‘ভবিষ্যতের ভূত’-এর ভবিষ্যত্ নির্ধারণ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার আদালত নির্দেশ দিল ছবির প্রদর্শন বন্ধ করা যাবে না। শুধু তাই নয়, নির্বিঘ্নে ছবিটির প্রদর্শনের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে (ডিজি)।
ছবিটির প্রদর্শনীতে নানা মহল থেকে ‘বাধা’ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। দু’-এক দিন চলার পরেই অধিকাংশ হল থেকে সিনেমাটি উঠে যায়। তা নিয়ে বিস্তর বিতর্কের সৃষ্টি হয় সিনে মহলে। শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে আবার ‘ভবিষ্যতের ভূত’-এর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হতে চলেছে। রায় বেরনোর পরে ‘ভূতের ভবিষ্যত্’-এর পরিচালক অনীক দত্তের প্রতিক্রিয়া: “আমি আর কী বলব? সুপ্রিম কোর্ট যা বলার বলেছে। আইনি ব্যাপার অত বুঝি না। তবে রায় শুনে মনে হল, বাংলা কথায় মনে হচ্ছে, আদালত বোঝাতে চেয়েছে, এ সব কী হচ্ছে!”
সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনে যথেষ্টই খুশি ছবির অভিনেত্রী দেবলীন দত্ত। এই রায় ছবিটির প্রদর্শনের বিরোধীদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। একই সঙ্গে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কিছু কলাকুশলীর উপর এ দিন ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন দেবলীনা। তিনি বলেন, “আমি প্রথম দিন থেকেই বলে আসছি, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সেই সব মানুষ যাঁরা এখনও পর্যন্ত বোবা-কালা সেজে রইলেন, তাঁদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে এই রায়। যাঁরা ছবিটি চলতে দেননি এবং যাঁরা কোনও প্রতিবাদ করেননি— তাঁরা দু’জনেই সমান।”
আরও পড়ুন: আমন্ত্রণ পেয়ে আমেরিকা চলল ‘ভবিষ্যতের ভূত’
ছবির প্রদর্শনী বন্ধে ‘ওপরওয়ালা’দের হাত রয়েছে, এমন প্রসঙ্গও সামনে এসেছিল। কিন্তু সেই ‘ওপরওয়ালা’ কে বা কারা তা নিয়ে ধোঁয়াশাই থেকে গিয়েছে। শুক্রবার অনীক দত্তকে সেই ‘ওপরওয়ালা’ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অবশ্য স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা দেননি। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কবে থেকে দর্শকেরা এই ছবি দেখতে পাবেন? অনীক জানান, বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে ‘প্রসেসিং’ চলছে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
‘ভবিষ্যতের ভূত’ মুক্তি পেয়েছিল গত ১৫ ফেব্রুয়ারি। মুক্তি পাওয়ার পর দিনই কোনও ‘অজ্ঞাত কারণে’ রাজ্যের প্রায় সমস্ত সিনেমাহল থেকে তুলে নেওয়া হয় ছবিটি। শিল্পীমহল তো বটেই, এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় সাধারণ দর্শকের মধ্যেও। কার নির্দেশে ছবির প্রদর্শনী বন্ধ করা হল এ নিয়ে শহর এবং রাজ্যের বহু জায়গায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়। প্রশ্ন ওঠে, সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়ার পরেও কেন হলগুলি থেকে ছবিটি সরিয়ে নেওয়া হল। এ ভাবে সরিয়ে নেওয়ার কোনও আইন নেই বলেও দাবি করেন ছবির কয়েক জন সদস্য।
ছবির প্রযোজক কল্যাণময় চট্টোপাধ্যায় বিভিন্ন হল মালিকের কাছে সিনেমাটি সরিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে লিখিত নোটিসও পাঠান। গোটা বিষয়টি নিয়ে ইম্পা এবং ফেডারেশনের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন ছবির প্রযোজক এবং পরিচালক। কিন্তু তার পরেও ছবিটি নিয়ে কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। ফলে দীর্ঘ এক মাস ছবিটির প্রর্দশন আটকে থাকে। অবশেষে এ দিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ‘ভূতের ভবিষ্যত্’-এর ভবিষ্যৎ অনেকটা স্পষ্ট হয়ে উঠল বলে মনে করছেন সিনেপ্রেমীরা।
(হলিউড, বলিউড বা টলিউড - টিনসেল টাউনের টাটকাবাংলা খবরপড়তে চোখ রাখুন আমাদেরবিনোদনের সব খবরবিভাগে।)