কিনে দে আমায় ঝুমকা

অষ্টমীর সাজে ঝুমকা ছাড়া কী বা মানায়? লিখছেন স্বরলিপি ভট্টাচার্য‘দুলের আমি, দুলের তুমি, দুল দিয়ে যায় চেনা’। সুকুমার রায় গোঁফ দিয়ে হেড অফিসের বড়বাবুকে চিনিয়েছিলেন। আর জেন ওয়াই নিজেদের চিনিয়ে দিচ্ছে দুল নিয়ে। অষ্টমীর সাজে ঝুমকা ছাড়া কী বা মানায়? লিখছেন স্বরলিপি ভট্টাচার্য

Advertisement
শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৪৯
Share:

‘দুলের আমি, দুলের তুমি, দুল দিয়ে যায় চেনা’। সুকুমার রায় গোঁফ দিয়ে হেড অফিসের বড়বাবুকে চিনিয়েছিলেন। আর জেন ওয়াই নিজেদের চিনিয়ে দিচ্ছে দুল নিয়ে। তাদের ফ্যাশন স্টেটমেন্টকে কমপ্লিট করছে দুলের সাজ। এ বারের পুজোর ট্রেন্ডে রয়েছে হরেক দুল। তবে সবচেয়ে বেশি বিকোচ্ছে ঝুমকা। গড়িয়াহাটের ফুটপাত হোক বা ঝাঁ চকচকে শপিং মল— বঙ্গ ললনারা ঝুমকার প্রেমে পাগল।

Advertisement

আসলে ট্রেন্ডটা বোধহয় ঠিক হয় রূপোলী পর্দার নির্দেশে। নায়িকাদের ঝুমকা-সাজই কোথাও ছড়িয়ে যায় আমজনতার সাজ কাহনে। ভাবুন তো সাউথ ইন্ডিয়ান সিল্কের সঙ্গে টানা ঝুমকায় রেখার সাজ! অথবা ঘাগরা চোলিতে মাধুরী দীক্ষিতের ঝুমকার ঠমক এক সময় মন ভরিয়েছে কত অনুরাগীর! অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী তো ঝুমকোর জন্য নিজেকে ‘লোভী’ বলতেই পছন্দ করেন! রূপো বা জাঙ্ক জুয়েলারির ঝুমকো নায়িকার পছন্দের। ‘‘আসলে অন্য কিছু কিনব ভাবলেও আমার ঠিক ঝুমকোর দিকেই চোখ আটকায়। সামনেই বোনের বিয়ে, পুজোও চলে এল। নিজে ডিজাইন দিয়ে একটা সোনার ঝুমকো বানিয়েছি। এটা এমন একটা গয়না যে পরলেই সাজ কমপ্লিট’’ মুচকি হেসে জানালেন তনুশ্রী।

বিয়ের পর সিঁদুর রাঙা বিদ্যা বালনের ঝুমকাও নজর কেড়েছিল সকলের। টালিগঞ্জের মনামীর বিয়ের পর এটা প্রথম পুজো। বিয়েতে শাশুড়ির দেওয়া টানা ঝুমকা পরেই দশমীর দিন সিঁদুর খেলবেন বলে ঠিক করেছেন তিনি। একরাশ খুশি নিয়ে বললেন, ‘‘ঝুমকো ছাড়া দুল আমি ভাবতেই পারি না। আর প্রথম বছর বলে আমার বরও শাড়ি না দিয়ে গয়না দিয়েছে। সেটি কী বলুন তো? একটা প্যাঁচা ঝুমকা।’’

Advertisement

টপ নটের সঙ্গে স্লিভলেস ব্লাউজ দিয়ে বঙ্গললনাদের ঝুমকা ক্যারি করতে প্রথম শিখিয়েছেন মহানায়িকা। সাবেকিয়ানার সঙ্গে আধুনিকতার মিশেলে অনবদ্য সেই সাজ খুব পছন্দ করেন অভিনেত্রী গার্গী রায়চৌধুরি। তাঁর গয়নার বাক্সে ঝুমকোর স্টক দেখে তো হিংসে হবে সকলের! ‘‘এটা আমার কাছে একটা নেশার মতো। সিকিমে বেড়াতে গিয়েও ট্র্যাডিশনাল ঝুমকো কিনেছিলাম আমি। আর এ বার পুজোয় তো রূপোর ঝুমকো খুব চলছে’’ মুঠোফোনে সাজ সাজেশন শেয়ার করলেন গার্গী।

