Entertainment News

রাজ-শুভশ্রীর সঙ্গে ছবি করবেন? মিমি জানালেন...

একান্ত আলাপচারিতায় আনন্দবাজার ডিজিটালের এই প্রশ্নের মুখে উল্টে প্রশ্ন করলেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। সামনে স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। মিমি বললেন, “উফ! সেই দিন ভোলার নয়। আমি ভীষন টমবয় টাইপ ছিলাম। আমাকে প্রোডাকশন ইউনিট থেকে বলা হয়েছিল কুর্তি পরে আসতে। মেক আপ কেনার পয়সা নেই... মায়ের কাজল আর লিপ গ্লস লাগিয়ে অটো করে অডিশন। রাজ বলেছিল আমি নায়িকা। শ্রীকান্তদা বলেছিল গাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবে। সে দিন ভেতরের স্বপ্নটা যেন একটু বেরিয়ে এল...” অবাক লাগে। এত কিছুর পরে মিমি রাজ চক্রবর্তীর কথা বললেন!

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ১২:১০
Share:

রাজ-শুভশ্রী-মিমি।

না, কোনও সিনেমার প্রচার নয়। বিয়ে বা প্রেমের নতুন খবর নয়। নতুন গুরুত্বপূর্ণ কাজে যোগ দেওয়ার আগে একলা মিমিকে পাওয়া গেল একেবারে অন্য মেজাজে। 'গানের ওপারে' থেকে 'মিমির এ পারে' নস্ট্যালজিক তিনি!

শিলিগুড়ির সেই ছোট্ট মেয়ে এম বি এ নয়, রবিনা ট্যান্ডনের অভিনয় দেখে আয়নার সঙ্গে সে নিজের স্বপ্ন বুনতো! 'মনে মনে নিজেকে বলতাম অভিনেত্রী হব। বাবা মা, কলকাতায় পাঠালো পড়তে কিন্তু আমার মন নিজেকে পর্দায় দেখতে ছটফটিয়ে উঠছে'।
চাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন...
একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না ধারাবাহিকের জন্য। বরং রাজ চক্রবর্তীর 'শত্রু' র জন্য অডিশন নিয়েছিল সেটা প্রথমেই হ্যাঁ হয়ে যায়নি। আর এরকম পরিস্থিতিতেই জানলেন ঋতুপর্ণ ঘোষের তত্বাবধনে অভিনয় করতে হবে। “মনে হয়েছিল, ভাগ্যিস 'শত্রু' হয়নি। ঋতুদার বাড়িতে শুরু হল ওয়ার্কশপ। ইংলিশ মিডিয়াম, অসমের মেয়ে আমি। তখন তো ভাল করে বাংলা বলতে পারি না। ঋতুদা রোজ ডিক্টাফোনে সংলাপ বলে দিতো... সেখান থেকে শুরু”— বললেন মিমি।

Advertisement

আরও পড়ুন, ঋতু আমাকে বলেছিল, ওর এক পুরুষ প্রেমিক আছে

তবে ঋতুপর্ণ ঘোষ, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের পরে আর কোনও ধারাবাহিকে কাজ করতে ইচ্ছে হয়নি তাঁর। স্বপ্নের ক্যানভাটা ছিল অনেক বড়। বাবা, মায়ের আপত্তি সত্ত্বেও লড়াইয়ে নামলেন মিমি। “মনে আছে 'গানের ওপারে' করে বেশ কিছু টাকা ব্যাঙ্কে ছিল আমার। ক্রমশ দেখলাম সেটা শেষ। টালিগঞ্জে বাড়ি ভাড়া করে থাকতাম। জেদ ছিল, বাবার থেকে কিছু নেব না। কতই বা বয়স তখন? একাই মনের জোরে পথ খুঁজছি”...একটানা বলে যান মিমি।
শ্রীকান্ত মোহতা আর রাজ চক্রবর্তী পথটা দেখান।

Advertisement

উত্তেজিত গলায় মিমি বললেন, “উফ! সেই দিন ভোলার নয়। আমি ভীষন টমবয় টাইপ ছিলাম। আমাকে প্রোডাকশন ইউনিট থেকে বলা হয়েছিল কুর্তি পরে আসতে। মেক আপ কেনার পয়সা নেই... মায়ের কাজল আর লিপ গ্লস লাগিয়ে অটো করে অডিশন। রাজ বলেছিল আমি নায়িকা। শ্রীকান্তদা বলেছিল গাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবে। সে দিন ভেতরের স্বপ্নটা যেন একটু বেরিয়ে এল...”
অবাক লাগে। এত কিছুর পরে মিমি রাজ চক্রবর্তীর কথা বললেন!


