Gut Health Risks

পেটের রোগের জন্য দায়ী কি অতিরিক্ত ওষুধ সেবন? অন্ত্র সুস্থ রাখতে ৫ অভ্যাস ত্যাগ করুন

রোজের অভ্যাসে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। পেটের স্বাস্থ্যও ভাল রাখার জন্য তাই সেগুলি বাদ দেওয়া উচিত জীবন থেকে। চিকিৎসক সৌরভ শেঠি সম্প্রতি এমনই পাঁচ অভ্যাসের কথা উল্লেখ করেছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৪৫
Share:

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খেলে ক্ষতি হতে পারে অন্ত্রের। ছবি: সংগৃহীত।

অন্ত্রকে নিরোগ রাখতে জীবনযাপনের একাধিক অভ্যাসে রাশ টানতে হবে। তা সে খাওয়াদাওয়া হোক, মন-মেজাজ সুস্থ রাখা হোক। সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভাল থাকলে পেটের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। এমস এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক সৌরভ শেঠি সম্প্রতি এমনই পাঁচ অভ্যাসের কথা উল্লেখ করেছেন, যার কারণে নীরবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অন্ত্রের স্বাস্থ্য। সৌরভ মূলত লিভার এবং অন্ত্রের রোগের চিকিৎসক। বর্তমানে তিনি আমেরিকান সোসাইটি অফ গ্যাস্ট্রোইন্টেসটাইনাল এন্ডোস্কপি এবং ইন্টারনাল মেডিসিনের অনুমোদিত চিকিৎসক।

Advertisement

অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার: ইদানীং প্যাকেটজাত খাবার, ইনস্ট্যান্ট নুড্ল‌স, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি অনেকেরই রোজের খাদ্যতালিকার অংশ হয়ে উঠেছে। এ সমস্ত খাবারে কৃত্রিম উপাদান, অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট, চিনি, নুন থাকে। এ দিকে ফাইবারের পরিমাণ কম। ফলে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের অবনতি ঘটে। কারণ এই খাবারগুলি উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার বৈচিত্র্য এবং পরিমাণ কমে। এর ফলেই প্রদাহ হতে থাকে এবং অন্ত্রের আস্তরণের ক্ষতি হয়।

বেশি মিষ্টি এবং কম ফাইবারের খাবার: মিষ্টি এবং কম ফাইবারযুক্ত খাবারের প্রতি ঝোঁক? অন্ত্রের উপকারী ব্যাক্টেরিয়াগুলি ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে শুরু করে এর ফলেই। অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে অন্ত্রে এমন একটি পরিবেশ তৈরি হয়, যেখানে প্রোটিওব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ব্যাক্টেরাইডেটসের সংখ্যা কমতে থাকে। ফলে জীবাণুর ভারসাম্য হারিয়ে যায় এবং সারা শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে।

Advertisement

কম শাকসব্জি: সুস্থ থাকতে শাকসব্জির প্রয়োজন অন্ত্রের। সব্জি প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং ফাইবার সরবরাহ করে, যা অন্ত্রের মধ্যে থাকা উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই শাকসব্জি বাদ দিয়ে দিলে হজমের সমস্যা দেখা দেবে, কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হবে। এ ভাবে আসলে অন্ত্রের বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়। ফলে পুষ্টির শোষণ ব্যাহত হয়, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মানসিক স্বাস্থ্যে সমস্যা দেখা দেয়। তা ছাড়া শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ দেখা দিতে পারে। তাই প্রতি দিন বিভিন্ন রঙের সব্জি খেলে অন্ত্রের জীবাণুগুলি নিজেদের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে।

মধ্যরাতে খাওয়াদাওয়া: সৌরভের মতে, গভীর রাতে বেশি ফ্যাট বা বেশি চিনিযুক্ত খাবার খেলে পাচনতন্ত্র এবং অন্ত্রের কাজকর্ম ব্যাহত হয়। ঘুমের আগে পাচনতন্ত্র কম গতিতে কাজ করে, কারণ শরীর তখন বিশ্রাম অবস্থায় থাকে। সে সময়ে এই ধরনের খাবারে বদহজম, অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং পেট ফাঁপার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। এই খাবারগুলি খাওয়ার ফলে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটার ভারসাম্য ব্যাহত হয়, যা ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধি করতে পারে। যার ফলে প্রদাহ এবং হজমের সমস্যা তৈরি হয়।

অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিকের সেবন: নির্ধারিত সীমার বাইরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে থাকলে অথবা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে যখন-তখন খেতে থাকলে অন্ত্রে বসবাসকারী প্রাকৃতিক ব্যাক্টেরিয়ার ক্ষতি হয়। সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া হয়। সে সময়ে কিছু উপকারী ব্যাক্টেরিয়াও ধ্বংস হয়ে যায়। যার ফলে হজম, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অন্ত্রের পরিবেশ প্রভাবিত হয়। তাই দীর্ঘ সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ফলে অন্ত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। হজমের সমস্যা এবং স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দেয় ধীরে ধীরে। অ্যান্টিবায়োটিক খেলে তার পাশাপাশি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার এবং প্রোবায়োটিক গ্রহণ করার কথা সুপারিশ করেন চিকিৎসকেরা। অ্যান্টিবায়োটিকগুলি শুধুমাত্র চিকিৎসকের নির্দেশে খাওয়া উচিত। নয়তো অন্ত্রের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement