আলো ছড়াক তুরস্কের শ্যান্ডেলিয়র

আর দেওয়ালে ফুটুক ওয়াল ডেক্যালের কারুকাজ। লিখছেন অদিতি ভাদুড়ি এ বছরে বদলে ফেলুন নিজের ঘর। অন্দরসজ্জায় থাকুক উৎসবের ছোঁয়া। অফ কালারের শেডে রাঙানো আপনার বেডরুমের দেওয়ালে জ্বলে ওঠা একগুচ্ছ তুবড়ি বা রংমশালের ওয়াল ডেক্যালটা তাই না-ই বা বদলালেন?

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০১
Share:

এ বছরে বদলে ফেলুন নিজের ঘর। অন্দরসজ্জায় থাকুক উৎসবের ছোঁয়া।

Advertisement

অফ কালারের শেডে রাঙানো আপনার বেডরুমের দেওয়ালে জ্বলে ওঠা একগুচ্ছ তুবড়ি বা রংমশালের ওয়াল ডেক্যালটা তাই না-ই বা বদলালেন?

Advertisement

ডেক অল...

শুধু ঘরের রঙের সঙ্গে রং মিলিয়ে কেনার অপেক্ষা আপনার পছন্দের ওয়াল ডেক্যাল। তার পর বলতেই পারেন, বাহ্, এটাই তো আমি, আমার ঘর।

বাইপাস সংলগ্ন এক বেসরকারি আবাসনে সদ্য ফ্ল্যাট কিনেছেন বছর সাঁইত্রিশের রীতেশ লোহিয়া। এক এনজিও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত রীতেশ তাঁর ছোট্ট ছিমছাম ফ্ল্যাট সাজাচ্ছেন মনের মতো করে। বললেন, “ওয়াল ডেক্যালস আমার খুব পছন্দের। যাঁরা একটু স্টাইলিশ, তাঁরা ঘর সাজানোর জন্য এগুলো নেবেনই।” তাঁর দু’কামরার ফ্ল্যাটের দেওয়ালে লাগানো ওয়াল ডেক্যাল যথেষ্ট রুচির পরিচয় দেয়। ঘরের রঙের সঙ্গে মানানসই ওয়াল স্টিকার কিনেছি। অবশ্য কিনেছি একটা অনলাইন সাইট থেকে। ঘর সাজানোর যে কোনও লাইফস্টাইল স্টোরে গেলেও পেয়ে যাবেন এই সব ডেক্যাল।”

আলো নয় আলেয়া...

রংবেরঙের কাচের টুকরোয় সেজে ওঠা ল্যাম্পশেড বা কর্নার হ্যাঙ্গিং লাইটস এখন দেদার বিকোচ্ছে নানান অনলাইন সাইটে। ইলেকট্রিক লাইট-ফিটিংসয়ের দোকানগুলোতেও জমিয়ে ভিড় বাহারে লাইটের খোঁজে। সোদপুর থেকে এসেছিলেন মৃণাল বসু এবং তাঁর স্ত্রী। নিউমার্কেট চত্বরের এক লাইটের দোকানে। সদ্য ফ্ল্যাট কিনেছেন মৃণাল। এখন কর্তা-গিন্নি মিলে শুরু করেছেন ঘর সাজানো। বললেন, “আমরা লাইট ফিটিংসের মধ্যে নতুন কিছু খুঁজছি। ওই একঘেয়ে, সেকেলে লাইট আর নয়।”

লাইট এম্পোরিয়ামের মালিক অনন্ত রায়। বললেন, “আমার এখানে কিন্তু একেবারে সাবেক ধাঁচের লাইট খুঁজে পাবেন না। শ্যান্ডেলিয়র বা কর্নার লাইট বেশির ভাগই তুরস্ক বা মিশর থেকে আনা। কাস্টমাররা খুঁজে খুঁজে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এগুলো।” স্যান্ড মেটালে তৈরি শ্যান্ডেলিয়র, পেন্ডেন্ট লাইটস, হ্যাঙ্গিং কর্নার লাইটস, শেডস, ডাউনলাইটারস হোক বা ওয়াল ওয়াশারস। নানা ডিজাইনের লাইট দিয়ে বাড়ি সাজানো অনেকের কাছেই পছন্দের তালিকায় সবার ওপরে। মার্লিন হোমটাউনের এক্সিকিউটিভ বিবেক চৌখানি যেমন বললেন, “এখন অনেকেই বাড়ি নতুন করে করছেন। তাঁরা আলোর বৈচিত্রর দিকে ঝুঁকছেন বেশি। বাড়িতেও অনেকেই ডাউনলাইটারস বা প্রফেশনাল ফ্লিটারস লাগাচ্ছেন। আগে এত পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা ভাবাই যেত না।”

মাল্টিটাস্কিং না রেডি টু অ্যাসেম্বল?

