গল্প
মাস পয়লায় পকেট ফাঁকা হয়ে যাওয়া যুবক সূর্যর (রাজকুমার রাও) বাকি দিনগুলো কাটে পরের মাসের মাইনের দিকে তাকিয়ে। বিয়ের পর বান্ধবীর সঙ্গে বসবাসের জন্য সস্তার ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়। সদ্য তৈরি হওয়া অ্যাপার্টমেন্টের ৩৫ তলার সেই ফ্ল্যাটে জল নেই, ইলেকট্রিসিটি অনিয়মিত। হঠাৎ একদিন সে আটকে পড়ে সেই ঘরে। চাবি দরজার বাইরে। এ দিকে ফোনের চার্জ ফুরিয়ে গিয়েছে। লোকের নজরকাড়ার জন্য চিৎকার করেও লাভ হয় না। শুরু হয়, জল ও খাবার ছাড়া বেঁচে থাকার সংগ্রাম। আর ঘর থেকে বেরনোর চেষ্টা।
কী পেলাম
•রাজকুমার রাওয়ের অন্যতম সেরা অভিনয়। ‘শাহিদ’, ‘সিটিলাইটস’, ‘আলিগড়’, কোনও ছবিতেই নিরাশ করেননি তিনি। এখানেও ব্যতিক্রম হল না। মেথড অ্যাক্টিংয়ে বলিউডের টেমপ্লেট হতে পারেন।
•বক্সঅফিসের তোয়াক্কা না করে এমন বিষয় নিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্যের ফিচার ছবি করতে সাহসের দরকার হয়। পরিচালক বিক্রমাদিত্য মোটওয়ানে সেটা করেছেন।
•সিনেমাটোগ্রাফার সিদ্ধার্থ দিওয়ান দুর্দান্ত। ছোট্ট ঘরে আটকা পড়া সূর্যর ক্লসট্রোফোবিয়া দর্শকের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়ে যায় তাঁর ক্যামেরার মাধ্যমে।
তবু
•এমন বিষয়ের উপর এক ঘণ্টার বেশি ছবি চললে দর্শক বোর হবেনই। ১০২ মিনিটের ‘ট্র্যাপ্ড’ মনে হয় এডিট টেব্লেই যায়নি!
•ছবির শুরুতে ‘ইন্টারমিশন নেই’ কথাটির সঙ্গে ‘ছবির অনেক দৃশ্য আপনার ভাল না-ও লাগতে পারে’ জুড়ে দেওয়া উচিত। পাখি মেরে খাওয়া, হাতের ক্ষত থেকে রক্ত বের করার মতো দৃশ্য বেশ ডিসটার্বিং!
•আটকে পড়ার যুক্তিটাও দুর্বল। ফোনের ব্যাটারি ফুরিয়ে যাওয়া, ব্যালকনিতে বড় আগুনও কারও নজরে না আসা... চিত্রনাট্যে কি যুক্তিগুলো মজবুত করা যেত না?
•‘ট্র্যাপ্ড’ বেশ হলিউডি গন্ধে ভরপুর। ‘আমি এখানে মরব না’ সংলাপ ‘দ্য মার্শিয়ান’ ছবির কথা মনে পড়ায়। ‘কাস্ট অ্যাওয়ে’ ছবির সঙ্গী বাস্কেটবল কি এখানে ইঁদুর!
•শেষ দৃশ্যে সূর্য যে ভাবে গ্রিল বেয়ে নেমে এল, স্পাইডারম্যানও তা করতে পারলে গর্ব অনুভব করত।
হলে গিয়ে ছবিটা দেখবেন কি না, আপনার সিদ্ধান্ত। তবে নেটফ্লিক্সে কিন্তু আসছে।