টালিগঞ্জের লম্বা দৌড়ের এক নম্বর নায়িকা?

মিমির জবাব, “কী মুশকিল! আমি তো প্রফেশনাল। কাজের ক্ষেত্রে রাজ 'বোঝে না সে বোঝে না' আমায় ওই ব্রেক না দিলে এত দূর আমি আসতে পারতাম না। রাজ আর শ্রীকান্তদার কথা আমার কেরিয়ারের জায়গা থেকে তো বলতেই হবে।”
হ্যাঁ অনেক তাড়াতাড়ি অনেক দূর এসেছেন তিনি। টালিগঞ্জের লম্বা দৌড়ের এক নম্বর নায়িকা?
নম্বরের প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললেন, “একটানা কমার্শিয়াল ছবি করে গিয়েছি। কোনও দিকে তাকাইনি। লোকে বলতে শুরু করল মিমি নাচে, গায়, অভিনয় পারে না। ছবি বাছতে শুরু করলাম। আমি তো ভাবিনি শিবুদার ছবিতে ডাক পাবো। অন্য ধরনের চরিত্র, সেটাও করলাম।”
আর এর পর থেকেই কি মিমি বড্ড নাক উঁচু হয়ে গেলেন?
মিষ্টি হেসে বললেন, “নাহ...আমি বুঝতে পারছি আমায় কেন এরকম ভুল বোঝে অনেকে। আমি আসলে সত্যি খুব মুডি! সব সময় ভেবে, হেসে, কথা বলতে পারি না, আমি একা থাকতে খুব ভালবাসি। নুসরৎ জানে। এই একা থাকতে চাইলেও হয়তো লোকে ভাবে আমি শো অফ করছি বেশি! তা কিন্তু নয়।” সাফ জবাব মিমির।

আরও পড়ুন, ‘আমি অরিজিৎ সিংহ হতে চাই’

রাজ-শুভশ্রীর বিয়ে আর মিমির প্রেম নিয়ে মিডিয়া ব্যস্ত হয়েছিল খুব... সামলালেন কী ভাবে?
বিরক্ত মিমি বললেন, “আমি না ক্লান্ত! যারা আমার প্রেম, বিয়ে নিয়ে বানিয়ে, মিথ্যে লিখল, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, তাদের বাড়িতে মা বাবা নেই? রোজ সকালে কাগজের পাতায় যা সব লেখা হচ্ছিল সেগুলো দিনের পর দিন আমার মা-বাবাকে পড়তে হয়েছে! এত্ত এত্ত ফেক নিউজ।”
তা হলে রাজ শুভশ্রীর বিয়েতে গেলেন না কেন? “আরে! টুইট করে উইশ করেছি আমি। শুভশ্রীও ধন্যবাদ জানিয়েছে। দেখুন আর পাঁচটা মানুষের মতোই তো আমরা। কিন্তু মিডিয়া এমন করে, যেন অভিনেত্রী ছাড়া অন্য কোনও মানুষের সম্পর্ক নিয়ে টানাপড়েন চলে না!”
আচ্ছা, ধরা যাক এ বছর এমন একটা ছবি হবে যার পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, অভিনয়ে মিমি, শুভশ্রী। আপনি করবেন?
প্রচণ্ড হেসে উঠলেন মিমি। তারপর ঘোর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বললেন, “টলিগঞ্জের হক আছে এরকম ছবি করার?”
সরাসরি উত্তর এড়িয়ে যেতে চাইলেন স্বভাবচিত ভঙ্গিতে।
প্রশ্নটা আবার এল, ধরে নিন এরকম ছবির প্রস্তাব এল, তখন?
কিছুক্ষণ সব চুপ!
তারপর উত্তর এল, “কী জানি, করতেও পারি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন