আজ এই অবস্থা। স্বাধীনতা দিবসে আমি একটা অনুষ্ঠানে গাইতে গিয়েছিলাম। পুরো অনুষ্ঠানে একটিও দেশাত্মবোধক গানের অনুরোধ এল না। শেষে আমি যখন ‘বন্দে মাতরম’ গাইছি, সকলে এক এক করে উঠে যেতে লাগলেন”, বলেন ক্ষুব্ধ মেখলা।

গত কয়েক বছরে দেশপ্রেমের সঙ্গে ধর্মের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে বার বার। সেই প্রসঙ্গে মেখলা বলেন “আমি মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে দেখি না। মানুষ দু’প্রকার— হয় সভ্য, না হয় অসভ্য। আমি নজরুল ইসলাম, আব্দুল কালামকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলাম দু’জনেই আমার কাছে মুক্তচিন্তার মানুষ, দার্শনিক। কোনও ধরনের গোঁড়ামি ভাল নয়। আমি হিন্দু এবং নিজের ধর্ম নিয়ে গর্বিতও। কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দ যে হিন্দু ধর্মের কথা বলেছিলেন, সেটাই আমি বিশ্বাস করি। তাঁর ধর্ম-ভাবনায় যুক্তি ছিল, গোঁড়ামি ছিল না।” মেখলার এই মিউজ়িক ভিডিয়োটি মুক্তি পাচ্ছে রবিবার সন্ধ্যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement