শ্বশুরবাড়িতেই একঘরে হয়ে দিন কাটাচ্ছি

আমার বাড়ি নদিয়ায়। এক ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে ছিল সংসার। স্বামী সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করে। জানতামই না, আমার শরীরে বাসা বেঁধেছে এইচআইভি ভাইরাস। তিন বছর আগে আমার টিবি হয়। যমে-মানুষে টানাটানি চলে। তখন পরীক্ষা করতে গিয়ে জানা যায়, আমি এডস আক্রান্ত।

Advertisement

রিমা হালদার (নাম পরিবর্তিত)

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৫ ২১:৫১
Share:

আমার বাড়ি নদিয়ায়। এক ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে ছিল সংসার। স্বামী সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করে। জানতামই না, আমার শরীরে বাসা বেঁধেছে এইচআইভি ভাইরাস। তিন বছর আগে আমার টিবি হয়। যমে-মানুষে টানাটানি চলে। তখন পরীক্ষা করতে গিয়ে জানা যায়, আমি এডস আক্রান্ত। হাসপাতালে অনেক দিন চিকিৎসার পরে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসি।

Advertisement

এগারো বছর আগে আমার ছেলে হয়েছিল। তখনই এডস-এর ভাইরাস শরীরে ঢুকেছিল। কিন্তু আমি কিচ্ছুটি টের পাইনি। তাই নিয়েই দিব্যি ছিলাম। টিবি হওয়ার পর জানা গেল এই ঘটনা। আমার স্বামী ও ছেলের শরীরেও রয়েছে এই ভাইরাস। কিন্তু ভাগ্যক্রমে আমার মেয়ে ভাল আছে। মেয়ে এইচআইভি নেগেটিভ।

আমি গরিব ঘরের মেয়ে বলে শ্বশুরবাড়িতে এমনিতেই অনেক অসুবিধের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হত। তার ওপর যখন জানাজানি হয়ে গেল আমার এই অবস্থা, তখন সবাই উঠেপড়ে লাগল, আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে। আমি থাকলে ওদেরও এডস হবে। পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে রটিয়ে দিয়েছে, আমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। আমি পাগল। অন্য কোথাও যাওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। তাই অনেক যন্ত্রণার মধ্যেও জোর করে শ্বশুরবাড়িতে একঘরে হয়ে দিন কাটাচ্ছি।

Advertisement

কিন্তু এখনও পর্যন্ত পাড়া-প্রতিবেশীরা জানে না, আমার এডস হয়েছে। আমার যখন টিবি হয়, তখন আমার চোদ্দো বছরের মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নিতান্ত অসুবিধের মধ্যে পড়ে। মেয়ের শ্বশুরবাড়িও ব্যাপারটা জানে না। ভাগ্যিস বিয়েটা দিয়ে দিয়েছিলাম। নইলে হয়তো মেয়েকে আর বিয়ে দিতে পারতাম না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন