অভিনেত্রী দর্শনা বণিক। ছবি: ফেসবুক।
স্বল্পবসনা দর্শনা বণিক। অভিনেত্রীর ঠোঁটে ১৯৮৪ সালের ছবি ‘তিন মূর্তি’ ছবির গান ‘চুরি ছাড়া কাজ নেই’-এর ‘রিমেক’। আপাতত এই গানের দাপটে তিনি একই সঙ্গে নন্দিত এবং নিন্দিত!
জয়ব্রত দাসের ‘দি অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’ ছবির এই ‘আইটেম’ গানে হাস্যে-লাস্যে, শরীরী বিভঙ্গে মাতিয়ে দিয়েছেন দর্শনা। ইউটিউবে গানটি মুক্তি পেতেই প্রশংসা, নিন্দা দু-ই জুটেছে তাঁর। দর্শনাকে গানের দৃশ্যে সুন্দর দেখিয়েছে, মত এই প্রজন্মের। অথচ আগের প্রজন্মের নেটাগরিকেরা কুমন্তব্য করেছেন। মজার কথা, ছবিতে গানটি বার বার শোনা গেলেও একবারও দর্শনাকে দেখা যায়নি! তাঁকে দেখতে হলে চোখ রাখতে হবে ইউটিউবে।
পর্দায় তাঁকে দেখানো হবে না জেনেও কেন রাজি হলেন দর্শনা? প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। অভিনেত্রীর সাফ জবাব, “বলিউডে তো হামেশাই এ রকম গান তৈরি হচ্ছে। এগুলোকে প্রচারধর্মী গান বলে। ইদানীং এই ধরনের গানের চাহিদা তৈরি হয়েছে। সেই জন্যই রাজি হয়েছিলাম।” উদাহরণ হিসাবে তিনি আরিয়ান খানের প্রথম সিরিজ় ‘দ্য ব্যাড্স অফ বলিউড’-এর কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, “ওই সিরিজ়ে তমন্না ভাটিয়ার ‘গফুর’ গানটাও ওই গোত্রের। গান হিট। গানের দৌলতে তমন্নাও নতুন করে জনপ্রিয়।” তা ছাড়া, লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া পুরনো গানটিও তাঁর বেশ পছন্দের। এ রকম একটি গানের অংশ হওয়ার সুযোগ আসায় তিনি এককথায় রাজি হন। “এটা বলতে পারেন, এই ধরনের গান এবং তাতে স্বল্পবাসে আমার উপস্থিতি এই প্রথম”, বলেছেন তিনি।
গানের দৃশ্যে রুদ্রনীল ঘোষ, জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে স্বামী সৌরভ দাসও রয়েছেন। সেই জন্যই সাহসী হতে সমস্যা হয়নি?
দর্শনার কণ্ঠে উত্তেজনার ছাপ স্পষ্ট। তিনি বললেন, “ছবিতে আমি কোন দৃশ্যে অভিনয় করব বা কী ধরনের পোশাক পরব, সেটা কিন্তু বাবা বা সৌরভ ঠিক করে দেয় না! আমার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।” তিনি আবারও দৃষ্টান্ত দেখান বলিউড-সহ দেশের অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষার ছবির। “আমাদের দেশের অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষার ছবিতে স্বল্পবাসে ‘আইটেম ডান্স’ হয়। বাংলায় হলে সমস্যা কোথায়?”, প্রশ্ন তুললেন দর্শনা।
বলিউড যদি দর্শনার ‘উদাহরণ’ হয়, তা হলে আগামী দিনে তাঁকে কি মায়ানগরীতেই বেশি দেখা যাবে? বলিউড তারকারা কিন্তু কটাক্ষকেও হাসিমুখে গ্রহণ করেন। প্রচারের অঙ্গ হিসাবেই দেখেন।
অভিনেত্রী ইতিমধ্যেই অনুরাগ বসুর ‘মেট্রো ইন দিনো’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। বিক্রম ভট্টের আগামী ছবিতে তিনি মিঠুন চক্রবর্তীর ছোট ছেলে নমোশি চক্রবর্তীর বিপরীতে অভিনয় করেছেন। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে তাঁর বক্তব্য, “ছোট থেকে বাংলার পাশাপাশি হিন্দি ছবি দেখেছি। আর বলিউডে কাজ করার আকর্ষণ কার না থাকে বলুন?” তাই শুধুই ‘আইটেম’ গান নয়, টিনসেল টাউনের মানসিকতায় অভ্যস্ত হতে চেষ্টা করছেন। দর্শনা জানিয়েছেন, আগে মন্তব্যবাক্সে নেতিবাচক মন্তব্য দেখলে প্রচণ্ড রেগে যেতেন। এখন এড়িয়ে যেতে শিখেছেন।
নমোশির আগে দর্শনা বাংলাদেশের শাকিব খান, ভোজপুরি তারকা পবন সিংহের নায়িকা হয়েছেন। অথচ বাংলায় হয় তিনি ‘আইটেম’ নাচে, নয় পার্শ্বচরিত্রে! বাংলায় কি দর্শনার কদর নেই?
প্রশ্ন শুনে একটু চুপ অভিনেত্রী। তার পর বলেছেন, “অনেকগুলো বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছি। অথচ, বাংলা ছবিতে আমায় কেউ নায়িকা ভাবেন না! এ কথা সৌরভ প্রায়ই জিজ্ঞাসা করে। জানতে চান আমার ঘনিষ্ঠেরাও। সঠিক কারণ আমারও জানা নেই।” তিনিও পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, “যদি বাহ্যিক সৌন্দর্য নায়িকা হওয়ার মাপকাঠি হয়, তা হলে সেটা আমার আছে। অভিনয়টাও বোধহয় খুব খারাপ করি না। সেটেও আমাকে নিয়ে কখনও সমস্যা হয়নি। তা হলে আমার খামতি কোথায়?”