West Bengal Assembly Election

Bengal 2021: কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে টাকা নিয়েছি, তা হলে কান কেটে ফেলে দেব: তনুশ্রী

‘‘ব্যক্তিগত ভাবে আমি বলতে পারি দিলীপদার (ঘোষ) মতো মানুষ হয় না। শিল্পীদের উনি সম্মান করেন বলেই আমরা ওঁর দলে আছি।’’ বললেন অভিনেত্রী।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২১ ১৮:০৮
Share:

প্রচারে তনুশ্রী

প্রশ্ন: আপনার শরীরের নাকি ভিটামিন ডি অনেক বেশি হয়ে গিয়েছে?

Advertisement

উত্তর: (হেসে) তা তো হবেই! একটানা অনেক দিন সকাল ৮টা থেকে পুরো খোলা রোদে। দুপুরে অল্প সময় কোনও ভাবে খাওয়া। তারপর আবার প্রচার। রাতের খাবার খেতে খেতে ১০টা। অথচ কোনও দিন রাত ৮টার পর খাওয়া আমি ভাবতেই পারি না। এ বার তাও করতে হল।

প্রশ্ন: রোদে পুড়ে প্রচার, শরীরের ঝুঁকি— এত কিছু করতে গেলেন কেন?

Advertisement

উত্তর: বিজেপি-র আদর্শ আমায় মুগ্ধ করেছিল। বিশ্বের দরবারে নরেন্দ্র মোদীর একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। সকলেই ওঁর কথা শোনেন। আগে থেকেই এ সব দেখছিলাম। আমি নিজেও সামাজিক কাজকর্ম করেছি। যদিও তা নিয়ে কোথাও কোনও ঢাকঢোল পেটাইনি। মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম...।

প্রশ্ন: ভোটে লড়তে নেমে ইন্ডাস্ট্রির সকলেই তো এই একই কথা বলছেন...।

উত্তর: আরে, সেটাই তো স্বাভাবিক!

প্রশ্ন: কিন্তু ঋত্বিক চক্রবর্তীর মতো অভিনেতা প্রশ্ন তুলেছেন, মানুষের পাশে থাকার জন্য রাজনীতিতে কেন যেতে হবে?

উত্তর: হ্যাঁ। ঋত্বিক ভুল কিছু বলেনি। তবে আমার অনেক মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে। যখন দায়বদ্ধতা বাড়ে, তখন কোনও বড় দলের সঙ্গে যুক্ত না হলে অনেক মানুষের সঙ্গে কাজ করা যায় না। ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি রাজনৈতিক নেতা মানেই দুর্নীতিগ্রস্ত। অথচ বিজেপি-র মধ্যে ঢুকলে বুঝতে পারবেন, এখানকার নেতাদের মধ্যে কোনও দুর্নীতি নেই। ( উত্তেজিত হয়ে) এটাই তো চাই। এরকম দল থাকলে বিজেপি-তে যাব না কেন?

প্রশ্ন: বিজেপিতে দুর্নীতি নেই? অভিনয় জগতের এত মানুষ এই দলে এলেন, সে তো অর্থের জন্য। আপনি বিজেপি-র থেকে টাকা নেননি?

উত্তর: কী বলছেন! আমায় বিজেপি কেন টাকা দেবে? কেন? কেউ প্রমাণ করে দেখাক তো! কান কেটে দেব! বললেই হল টাকা নিয়েছি? আমি কেন, দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কেউই টাকা নেয়নি।

প্রশ্ন: কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর জমানায় এত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ৩১ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় দফার ভোটের ঠিক আগের দিন স্বল্প সঞ্চয়ের সুদ কমানোর নির্দেশ জারি। কী বলবেন?

উত্তর: আসল কথা কেউ বলছে না। মানুষের হাতে টাকা নেই বলে তাদের জিনিসের দাম বেশি মনে হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে টাকা কেন নেই, সেই প্রশ্নটা আগে করুন। দিদিকে ভোট দিয়েছিলেন মানুষ পশ্চিমবঙ্গে কাজ হবে এই আশায়। কোথায় হল? ব্যবসায়ীরা কেউ পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আগ্রহীই নয়। টাকাই তো নেই!