অভিনেত্রী পায়েল সরকারের তো এই পুজোর প্রথম গিফটই একজোড়া ঝুমকো। নায়িকা জানালেন, ‘‘ঝুমকো আমার খুব ফেভারিট। কোনও প্ল্যান ছাড়াই মা এ বার সোনার ঝুমকো কিনে দিয়েছে। এখন দেখছি পুজোতেও খুব চলছে। ইচ্ছে আছে অসম সিল্কের সঙ্গে পরব।’’

টলিউডে মভ চেনের সঙ্গে মুক্তোর ঝুমকায় নিজস্ব স্টাইল স্টেটমেন্ট প্রথম তৈরি করেছিলেন সুপ্রিয়া দেবী। সেটাই অনুসরণ করেন প্রেসিডেন্সির অদিতি। কলেজ থেকে বেরিয়ে বয়ফ্রেন্ড ডোডোর সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে হাতিবাগানের ফুটপাত থেকে জাঙ্ক জুয়েলারি কেনা ওঁর ডেলি রুটিন। আর সেখানে ঝুমকার কালেকশনই সবচেয়ে বেশি। ‘‘সবটাই নির্ভর করে পকেটের ওপর। আমি গয়না কিনতে গিয়ে ঝুমকার লোভ সামলাতে পারি না। পাখি, মাছ, জুতো— এমন কত মোটিফের যে ঝুমকা আছে, এক একটা জামার সঙ্গে ম্যাচ করে এক একদিন পরি। আর পুজোর জন্য কস্টিউম জুয়েলারির একটা রিং-ঝুমকা কিনেছি।’’

কিন্তু মেয়েদের ঝুমকার সাজ কোন চোখে দেখেন পুরুষরা? ঝুমকা বাহার কি অন্য কোনও মেসেজ দেয় তাঁদের? মধ্য চল্লিশের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ অনিন্দ্যর কথায়, ‘‘আমার বউ কানে সব সময় বড় দুলই পরে। তার মধ্যে ঝুমকোও থাকে। ভালই লাগে। তবে আমি রেখার ডাই-হার্ড ফ্যান। ঝুমকো বললে কিন্তু ওঁর কথাই প্রথম মনে হয়।’’ নিউমার্কটে অনেক দিন ধরে গয়নার ব্যবসা ইরফানের। পাক্কা ব্যবসায়ী ইরফান জানালেন, ‘‘এত দিন ধরে দেখছি তো, ঝুমকো সব মেয়েকেই ভাল মানায়।’’

ঝুমকো ট্রেন্ড

১) ভারতীয় মেয়েদের বাটি ঝুমকো খুব ভাল মানায়।

২) দক্ষিণ ভারতীয় ঘরানার ঝুমকোর চাহিদা তুঙ্গে।

৩) পুরনো আমলের মুক্তোর ছড়ার নীচে অর্ধচন্দ্রাকৃতি ঝুমকা এই পুজোয় হিট।

৪) লম্বা চেনের সঙ্গে ঝোলানো বনেদি ঝুমকোয় সাবেকি সাজের আদল ফিরে পাওয়া যায়।

ঝুমকো অন্য পোশাকে

১) পালাজো বা সারারা-র সঙ্গে লম্বা কুর্তি দিয়ে ঝুমকো পরুন

২) নাগাল্যান্ড বা মণিপুরি লুঙ্গি শর্ট কুর্তি দিয়ে পরে ঝুমকোর স্টাইল করতে পারেন

৩) আনারকলির সঙ্গে কানবালা ঝুমকো ভাল মানাবে

৪) জিনস, স্লিভলেস স্প্যাগেটি বা টপের সঙ্গে ফিউশন শাল ক্যারি করুন। কানে থাকুক মানানসই ঝুমকো।

৫) স্কার্টের সঙ্গে পোলো নেক টপে ঝুমকোর সাজ বদলে দিতে পারে আপনার স্টাইল স্টেটমেন্ট। সঙ্গে নিয়ে নিন এথনিক স্টোল।

৬) মনে রাখবেন কলার টি-শার্টের সঙ্গে ঝুমকো একদম মানায় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন