গাইব কী ভাবে! মশায় কাবু শান

শুক্রবার সন্ধ্যার খড়্গপুর। তালবাগিচার জমকালো মঞ্চে সবে প্রথম গান শেষ করেছেন শান। পরের গান ‘ম্যায় হু ডন...’। বাজনা বাজছে। হঠাৎ গায়ক বলে উঠলেন, “খড়্গপুরে এত মশা! এরা তো আমাকে ঘিরে ধরেছে। দেখি এই গানটা গাইলে পালায় কি না।”

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৬
Share:

খড়্গপুরের মঞ্চে শান। নিজস্ব চিত্র।

দেশান্তরী করলে আমায়...

Advertisement

অত দূর না হলেও মশার হুলে যে কী জ্বালা তা টের পেলেন মুম্বইয়ের সঙ্গীতশিল্পী শান! এ-ও বুঝলেন মশার কনসার্টে বন্ধ হতে পারে গানও!

শুক্রবার সন্ধ্যার খড়্গপুর। তালবাগিচার জমকালো মঞ্চে সবে প্রথম গান শেষ করেছেন শান। পরের গান ‘ম্যায় হু ডন...’। বাজনা বাজছে। হঠাৎ গায়ক বলে উঠলেন, “খড়্গপুরে এত মশা! এরা তো আমাকে ঘিরে ধরেছে। দেখি এই গানটা গাইলে পালায় কি না।”

Advertisement

‘ডন’-এর গান শেষ হল। তার পর একে একে অন্য গানও। তবে শেষ পর্যন্ত খড়্গপুরের মঞ্চে শানের পিছু ছাড়ল না মশক-বাহিনী।

এক বহুজাতিক সংস্থার ওই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সঙ্গীতশিল্পী শান এবং কে কে। গানের মাঝে মাঝে বারবারই মশার কামড়ের কথা বলে ওঠেন শান। কখনও বলেন, “গান গাইব কী ভাবে। মশা তো একেবারে আমার মুখের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে।” কখনও শ্রোতাদের উদ্দেশে বলে ওঠেন, “আপনারা চুপ করে আছেন কী ভাবে। এলাকার লোক বলে মশা কি আপনাদের কামড়াচ্ছে না। বাইরে থেকে এলেও আমি তো বাঙালি।” একসময় আবার শান বলেন, “এ বার একটু নাচানাচি করি। তাহলে বোধহয় রেহাই পাওয়া যাবে।”

আরও পড়ুন: ‘স্ক্রিনশট’ ফাঁস, হেনস্থার জন্য ক্ষমা চাইলেন চেতন

এ সব শুনে শান ভক্তরা কেউ কেউ হেসেছেন, কেউ আবার বলে উঠেছেন, “নিশ্চয়ই খুব কষ্ট হচ্ছে। না হলে এত বার বলবেন কেন।” শান-ভক্ত শ্রীতমা গুপ্তের কথায়, “আমাদের শহরে মশার উপদ্রব এত বড় একজন শিল্পীও টের পেলেন। এটা লজ্জার।”

গত বছর ডেঙ্গি জ্বরে কাবু হয়েছিল খড়্গপুর। গোটা পশ্চিম মেদিনীপুরের ৫২০ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মধ্যে ২৩৬ জন ছিল এই শহরের বাসিন্দা। মৃত্যুও হয়েছিল দু’জনের। এ বার ডেঙ্গি সেভাবে কামড় বসায়নি। তবে বিভিন্ন ওয়ার্ডেই জঞ্জাল ও মশার উপদ্রব নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। আর সেই মশাতেই কাবু হয়েছেন শান।

অনুষ্ঠান মঞ্চে শান যখন বারবার মশার উপদ্রবের কথা বলছেন, তখন সেখানে হাজির উপ-পুরপ্রধান শেখ হানিফ। তিনি অবশ্য মশার কথা মানতেই চাননি। তাঁর ব্যাখ্যা, “শান যেগুলোকে মশা বলছিলেন, সেগুলো আসলে শ্যামাপোকা। ’’ শান অনুরাগীদের পাল্টা যুক্তি, দেশ-বিদেশে খোলা মঞ্চে এত অনুষ্ঠান করেন যিনি, যিনি আদতে বাঙালি, তিনি মশা চিনবেন না, হয় নাকি!

খড়্গপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার যদিও বলেন, “গত বছরের তুলনায় শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ কম, মশার উপদ্রবও কমেছে। তবে শানকে সম্মান জানিয়ে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।” জেলার মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধানেরও বক্তব্য, “এত বড় শিল্পী যখন বলেছেন, তখন নিশ্চয়ই গুরুত্ব দিতে হবে। ওই এলাকায় পতঙ্গ বিশেষজ্ঞ পাঠিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন