সোহিনী আসার পর বদলেছে শোভনের জীবন? ছবি: সংগৃহীত।
বিয়ের বছর ঘুরতে মাসখানেক বাকি। এই সময় পরস্পরকে আরও ভাল করে চিনেছেন শোভন গঙ্গোপাধ্যায় ও সোহিনী সরকার। দু’জনের মাঝে সবচেয়ে বড় সেতু হিসেবে কাজ করেছে গান-বাজনা, কবিতা। সোহিনীর কিছু পরামর্শ নিজের গানের জগতে প্রয়োগ করেছেন বলে আনন্দবাজার ডট কমকে জানান শোভন। সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একসঙ্গে অনুষ্ঠানও করেছেন তাঁরা। শোভন গান গেয়েছেন আর সোহিনী পাঠ করেছেন।
কবিতা ও গান কি বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে শোভন-সোহিনীর সম্পর্কে? গায়কের কথায়, “আমাদের প্রেমটাই শুরু হয়েছিল বাইশে শ্রাবণের হাত ধরে। কবিতা-গান আমাদের জীবন জুড়ে রয়েছে। বিয়ে, সংসার এই সবের বাইরে সৃজনশীল দিক থেকে আমাদের মিল রয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ এক— তা বলা যায় না। তবে সৃজনশীল দিক থেকে আমরা খুব কাছাকাছি। আমি কোনও ভাবনাচিন্তাকে বাস্তব রূপ দিতে চাইলে সোহিনী সেটা বুঝতে পারে। এর থেকে বেশি কী আর চাই! তাই একসঙ্গে কাজ উপভোগ করি আমরা।”
বহু বছর ধরে গান শেখান শোভন। গান নিয়েই তাঁর জীবনযাপন। সোহিনীর সঙ্গে বিয়ের পরে কোনও বদল এসেছে কি? প্রশ্ন করতেই শোভন জানালেন, “সোহিনীর সঙ্গে বিয়ের পরে গান নিয়ে ভাবনাচিন্তার ক্ষেত্রেও বদল এসেছে। অন্য ভাবে ভাবতে সাহায্য করেছে আমাকে। সৃজনশীল দিক থেকে দু’টি মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারেন, গানবাজনা করতে পারেন, তার চেয়ে আনন্দের আর কিছু নেই।”
তবে একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে মতান্তরও হয় তারকা-দম্পতির। শোভন জানান, এ ভাবে সৃজনশীল বিষয় নিয়ে মতান্তর হলে তা উপভোগ করেন তিনি। তাঁর কথায়, “মতান্তর হলে তবেই তো এক জায়গায় পৌঁছোনো যায়। মতান্তর পার করে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারলে, সেটা খুবই উপভোগ্য। আমাদের দু’জনের বড় হওয়া, যাপন ভিন্ন। সেই দুইয়ে যখন মিলে একটা নতুন কিছু তৈরি হয়, সেটাই একসঙ্গে থাকার সার্থকতা।”
একজন গায়ক। আর একজন অভিনেত্রী। ক্ষেত্র ভিন্ন। কিন্তু দু’জন পরস্পরকে কোন কোন বিষয়ে অনুপ্রাণিত করেছেন? শোভনের কথায়, “আমি তো সোহিনীর থেকে অনেক কিছু শিখেছি। কিন্তু ও কী শিখেছে, তা জানি না। নিজের কাজের জায়গায় সোহিনী অনেক বেশি পূর্ণ, অনেক বেশি বাস্তববাদী এবং গোছানো। আমি একদমই গোছানো নই। এগুলো তো প্রতিনিয়ত ওর থেকে শিখি। আমাকে সব সময়ে সমৃদ্ধ করে রাখে ও। তাই আমার থেকে ও কী শিখছে, তা নিয়ে ভাবার সুযোগ পাই না।”
নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ততা থাকে। তবু শোভনের কাজেও জড়িয়ে থাকেন সোহিনী। তাই শোভন বলেছেন, “নিজের কাজের মাঝেও সব সময় আমাকে পরামর্শ দিতে থাকে। কোনটা করলে ভাল হতে পারে, সেই পরমার্শ সব সময় ওর থেকে পাই। বেড়াতে গেলে আমার গানের ভিডিয়ো করে দেওয়া থেকে শুরু করে সেগুলো কখন পোস্ট করতে হবে, সব ও-ই মনে করিয়ে দেয়।” শোভন মনে করেন, যে কোনও কাজ করতে গেলে তাঁর একটা ধাক্কার প্রয়োজন হয়। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে যে ঝামেলাও বেধে যায় মাঝেমধ্যে, তা-ও স্বীকার করেছেন গায়ক। তাঁর কথায়, “একজন মানুষকে আর কত ধাক্কা দিয়ে কাজ করানো যায়! তবে এই ঝামেলা নিয়েই সংসার। সেটাই ভাল লাগে।”