wedding

‘রাসমণি’ মেগাতে বাল্য বিবাহ, কী ভাবে ন্যায্য প্রমাণ করবেন নির্মাতারা? 

একবিংশ শতাব্দীতে এসে জনপ্রিয় একটি মেগায় বাল্য বিবাহকে উদযাপন করা হবে। দর্শক সেটিকে কী ভাবে নেবেন, তা নিয়ে নির্মাতারা যে ভাবনা চিন্তা করেননি, তা নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:০৫
Share:

গদাধর আর সারদার বিয়ে

গদাধর আর সারদার বিয়ে যেন দৈব নির্ধারিত ছিল। নারায়ণ যেমন লক্ষ্মীকে ছাড়া অপূর্ণ, গদাধরও অপূর্ণ সারদাকে ছাড়া। তাই এই বিয়ের ঔচিত্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। কিন্তু প্রশ্ন তো ওঠার কথাই! একবিংশ শতাব্দীতে এসে জনপ্রিয় একটি মেগায় বাল্য বিবাহকে উদযাপন করা হবে। দর্শক সেটিকে কী ভাবে নেবেন, তা নিয়ে নির্মাতারা যে ভাবনা চিন্তা করেননি, তা নয়। ৬ বছরের ছোট্ট সারদাকে বিয়ে করতে চলেছেন ২৫ বছরের গদাধর। আর সেই প্রসঙ্গেই আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে কথা হল ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’ সিরিয়ালের পরিচালক রূপক দে-র।

Advertisement

রূপক দে জানালেন, ‘‘হ্যাঁ এই বিষয়টা নিয়ে আমরা অনেক ভেবেছি। এই সময়ে এসে মানুষ ঠিক কী ভাবে নেবেন এই বিয়েটাকে, সেটা নিয়ে চিন্তা ছিল। যদিও সবটাই ইতিহাস, বাস্তব ঘটনা। তাতেও তাকে উদযাপন করা হচ্ছে, এমন মেনে নিতে অসুবিধা হতেই পারে। কিন্তু এই বিষয়টিকে আমরা দু’ভাবে ন্যায্য প্রমাণ করেছি।’’

রূপক দু’টো ঘটনার কথা উল্লেখ করলেন। প্রথমত, ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’ সিরিয়ালে মূলত রানিমার গল্পই বলা হচ্ছে। সেখানে বরাবরই রানি রাসমণি বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। এর আগে একটি গোটা ট্র্যাক ছিল, যেখানে এক বালিকার বিয়ে দেখানো হয়। বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই সে বি‌ধবা হয়ে ‌যায়। এবং এই সমগ্র ঘটনাপ্রবাহের মাঝে ‌একাধিক বার রানিমা নিজে এগিয়ে এসে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন বিদ্যাসাগর। তার পর কী ভাবে ‘বিধবা বিবাহ আইন’ প্রণয়ন হচ্ছে, তাও দেখানো হয়েছে। সুতরাং সিরিয়ালে এর আগে ধারাবাহিক ভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তোলার ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বসের উপর রাগ, হুমকি দেওয়ার জন্য শহরবাসীকে ফোন নম্বর দিয়ে দিয়েছিলেন রেডিয়োতে

দ্বিতীয়ত, গদাধর ও সারদার বিয়ের ঘটনাটি অন্য ঘটনার তুলনায় সামান্য আলাদা। গদাধর এই বিয়ের ইঙ্গিত পেয়েছেন মা ভবতারিণীর কাছ থেকে। ভবতারিণী বলেছেন, নারায়ণ মর্ত্যে এসেছেন গদাধর রূপে। সে ক্ষেত্রে লক্ষ্মীকে তো আসতেই হবে। আর সেই লক্ষ্মীই হলেন মা সারদা। মা সারদা গদাধরের অন্তরের শক্তি। শক্তিকে বেশি দিন দূরে সরিয়ে রাখলে গদাধর নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন ধীরে ধীরে। যে উদ্দেশ্যে তাঁর এই পৃথিবীতে আগমন, সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে লক্ষ্মীর সাহায্য লাগবে। আর সে জন্যই সারদার সঙ্গে বিয়ে হয় গদাধরের।

স্বামী গম্ভীরানন্দর বই 'শ্রীমা সারদা দেবী'-র একটি পরিচ্ছেদ এখানে উল্লেখযোগ্য। শিহড়ে গদাধরের ভাগ্নের বাড়িতে সঙ্গীতানুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিন বছরের বালিকা সারদা। সেখানে তাঁকে মজা করে প্রশ্ন করা হয়, কোন পুরুষকে তিনি বিয়ে করতে চান। ছোট্ট সারদা আঙুল তুলে গদাধরকে দেখিয়েছিলেন। যেন সবটাই পূর্ব পরিকল্পিত, ললাটলিখন।

আরও পড়ুন: পর্দায় একসঙ্গে উড়বেন হৃতিক-দীপিকা, আসছে ফাইটার

পরিচালক রূপক দে-র কাছ থেকে জানা গেল, আপাতত দুই পরিবারের আইবুড়ো ভাতের এপিসোড দেখানো হচ্ছে। তার পর গায়ে হলুদ। ফের বিয়ে। গদাধর নাচতে নাচতে বিয়ে করতে যাবেন। আর বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে সারদার আগমন ও তাঁর নতুন জীবনের ছোটখাটো আনন্দের মুহূর্ত দেখতে পাবেন দর্শকরা। তৈরি হবে গদাধর-সারদার আত্মিক যোগাযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন