হার্ট ফেলের প্রাথমিক লক্ষণ। ছবি: সংগৃহীত।
শরীরে অস্বস্তি হচ্ছে, আর আপনি ভাবছেন, বয়স বা ক্লান্তির কারণে এমনটা হচ্ছে। ভুল রয়ে যাচ্ছে ঠিক সেখানেই। প্রায়শই যদি এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে, তা হলে উপেক্ষা করা ঠিক নয়। ওই অস্বস্তির মধ্যে দিয়েই হয়তো শরীর আপনাকে ইঙ্গিত দিতে চাইছে। আপনি বুঝতে পারছেন না। আমেরিকাবাসী হার্টের চিকিৎসক ডিমিট্রি ইয়ারনভ বলছেন, অনেকেই মনে করেন, হার্ট ফেল করার আগে ঠিক টের পেয়ে যাবেন। কিন্তু বাস্তবটা ঠিক তেমন নয়। হার্ট ফেলের কিছু উপসর্গ বহু আগে থেকে দেখা দেয়। কিন্তু ঢাকঢোল পিটিয়ে জানান দেয় না।
হার্ট প্রতিস্থাপনের চিকিৎসক ডিমিট্রি সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করে জানিয়েছেন, বছরের পর বছর রোগীদের মধ্যে এই ভুলগুলিই দেখতে পান তিনি। হার্টের রোগের প্রাথমিক ইঙ্গিতগুলিকে প্রায়শই চোখ এড়িয়ে চলে যান তাঁরা। চেনাপরিচিত উপসর্গগুলি প্রকাশ পাওয়ার আগে থেকেই কয়েকটি ছোটখাটো পরিবর্তন দেখা দেয় শরীরে। সেগুলির বিষয়ে সতর্ক করলেন চিকিৎসক।
হার্টের প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য লক্ষণগুলি চিহ্নিত করুন। ছবি: সংগৃহীত।
কী কী সেই উপসর্গ?
হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি: আকস্মিক ভাবে যদি কয়েক দিনের মধ্যে অনেকখানি ওজন বেড়ে যায়, তৎক্ষণাৎ সতর্ক হতে হবে। খাদ্যাভ্যাসে বা শরীরচর্চায় পরিবর্তন করেননি, অথচ হুট করে শরীর ফুলে গিয়েছে। এই লক্ষণ আদপে ভাল নয়। এর অর্থ হতে পারে, শরীরে অতিরিক্ত তরল জমা হচ্ছে, যা হার্টের ক্ষমতাহ্রাসের ইঙ্গিত।
একটানা কাশি: শুলেই কাশি বেড়ে যায়? এই লক্ষণ কেবলমাত্র ফুসফুসের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। অনেক ক্ষেত্রে হার্টের কার্যক্ষমতা কমে এলে কাশির দমক বাড়তে থাকে। বিশেষ করে চিত হয়ে শোয়ার পর। অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বমি ভাব এবং খাওয়ায় অরুচি: হার্টের কর্মক্ষমতা হ্রাস পেলে অন্ত্রের স্বাস্থ্যে ব্যাঘাত ঘটে। তখন নানাবিধ লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। যেমন, অল্প খেয়েই পেট ভার লাগা, বমি ভাব, খাওয়াদাওয়ায় স্পৃহা না থাকা ইত্যাদি।
মাথা কাজ না করা: মনোযোগের অভাব, মাথা পরিষ্কার না থাকা, ভাবনাচিন্তায় কষ্ট— এই ধরনের উপসর্গ কেবলমাত্র মস্তিষ্কের সমস্যা বা মানসিক চাপের সঙ্কেত নয়। হার্টে যদি রক্তপ্রবাহ কমে যায়, তা হলে সবার আগে টের পাবে আপনার মস্তিষ্ক।
অনিদ্রা: রাতে বার বার ঘুম ভাঙছে? এ পাশ-ও পাশ করছেন বিছানায়? মাঝেসাঝেই এমন সমস্যা হলে সতর্ক হতে হবে। কেবলই খারাপ ঘুমের লক্ষণ নয় এটি। হার্টের রোগের ইঙ্গিতও হতে পারে।
এই উপসর্গগুলি দেখা দেওয়া মানেই হার্ট ফেল হয়ে যাওয়া নয়। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এই উপসর্গগুলি রয়ে গেলে অথবা একসঙ্গে একাধিক উপসর্গ দেখা দিলে, সচেতন হওয়া দরকার। আগেভাগে শনাক্ত হলে হার্টের পেশি দ্রুত নিরাময় করা সম্ভব হবে।