রেডি টু অ্যাসেম্বল ফার্নিচার বেশ অনেক দিন পা রেখেছে ঘরের সাজগোজের আঙিনায়। বিশ্বখ্যাত এক ফ্যাশন ফার্নিচার স্টোর ক্রেতাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখে ঘরের সাইজ, কোথায় ফানির্চার রাখা যেতে পারে সে সব থ্রি-ডি ম্যাপিংয়ের সাহায্যে দেখিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছে তাদের অনলাইন সাইটে। মাপে মাপে ফার্নিচার ফিট করে গেলে চটজলদি অর্ডার নিয়ে মাল সুষ্ঠ ভাবে কাস্টমারদের কাছে ডেলিভারি করে দেওয়ার সব দায়িত্বই তাদের। মধ্য কলকাতার এক কেতাদুরস্ত ফার্নিচার এম্পোরিয়ামের স্টোর ম্যানেজার কুন্তক মিশ্র বললেন, “আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি অর্ডার আসছে মাল্টিপল স্টোরেজ সিস্টেমের। স্টোরেজ ইউনিটের মধ্যেই থাকছে চেস্ট অব ড্রয়ার। এখন বেশির ভাগই ছোট পরিবার। স্টোরেজ অপশনও খুব কম। মাল্টিটাস্কিং ফার্নিচার না হলে সম্ভব নয়। আমরাও সে রকম জিনিসই বানাচ্ছি।” তিনি আরও জানালেন যদিও শহরে এখনও থ্রিডি ম্যাপিংয়ের সাহায্য নিয়ে ফার্নিচার ডিজাইনিংয়ের ব্যাপারটা অতটা চালু নয়।

সাজগোছ

• ফ্ল্যাটের এক কোনায় থাকা শ্যু বক্সও এখন ঘর সাজানোর আইটেম। মোটামুটি হাজার সাত-আট বাজেট থাকলে কিনে ফেলতে পারেন কিন্তু একটা ডিজাইনার শ্যু বক্স

• রাখুন ডোকরার তৈরি একটা ওয়াল ব্রাকেট। দাম? বড়জোর সাত-আটশো

• কোজি কর্নারে রাখতে পারেন লো ডিভান, লো স্টুলের সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট। এই ধরনের স্টুলের এক-একটার দাম ন’শো থেকে হাজার

• ফ্ল্যাটের এক কোনায় দিব্যি বানিয়ে ফেলা যায় গ্লাস শেলভড্ ওয়াইন সেলার। কিনতেও পারেন চাইলে। ১৫-১৬ হাজার টাকা খরচ বড়জোর

• বিভিন্ন অনলাইন সাইটে ওয়াল ডেক্যালগুলোর দাম ৩০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে

প্রয়োজনের তালিকায় সে রকমই জায়গা করে নিচ্ছে ওয়ার্ক ডেস্ক। তবে সে ওয়ার্ক ডেস্ক কম্পিউটার কাম স্টাডি টেবল নয়। তার ধরন একেবারেই আলাদা। রোজউড বা ল্যামিনেটেড প্লাইউডের তৈরি এই ডেস্কে মাল্টিপল তাক আর স্টোরেজ যাতে সিডি, বই, ফাইলপত্র সব একসঙ্গে ঢোকানো যায়। “আজকাল অনেকেই বাড়িতে থেকে অফিসের কাজ করেন। তাঁরা এই ডেস্কগুলো কিনছেন। এত চাহিদা, ভাবতে পারবেন না। চাইলে এই ওয়ার্ক ডেস্ক স্টাডি টেবল হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন,” আবারও বললেন কুন্তক।

ঘেমেনেয়ে দোকানে দোকানে না-ই বা ঘুরলেন। চাইলে ঘরে বসেই খুঁজে নিতে পারেন নিজের পছন্দের ঘর সাজানোর টুকিটাকি! আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ ইদানীং কিন্তু ঘরে বসেই মেলে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন