Rabindranath Tagore Birthday Special

রবীন্দ্রনাথের গানে শব্দ জুড়ে গাওয়া যায়, আমি একাধিক গান এ ভাবে গেয়েছি: নচিকেতা

“এখনকার বা আগের কোনও শিল্পীর গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনি না। ওঁদের গান শুনলেই বুঝতে পারি, কবিকে না জেনে গাইছেন।”

Advertisement

নচিকেতা চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৫ ১৫:৫১
Share:

নচিকেতা চক্রবর্তীর কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি প্রথা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আমার জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেকটা প্রথার মতো। ওঁকে একটু বেশি বয়স থেকে জানতে শুরু করেছি। ওঁর লেখা যখন খুঁটিয়ে পড়তে শুরু করি তখন অনেকটাই প্রাপ্তবয়স্ক বা প্রাপ্তমনস্ক। কম বয়সে কিছু একটা লেখার পর আলাদা উন্মাদনা, যেন নতুন একটা কিছু করে ফেলেছি। পরে দেখলাম, রবীন্দ্রনাথ অনেক দিন আগেই সেটি করে ফেলেছেন! ওঁকে এড়িয়ে, ওঁকে পেরিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই।

Advertisement

ওঁকে জানতে জানতে মনে হয়েছে, রবীন্দ্রনাথ বোধহয় সংখ্যায় বেশি বিশ্বাস করতেন। ওই জন্য অনেক বেশি গান লিখেছেন। যা দিয়ে গিয়েছেন তা আমাদের সম্পদ।

এই প্রসঙ্গে বলি, কবি নানা পর্যায়ের গান লিখেছেন। আমি কিন্তু ওই পর্যায় ভাগে নেই। যে কোনও পর্যায়ের যে কোনও গান আমার কাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ গান। রবীন্দ্রনাথই হয়তো পরবর্তী কালে এই বিভাজন এনেছেন। আমার বিশ্বাস, পূজা পর্যায়ের গান, প্রেম পর্যায়ের মনে হতেই পারে। সেই জায়গা থেকে সম্ভবত কোনও গানের পর্যায় ভাগাভাগি উচিত নয়। একই ভাবে রবীন্দ্রনাথের গানকে নির্দিষ্ট কোনও বাদ্যযন্ত্র বা বিশেষ ভঙ্গিতে গাওয়ার পক্ষপাতীও নই। তাঁর সময়ে গিটার, কি-বোর্ড, চেলো ছিল না। থাকলে ওঁর মতো অত্যন্ত আধুনিকমনস্ক মানুষ এ সব যন্ত্র ব্যবহার করতেন। আজকের দিনে রবীন্দ্রনাথের গান ডিজিটালে রেকর্ডিং হবে। আধুনিক বাদ্যযন্ত্র দিয়েই হবে।

Advertisement

আমিই যেমন কবির গানে নিজের কথা বসিয়ে গেয়েছি, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলতে হয়’। এ রকম একটা নয়, একাধিক গানে নিজের ভাবনা জুড়ে দিয়েছি। একাধিক অ্যালবাম আছে আমার। অন্য রকম ভাবে ওঁকে দেখানোর চেষ্টা করেছি। কবির মনের আসল অর্থ সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এটাই মনে হয় করা উচিত।

এ ভাবে এই সময়ের কোনও গায়ক গান না। কবিকে না বুঝেই সকলে গেয়ে যাচ্ছেন। ওঁর মধ্যে থাকা অন্তর্নিহিত ভাব বোঝার তাগিদটাই কারও মধ্যে নেই। তাই মনখারাপ হলে কারও গান শুনতে পারি না। এখনকার বা আগের কোনও শিল্পীর গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনি না। ওঁদের গান শুনলেই বুঝতে পারি, কবিকে না জেনে গাইছেন। একমাত্র পীযূষকান্তি সরকারের গান শুনি। ওঁর গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত ছুঁয়ে যায় আমায়।

আমি ধর্মে বিশ্বাস করি না। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি। বর্তমানে সারা দেশে ধর্ম নিয়ে যা হচ্ছে দেখেশুনে কবির একটা গানের পঙ্‌ক্তিই মনে পড়ে, ‘তোমার পূজার ছলে তোমায় ভুলেই থাকি’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement