নতুন কোনও বাংলা ছবি মুক্তি পেতে চলেছে। আর দেখলেন, বলিউডের কোনও জনপ্রিয় অভিনেতা সে ছবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। আপনি ভাবলেন, বাব্বা, বলিউডের এত বড় স্টার যখন এ নিয়ে কথা বলছেন, নিশ্চয়ই ছবিটা দুর্দান্ত। ভিতরের কারসাজিটা জানলে আর এমনটা বলতেন না। সন্ধেবেলা অফিস-ফেরতা টুইটার খুলে দেখলেন, নতুন এক বাংলা ছবির গান শাহরুখ খানের ছবির গানকেও পিছনে ফেলে ট্রেন্ডিং তালিকার শীর্ষে। ভাবলেন, বাহ, আমাদের গানও কম যায় না তা হলে! টুইটারের অ্যালগরিদম বুঝলে আর এমনটা ভাবতেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবির মুক্তির আগে যা সব চলতে থাকে, তার অনেকখানিই ভাঁওতা। কখনও ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে টলিউডের কোনও ছবি নিয়ে বলিউডের তারকা পোস্ট করতেই পারেন। সেটা করেনও।
তবে অধিকাংশ সময় এ কাজের পিছনে নেহাতই ব্যবসায়িক সম্পর্ক জড়িত থাকে। অনেক সময় ছবির গুণগান গেয়ে বলিউডি তারকার টুইটের বন্দোবস্ত করে দেয় নানা পিআর সংস্থা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুম্বইয়ের এক পিআর কর্তা যেমন জানালেন, ঠিকঠাক টাকা দিলে শাহরুখ যেমন বিয়েবাড়িতে নাচতে দ্বিধা করেন না, তেমনই টুইট করতেও ঠিকঠাক লোকের মাধ্যমে টাকা পাঠালেই হয়। টুইটার ট্রেন্ডিংয়ের গল্পটাও অনেকটা এমনই। কোনও ছবির গান বা ট্রেলার ট্রেন্ডিংয়ে তুলে আনতে অনেক প্রযোজনা সংস্থা শরণাপন্ন হয় নয়ডার এক সংস্থার। তাদের হাতিয়ার অবশ্য ফেক প্রোফাইল দিয়ে লাইক বাড়ানো নয়। বরং বেশি ফলোয়ারওয়ালা অ্যাকাউন্টের মালিককে টুইট-রিটুইট পিছু দশ টাকা দিতেও প্রস্তুত এই সংস্থাটি। ‘‘টুইটার-ফেসবুক ফেক প্রোফাইল ব্লক করে দেয়। আমরা তাই সত্যিকারের অ্যাকাউন্ট দিয়ে টুইট করাই। সেটার জন্যও আলাদা বাজেট থাকে,’’ বলছিলেন সংস্থার এক অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার। এমনিতেও ট্রেন্ডিং ব্যাপারটা কোথা থেকে দেখা হচ্ছে, সেই অবস্থানের উপরেই তা নির্ভর করে। ফলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে দেখলে বাংলা ছবিই ট্রেন্ডিং দেখাবে। এটাই টুইটারের অ্যালগরিদম। মোদ্দা কথা হল, বড় তারকার পোস্ট বা ট্রেলারের ট্রেন্ড দেখে মজে যাওয়ার কোনও অর্থ হয় না। কারণ কে জানে, সেটার মধ্যে আর্থিক লেনদেন জড়িয়ে আছে কি না!