Ranjit Mallick On Bengali Cinema

বাংলা ছবি এখন হচ্ছে ঠিকই, ব্যবসাও করছে, কিন্তু বাঙালিয়ানা কই? আফসোস রঞ্জিত মল্লিকের

বোনেরা ভাইফোঁটায় দাদার দীর্ঘায়ু কামনা করেন। তাঁদের যখন আদালতের দ্বারস্থ হতে হয় তখন সেই যন্ত্রণা বলে বোঝানোর নয়, উপলব্ধি রঞ্জিতবাবুর।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:১৬
Share:

রঞ্জিত মল্লিক কি এখনকার বাংলা ছবি নিয়ে ভাবিত? ছবি: ফেসবুক।

পর্দায় তিনি আর দাপুটে পুলিশ অফিসার নন। ‘দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন’ করতে গিয়ে কোমরের বেল্ট খোলেন না। কিংবা সেই পরিচিত ধমক, “চাবকে পিঠের ছাল তুলে দেব”-ও শোনা যায় না তাঁর মুখে। পরিচালক অন্নপূর্ণা বসুর প্রথম ছবি ‘স্বার্থপর’-এ রঞ্জিত মল্লিক নায়িকা কোয়েল মল্লিককে বরং আইনি পরামর্শ দিয়ে আগলাবেন এ বার।

Advertisement

১৬ বছর পর বাবা-মেয়ে এক ছবিতে। এত দিনের চেনা চরিত্রের ঘেরাটোপ ছেড়ে ‘আইনজীবী’র চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়ার কারণে?

উত্তর দিতে গিয়ে আফসোস শোনা গেল তাঁর কণ্ঠে। রঞ্জিতবাবু বললেন, “এখন অনেক বাংলা ছবি তৈরি হচ্ছে। ভাল ব্যবসাও করছে। কিন্তু সেই সব ছবিতে বাঙালিয়ানা কোথায়! ‘স্বার্থপর’ ছবি অনেক দিন পর সেই স্বাদ ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমার সময়ে যে ধরনের বাংলা ছবি হত। বাঙালির অন্দরমহলের নিটোল গল্প থাকত সেখানে।” সেই জন্যই এই ছবিতে রাজি হয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। সঙ্গে এও জানালেন, গল্প যে খুব অজানা, তেমনটা নয়। কিন্তু ভাই-বোনের আইনি ঝঞ্ঝাট পর্দায় এর আগে সে ভাবে দেখানো হয়নি।

Advertisement

যৌথ পরিবারে আইন-আদালতের হাঙ্গামা লেগেই থাকে। রঞ্জিতবাবুও বনেদি পরিবারের সদস্য। কথা শেষ করতে না দিয়েই বলে উঠলেন, “কলকাতার বিশাল বনেদি পরিবার বললে যা বোঝায় সেটাই ভবানীপুরের মল্লিকবাড়ি। আমার ছোটবেলায় ২০০ সদস্যের বাস ছিল সেখানে! অনেক বড় মহলবাড়ি। এক মহল দিয়ে আর এক মহলে চলে যাওয়া যেত। একসঙ্গে থাকার সুবাদে আমাদের মধ্যে মতবিরোধ হত। কিন্তু সেই বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়াত না।”

রঞ্জিতবাবুর মতে, পারস্পরিক বিশ্বাস, ভরসা, ধৈর্য, সহনশীলতা তাঁদের প্রত্যেকের মধ্যে ছিল। মানিয়ে নেওয়া বা মেনে নেওয়ার মাধ্যমে যে কোনও সমস্যার সমাধান খোঁজার চেষ্টা করতেন মল্লিকবাড়ির সদস্যরা। “সেই জন্যই মল্লিকবাড়ি আমাদের কাছে আক্ষরিক অর্থেই ‘বাড়ি’। যেখানে নিরাপত্তা আছে, নিশ্চিন্ততা আছে, হৃদয়ের উষ্ণতাও আছে”, মত অভিনেতার। ছবিতে অভিনয় করতে করতে এ কথাও বুঝেছেন, দাদা-বোনের মধ্যে আইনি জটিলতা তৈরি হলে সেটা কতখানি মর্মান্তিক! বোনেরা ভাইফোঁটায় 'যমের দুয়ারে কাঁটা' দিয়ে দাদার দীর্ঘায়ু কামনা করেন। তাঁদের যখন আদালতের দ্বারস্থ হতে হয় তখন সেই যন্ত্রণা বলে বোঝানোর নয়, উপলব্ধি রঞ্জিতবাবুর। সেই উপলব্ধি থেকে ঈশ্বরের কাছে তাঁর প্রার্থনা, বিশ্বের সমস্ত দাদা-বোন যেন ভাল থাকেন। পরস্পরের প্রতি আস্থা, ভরসা, বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement