Kidney Transplantation

নিজের কিডনি দিয়ে বাঁচিয়েছিলেন স্বামীর প্রাণ! আজ কেমন আছেন সেই ব্যাঙ্ককর্মী?

অচিন্ত্যবাবুর স্ত্রী বললেন, “আমি দেব কিডনি।” তখন নিজের স্বামীকে বাঁচানোই কৃষ্ণার একমাত্র লক্ষ।

Advertisement

কৃষ্ণা বসু রায়

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৪৫
Share:

কৃষ্ণা বসু রায় এবং অচিন্ত্য বিশ্বাস। স্বামী-স্ত্রী। এক জন ছিলেন পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী, অন্য জন অধ্যাপক তথা উপাচার্য। অচিন্ত্যবাবুর দীর্ঘ দিনের সঙ্গী মধুমেহ রোগ। এক সময়ে সেই রোগ আঘাত হানে তাঁর বৃক্কে(কিডনি)। খারাপ হয়ে যায় দু’টি কিডনিই। অগত্যা উপায় ডায়ালিসিস অথবা কিডনি প্রতিস্থাপন। সময়টা ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। শুরু হল ডায়ালিসিস। তার মধ্যেই চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়ির লোকেরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলেন ডায়ালিসিস নয়, কিডনি প্রতিস্থাপন করাবেন তাঁরা। সেই মতো শুরু হলো দাতার সন্ধান। কিন্তু চাইলেই তো হাতের কাছে দাতা পাওয়া যায় না। আর কিডনি দাতা যদি নিকট আত্মীয় হন, তা হলেই বরং ভাল বলে মত দেন চিকিৎসকেরা। এখানে একটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন। কিডনি প্রতিস্থাপনের সময়ে দাতা এবং গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ না মিললেও চলে। কিন্তু মিলে গেলেই বেশি সুবিধা। তাতে জটিলতা কিছুটা কমে। অবশেষে হাতের কাছেই পাওয়া গেল দাতা। অচিন্ত্যবাবুর স্ত্রী বললেন, “আমি দেব কিডনি।” তখন নিজের স্বামীকে বাঁচানোই কৃষ্ণার একমাত্র লক্ষ। এ দিকে দাতার সন্ধানে ক্রমশ পেরিয়ে যাচ্ছে সময়। সব পরীক্ষা করে দেখা গেল, কৃষ্ণা সম্পূর্ণ সুস্থ। অতএব তাঁর একটি কিডনি দান করলে কোনও সমস্যাই হবে না। সব পরীক্ষার পরে নৈতিকতা কমিটির বৈঠকের শেষে মিলল প্রতিস্থাপনের অনুমতি। অবশেষে ২০১৬ সালের ৮ জুলাই আর এন টেগোর হাসপাতালে চিকিৎসক বিপ্লব ঘোষের তত্ত্বাবধানে হয় অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক টি কে সাহা। আজ আট বছর পরেও সম্পূর্ণ সুস্থ জীবন যাপন করছেন দাতা কৃষ্ণা বসু রায় এবং তাঁর স্বামী অচিন্ত্য বিশ্বাস। যদিও যিনি কিডনি গ্রহণ করছেন, তাঁর জীবনে কিছু পরিবর্তন আসে। তবে সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চললে বাকি জীবন সুস্থ ভাবেই কাটানো যায়।

Advertisement

কৃষ্ণা বলেন, “আমি আমার অফিসের এক সহকর্মীকে দেখে এই বিষয়টিতে আরও উৎসাহ পাই। এখন কিডনি দান করেও দেখছি আমার আগের জীবনের সঙ্গে বর্তমান জীবনে কোনও তফাত হয়নি। আমাদের দু’জনের বয়স এখন ৬৫ বছরের উপরে। তা-ও আমি বেশ ভাল আছি। এমনকি কোনও রকম বিধিনিষেধও আমার জীবনে আসেনি। অস্ত্রোপচারের পরেই সারা দেশ জুড়ে ডিমনিটাইজেশন হয়। সেই সময়ে আমি অফিসে সব কাজ করেছি, ভারী জিনিসও তুলেছি। কিন্তু কোনও সমস্যাই হয়নি। তাই বাকিদেরও বলব, ভয় না পেয়ে অঙ্গ দানে এগিয়ে আসুন। দু’টি কিডনির মধ্যে একটি দান করলে কোনও ক্ষতি হয় না। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তবেই করা হয় প্রতিস্থাপন।“

অন্যকে নতুন জীবন দিন। এগিয়ে আসুন এবং অঙ্গীকার করুন অঙ্গদানের। ক্লিক করুন পাশের লিঙ্কে — bit.ly/47a6kLV

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন