ছবি : সংগৃহীত।
ওজন কমানো বা রোগা হওয়ার জন্য অনেক যোগাসন রয়েছে, তবে নিম্নোক্ত তিনটি যোগাসনের পদ্ধতি অন্যান্যগুলির থেকে বেশি কার্যকরী। তার পাশাপাশি এই আসনগুলি হাত এবং পায়ের পেশিগুলোকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। বৃদ্ধি করে হজম ক্ষমতাও।
ধনুরাসন
ধনুরাসন পেটের চর্বি কমাতে অত্যন্ত উপযোগী এবং এটি শরীরের বিপাক হার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
১. পেটের উপর ভর দিয়ে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত দুটো শরীরের দুপাশে সোজা রাখুন। কপাল মেঝেতে ঠেকানো থাকবে।
২. ধীরে ধীরে হাঁটু ভাঁজ করুন এবং গোড়ালি দুটি নিতম্বের কাছাকাছি নিয়ে আসুন।
৩. এবার হাত দুটো পিছনে নিয়ে গোড়ালি বা পায়ের পাতা শক্ত করে ধরুন।
৪. একটি গভীর শ্বাস নিন এবং শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বুক, মাথা ও পায়ের ঊরু মেঝে থেকে যতটা সম্ভব উপরে তুলুন। শরীরটি ধনুকের মতো দেখাবে। শুধুমাত্র পেট মেঝে স্পর্শ করে থাকবে।
৫. এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকার চেষ্টা করুন।
৬. শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে শরীরকে আবার মেঝেতে নামিয়ে আনুন এবং হাত-পা সোজা করে শুরুর অবস্থায় ফিরে যান।
বীরভদ্রাসন
এই আসনটি হাত, পা এবং পিঠের পেশি মজবুত করে এবং পুরো শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে।
১. সোজা হয়ে দাঁড়ান এবং পা দুটো চওড়া করে ফাঁক করুন (প্রায় ৩-৪ ফুট)।
২. ডান পা নব্বই ডিগ্রি কোণে বাইরের দিকে ঘোরান এবং বাম পা সামান্য ভেতরের দিকে ঘোরান।
৩. শ্বাস নিতে নিতে হাত দুটো দুপাশে কাঁধ বরাবর মেঝে থেকে সমান্তরালভাবে সোজা তুলুন। হাতের তালু নিচের দিকে থাকবে।
৪. শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ডান হাঁটু ভাঁজ করুন। ডান ঊরু মেঝে থেকে সমান্তরাল থাকবে এবং হাঁটু যেন গোড়ালির ঠিক উপরে থাকে।
৫. মাথা ডান দিকে ঘুরিয়ে ডান হাতের আঙ্গুলের দিকে তাকান। পিঠ সোজা রাখুন।
৬. এই ভঙ্গিতে ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিটের জন্য থাকার চেষ্টা করুন।
৭. ধীরে ধীরে শুরুর অবস্থায় ফিরে আসুন এবং একইভাবে বাম দিকে পুনরাবৃত্তি করুন।
ভুজঙ্গাসন
এই আসনটি পেটের পেশিগুলোকে টান টান করে এবং হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যা পরোক্ষভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি পিঠের নমনীয়তাও বৃদ্ধি করে।
১. উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। কপাল মেঝেতে ঠেকানো থাকবে। হাত দুটো বুকের দুপাশে মেঝেতে রাখুন, হাতের তালু নিচে এবং কনুইগুলো শরীরের দিকে সামান্য বাঁকানো থাকবে। পায়ের পাতা এবং গোড়ালি একসঙ্গে রাখুন।
২. শ্বাস নিতে নিতে হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে ধীরে ধীরে মাথা, বুক ও কাঁধ মেঝে থেকে উপরে তুলুন। নাভি পর্যন্ত শরীর উপরে তোলার চেষ্টা করুন।
৩. ঘাড় উঁচু করে উপরের দিকে দেখুন। পেট যেন মাটিতে হালকাভাবে স্পর্শ করে থাকে।
৪. এই ভঙ্গিতে ১৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে থাকুন।
৫. শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে আবার মেঝেতে শুয়ে পড়ুন।
মনে রাখতে হবে
যোগাসন শুরু করার আগে, বিশেষ করে যদি কোনো শারীরিক সমস্যা বা আঘাত থাকে, তবে একজন অভিজ্ঞ যোগ প্রশিক্ষক বা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকলে ভুল ভাবে আসন করার ফলে আঘাত লাগতে পারে।
যোগাসন শুরু করার আগে শরীরকে প্রস্তুত করার জন্য হালকা ওয়ার্ম-আপ এবং আসন করার পরে শবাসন করা জরুরি।