দেবাসুরে তুলকালাম কাণ্ড

লৌহমানব ‘আয়রনম্যান’, দেবতা ‘থর’, সবুজ ঠাকুর ‘হাল্ক’, জাদুকর ‘স্ট্রেঞ্জ’, আফ্রিকার রাজা ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ এবং আরও অনেকে। দলের বীরসেনাপতি কন্দর্পকান্তি ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’। দৃশ্যসুখের বিস্ফোরণে রণক্ষেত্র মাতালেন এই সুপারহিরোরা।

Advertisement

চিরশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৮ ১২:০০
Share:

অমৃতের ছয়টি মণি। দেবদেবীদের ঘরে সুরক্ষিত। যেমন, মনের মণিটা জ্বলজ্বল করছে লিপস্টিক-রঙের দেবতার কপালে। হঠাৎ দূর টাইটান গ্রহে, থামের মতো ঘাড়টা একবার মটকে, কিম্ভূত ও দুর্বৃত্ত সন্ততিদের নিয়ে উঠে দাঁড়াল ‘থানোস’ দৈত্য। বুকে তার জটিলতা, চোয়ালে জানালার শিক। ধারালো চোখ ওই ষড়রত্নে। ওগুলো আংটিতে পরলে, সে হয়ে উঠবে ত্রিকালজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। এক ফুঁয়ে ছাই করবে ব্রহ্মাণ্ড। থানোসকে থামাতে অস্ত্রে শান দিতে দিতে ছুটে আসছেন লোকপ্রিয় দেবতাদল। ‘অ্যাভেঞ্জার্স টিম’। প্রত্যেকের তূণে আশ্চর্য শক্তিভাণ্ডার।

Advertisement

লৌহমানব ‘আয়রনম্যান’, দেবতা ‘থর’, সবুজ ঠাকুর ‘হাল্ক’, জাদুকর ‘স্ট্রেঞ্জ’, আফ্রিকার রাজা ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ এবং আরও অনেকে। দলের বীরসেনাপতি কন্দর্পকান্তি ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’। দৃশ্যসুখের বিস্ফোরণে রণক্ষেত্র মাতালেন এই সুপারহিরোরা।

‘ডিসি কমিকস’ আর ‘মার্ভেল কমিকস’-এর মেগাযুদ্ধও তো চলছেই। ‘ডিসি’র সুপারহিরো ভিলেনরা কিংবদন্তি। সুপারম্যান, ব্যাটম্যান, জোকার। তবু একা বা দলবদ্ধ ভাবে সিনেমায় এলে প্রায়ই ফ্লপ তাঁরা। বেশি জেতে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’, ‘আয়রনম্যান’দের মার্ভেল সিরিজ। এ বারও প্রায় গোটা হলিউড পরদায়। ‘গেম অব থ্রোনস’-এর বিখ্যাত বামনও হাজির থরের অস্ত্র-গুরুর ভূমিকায়। ছবির খরচ বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

Advertisement

সেই প্রত্যাশার পাহাড় কাঁধে তুলতে লেখক-পরিচালকরা হিমশিম। সিরিজের মোট ১৮টা সিনেমার সুতো একত্র জুড়তে গিয়েই জট। তায় গলদ ছবির আবহনির্মাণে। এ গল্প হাহাকারের, আতঙ্কের। সেই বেদনার আঁচ কেবল থানোস ও তার সৎমেয়ের রক্তাক্ত রসায়নে! এমন গনগনে সিনেমায় ক্ষণে ক্ষণে ফাজলামি বিসদৃশ। থর আর ক্যাপ্টেন আমেরিকা চুলের কেত নিয়ে ঠাট্টা জোড়ে! স্পাইডারম্যান বিশ্ববখাটে! আর টি-চালা বা ব্ল্যাক উইডোর মতো দুর্ধর্ষ চরিত্ররা চোখের পলকে মিলিয়ে গেল! এমন ঠাসাঠাসি আর গতিশীল চিত্রনাট্যে মনে হয়, ঘটনার খরস্রোতে কিছু ভুলছি না তো? কায়দা দেখানোর, হাসানোর, চমকানোর চেষ্টা না থাকলে আরও উপভোগ্য হতো ছবি।

তবে যেমনটা তাঁরা চেয়েছিলেন, হৃদয় জখম হয়েছে। যাতে মলমের লোভে পরের পর্ব দেখতে হলে ফেরেন দর্শক। তাই খানিক অসংলগ্ন, অতৃপ্তি মাখানো শেষদৃশ্যে পর্দায় যখন নামের মিছিল, তখন অন্ধকারে দর্শক অবিশ্বাসে পাথর। তার পর বাজল ‘সিক্যুয়েল’-এর ঘণ্টা। দর্শক নয়। নির্মাতাদেরই প্রত্যাশা মিটল। কারণ, আকাঙ্ক্ষিত গুঞ্জন উঠল। থানোস কি বক্স অফিসের এই বাহুবলীদের সত্যিই মারল? না কি ভক্তের গণনা ও সাধই ফলবে? উত্তর আসছে। আসছে বছরে।

অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার

পরিচালনা: রুসো ব্রাদার্স

অভিনয়: রবার্ট ডাউনি জুনিয়র, ক্রিস হেমসওয়র্থ, ক্রিস ইভান্স

৫.৫/১০

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement