খাবারেই ঝরবে ওজন! ছবি: এআই।
সামনে পুজো। ওজন কমিয়ে স্লিম হওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই খাওয়াদাওয়ায় রাশ টানতে শুরু করেছেন একাংশের বঙ্গজন। ভাত, আলু, মিষ্টি, তেলে ভাজা খাবারদাবার প্রায় বন্ধ। কিন্তু তার পাশাপাশি যে সব খাবার খাওয়া দরকার, তা খাচ্ছেন কি?
ওজন কমানোর ডায়েট প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদদের প্রায়ই একটি বিষয় সতর্ক করতে শোনা যায়। আর তা হল, না খেয়ে ওজন কমানো স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। তাতে হয়তো ওজন মাপার মেশিনে আপনার ওজন কম দেখাবে। কিন্তু নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যাবে। সঠিক পু্ষ্টির অভাবে চুল পড়া শুরু হতে পারে, ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। মুখে-চোখে পড়তে পারে বয়সের ছাপ। অর্থাৎ দেখতে ভাল লাগবে বলে রোগা হওয়ার যে চেষ্টা, সেই উদ্দেশ্য শেষ পর্যন্ত অপূর্ণই থাকবে।
ওজন বেশি হোক বা কম, শরীরে যদি স্বাস্থ্যকর ঔজ্জ্বল্য না থাকে তবে কষ্ট আর যাবতীয় সংযম বৃথা। তাই পুষ্টিবিদ রমিতা কৌর বলছেন, ‘‘রোগা হওয়ার জন্য কিছু খাবারে রাশ টানার পাশাপাশি যদি কিছু খাবার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখা যায়, তবে তা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যেমন খেয়াল রাখবে, তেমনই ওজন ঝরাতেও সাহায্য করবে দ্রুত।’’
কোন কোন খাবার রাখবেন?
ছবি: এআই।
১। শাক
খাবার নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমাতে গিয়ে অনেক সময়েই দেখা যায় ওজন কমার পাশাপাশি পেশিতন্তুরও ক্ষয় হচ্ছে। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। শাকপাতা সেই প্রবণতা কমায়। শাকপাতায় রয়েছে ভিটামিন কে এবং ক্যালশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়ামের মতো জরুরি খনিজ । যা পেশি এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
২। ডাল
ওজন কমানোর জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সবার আগে দরকারি। কারণ, সেটি পরোক্ষে মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। ডাল হল সেই উদ্ভিজ প্রোটিন, যা নিয়মিত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। পাশাপাশি, ত্বক-চুল ভাল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিনও মেলে ডালে।
৩। ডিম-মাছ
ওজন কমানোর ডায়েটে কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি প্রোটিনের মাত্রা বেশি রাখতে বলেন পুষ্টিবিদেরা। ডিম এবং মাছে শর্করা প্রায় নেই বললেই চলে। অন্য দিকে, এতে প্রোটিনের মাত্রা অনেক বেশি। তাই এগুলি ওজন কমানোর জন্য আদর্শ।
৪। দানাশস্য
ওটস, কিনোয়া, জোয়ার, বাজরা, রাগি জাতীয় হোল গ্রেন বা দানাশস্য নিয়মিত এক বেলা খান। এই ধরনের খাবার পেট অনেক ক্ষণ ভরিয়ে রেখে ওজন কমাতে সাহায্য করে। আবার প্রয়োজনীয় পুষ্টি, যেমন আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ফাইবার ইত্যাদিরও জোগান দেয়। যা শরীরকে সুস্থ রাখতে জরুরি।
ছবি: এআই।
৫। দই
দইয়ে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন বি এবং প্রোবায়োটিক। প্রোটিন শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রেখে স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখে ভিটামিন বি। প্রোবায়োটিক হজমের স্বাস্থ্য ভাল রাখে বলে শরীরে ফ্যাট ভাঙার প্রক্রিয়া এবং বিপাকের হার ভাল থাকে। যা ওজন কমাতে সহায়ক। এর ক্যালশিয়াম হাড় এবং পেশির স্বাস্থ্যও ভাল রাখতে সাহায্য করে।
৬। কপি জাতীয় আনাজ
শরীরে মেদ জমার অন্যতম কারণ রক্তে জমা দূষিত পদার্থ। ব্রকোলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রাসেলস স্প্রাউটসের মতো কপি জাতীয় সব্জি অ্যান্টি-ক্যানসার। কারণ এগুলি শরীরকে নানা দূষিত পদার্থ থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। আর দূষিত পদার্থ রক্তে না থাকলে শরীরে মেদও জমতে পারে না।
৭। ফল
যে সমস্ত ফলে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য জরুরি পুষ্টি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট বেশি পরিমাণে রয়েছে, সেই সব ফল নিয়মিত একটি করে খান। ওজন কমানোর জন্য এই ফলগুলি অত্যন্ত উপকারী। আমলকি, পেয়ারা, পেঁপে, আপেল— এই সমস্ত সাধারণ সহজলভ্য ফল রোগা হতে সাহায্য করে।