যুবভারতীর ধুন্ধুমার পরিস্থিতি নিয়ে কী বললেন বিনোদনদুনিয়ার খ্যাতনামীরা? —ফাইল চিত্র।
লিয়োনেল মেসিকে দেখার আগের কলকাতা আর পরের কলকাতার মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক! কেউ ভাবতেই পারেননি, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন হঠাৎই রণক্ষেত্রে পরিণত হবে। দর্শকের খেদ, হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য দেখা মেলার কথা ছিল তাঁর, তা-ও নাকি মন্ত্রীদের ঘেরাটোপে সম্ভব হয়নি। এর পরেই ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শাহরুখ খান-ও মূল অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত। তাণ্ডবের মুহূর্ত সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই ভাইরাল সে সব। যাঁরা যেতে পারেননি, তাঁরা ওই ঝলক দেখতে দেখতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সমাজমাধ্যমে সরব নেটাগরিকদের দাবি, আরও একবার মুখ পুড়ল কলকাতার। এই দলে বাংলা বিনোদনদুনিয়ার খ্যাতনামীরাও আছেন। কেউ প্রশ্ন তুলছেন, মাঠে কেন জলের বোতল নিয়ে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে! কারও কটাক্ষ, মাঠে উপস্থিত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসুর আন্তর্জাতিক তারকার সঙ্গে নিজস্বী তোলা নিয়ে।
আনন্দবাজার ডট কম সবিস্তার জানতে যোগাযোগ করেছিল সুমন ঘোষ, রূপাঞ্জনা মিত্র, তৃণা সাহা, সোহম মজুমদারের সঙ্গে।
পরিচালক সুমনের কথায়, “যাঁরা হাজার হাজার টাকা খরচ করে টিকিট কিনেছিলেন, তাঁদের কথা ভেবে সত্যিই খারাপ লাগছে। ওঁরা অনেক আশা করে এসেছিলেন। এ ভাবে টাকা নষ্ট হলে গায়ে লাগারই কথা।” সমাজমাধ্যমে তিনি ব্যঙ্গ ছুড়েছেন, “ঘরের ছেলে ঘরে ফেরো তো! অনেক হয়েছে। মিয়ামি ফেরত এস।” প্রসঙ্গত, সুমনও মিয়ামির বাসিন্দা। ছোটপর্দার জনপ্রিয় নায়িকা তৃণা। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতেই বলে উঠলেন, “আমারও যাওয়ার কথা ছিল। ধারাবাহিকের শুটিংয়ের জন্য যেতে পারিনি। এখন মনে হচ্ছে, ঈশ্বর যা করেছেন মঙ্গলের জন্যই করেছেন।” তাঁরও খারাপ লেগেছে সাধারণ মানুষের জন্য। বলেছেন, “শুনলাম, এক খাবার বিক্রেতা নাকি তাঁর জমানো ১০ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন। বেচারি ভাল করে দেখতেই পেলেন না!”
রূপাঞ্জনা কিন্তু সরাসরি দায়ী করেছেন আয়োজকদের। তাঁর কথায়, “বাংলায় একজন আন্তর্জাতিক তারকা আসছেন। তাঁর নিরাপত্তার জন্য সরকারি লোকজন তো থাকবেনই। মেসির গায়ে যে আঁচড় পড়েনি, সেটা তাঁদের উপস্থিতির কারণেই।” একই সঙ্গে তিনি মাঠে জলের বোতল নিয়ে ঢোকার অনুমতি দেওয়াতেও আপত্তি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, এই সমস্যা আটকাতেই এখন জলের ছোট ছোট প্যাকেট নিয়ে মাঠে ঢোকেন সবাই। কেন এই নিয়মের পরিবর্তন ঘটল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। একই সঙ্গে উদাহরণ দিয়েছেন মারাদোনার কলকাতা সফরের। “সে সময়ে কিন্তু এ রকম কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি”, বলেছেন তিনি।
মেসিকে নিয়ে ‘ম্যাসাকার’ প্রসঙ্গে সোহম যদিও শুধুই আয়োজকদের দায়ী করতে রাজি নন। তাঁর মতে, “এত বড় তারকাকে সামলানো সহজ কথা নয়। কোনও একপক্ষকেই তাই দায়ী করা উচিত নয়।” তাঁর আফসোস, “এই সময়ের বিশ্বমানের সেরা ক্রীড়া সাংবাদিক কলকাতায় মেসির আসার খবর সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছিলেন। সেই জায়গা থেকে এই ঘটনা বিশ্বের দরবারে আমাদের প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল।”