শ্যামপুরে তনুশ্রী

প্রশ্ন: আপনি দলে যোগ দিয়ে টাকা নেননি। আবার পছন্দের এলাকা যাদবপুরও পেলেন না...।

উত্তর: কিন্তু দলের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছি। সেই জন্য দল আমায় শ্যামপুর দিয়েছে।

প্রশ্ন: শ্যামপুর তো লোকসভা ভোটে পিছিয়ে-থাকা কেন্দ্র!

উত্তর: দল মনে করে, তনুশ্রীই পিছিয়ে পড়া অঞ্চল থেকে জয় ছিনিয়ে আনার ক্ষমতা রাখে। তাই শ্যামপুর। এটা আমার কাছে পরীক্ষার মতো। প্রচারের সময়ও আমি কম পেয়েছি। ৬ এপ্রিল নির্বাচন হয়ে গিয়েছে আমার। প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা হয়েছিল ১৪ মার্চ। ভাবুন কত কম সময়! এর মধ্যে প্রত্যেকের বাড়ি গিয়েছি। অভিযোগ শুনেছি।

প্রশ্ন: আবার ফুলহাতা গলাবন্ধ ব্লাউজ বানাতে হয়েছে। সেটা কি দলের নির্দেশ?

উত্তর: কী মুশকিল! দল কেন পোশাক নিয়ে বলবে? আমি তো বরাবর শাড়ি পরতে ভালবাসি। আর রোদের জন্য ফুলহাতা পিঠবন্ধ ব্লাউজ বানিয়েছিলাম। যাতে রোদ থেকে বাঁচতে পারি। বিজেপি ব্লাউজ পরা নিয়ে কেন বলবে?

প্রশ্ন: শ্যামপুরের মানুষ কী বললেন আপনাকে?

উত্তর: কত মানুষের চোখের জল দেখলাম! কোনও রাস্তা ঠিক নেই। খাওয়ার জল নেই। একটা হাসপাতাল অবধি নেই। আমার বিরোধীপক্ষ তো গত ১০ বছরে শ্যামপুরের বহু জায়গায় দেখাই দেননি। উল্টে শ্যামপুরের কী দরকার জানতে চাওয়ায় উনি সরকারকে বলেছিলেন, সব ঠিক আছে। শ্যামপুরের জন্য তিনি কিছু চান না।

প্রশ্ন: আপনি তা হলে শ্যামপুর থেকে জিতছেন?

উত্তর: মানুষ এসে আমায় বলেছে, দিদি আপনাকে জিতে আসতেই হবে। মানুষ আমায় বিশ্বাস করছে। এটাই পাওয়া। আমি আত্মবিশ্বাসী। ছোটবেলা থেকেই অনেক কিছুর দায়িত্ব নিতে শিখেছি। এখনও বাড়ির যে কোনও সমস্যা আমিই মেটাই। ইন্ডাস্ট্রির সক্কলে আমায় ভালবাসে। আমি মানুষের সঙ্গে মিশতে পারি।

প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রির কারা আপনাকে নির্বাচনের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন?

উত্তর: সকলেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

প্রশ্ন: রাজ চক্রবর্তী?

উত্তর: এটা প্লিজ...( খানিক অস্বস্তি)।

প্রশ্ন: রাজ কিন্তু সহকর্মী হিসেবে শ্রাবন্তীকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন...।

উত্তর: হ্যাঁ। আমাকেও রাজ শুভেচ্ছা জানিয়েছে। আমরা শিল্পীরা সকলেই সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। দিনের শেষে আমরা তো সহকর্মী।

প্রশ্ন: আর এই শিল্পীদের কিনা আপনার দলের সভাপতি বললেন ‘রগড়ে দেব’!

উত্তর: একটা কথা নিয়ে এত কিছু হচ্ছে! ভোটের হাওয়ায় মিম তৈরি হয়ে যাচ্ছে। আর সেটাই বাজারে চলছে। ব্যক্তিগত ভাবে আমি বলতে পারি দিলীপদার(ঘোষ) মতো মানুষ হয় না। শিল্পীদের উনি সম্মান করেন বলেই আমরা ওঁর দলে আছি। মাননীয়াও তো মোদীজি, অমিত শাহকে বলছেন 'হোঁদল কুতকুত'। তা হলে? কী বলবেন?

প্রশ্ন: মানে আমি খারাপ শুনলে খারাপই বলব! এটাই রাজনীতি?

উত্তর: একেবারেই না। তবে দিলীপদা কিছু বললে তার প্রেক্ষিত না জেনেই লোকে মিম বানাচ্ছে। কোন ঘটনায় কী বলেছেন সেটা সামনে আসছে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement