এই টিকার লক্ষ্য হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের তৈরি করা ক্যানসার ঘটানো প্রোটিন। ছবি : সংগৃহীত।
পরীক্ষামূলক ভাবে নাক দিয়ে দেওয়া একটি ক্যানসারের টিকা নিয়ে আশার আলো দেখছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণাগারে কিছু স্ত্রী ইঁদুরকে ওই টিকা দেওয়া হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, ওই টিকা ইঁদুরদের শরীরে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করার যে রোগপ্রতিরোধক কোষ, তাকে সক্রিয় করে তুলেছে। বেশ কিছু ইঁদুরের জরায়ুমুখের টিউমারের আকৃতিও ছোট হয়েছে ওই টিকা দেওয়ার পরে। তাতেই আশান্বিত হয়েছেন গবেষকেরা। কারণ তাঁরা মনে করছেন, এই পরীক্ষা এবং তার ফল ভবিষ্যতে ক্যানসারের চিকিৎসার নতুন দিক খুলে দিতে পারে।
খবরটি গত নভেম্বরেই বেরিয়েছে 'সায়েন্স ট্রান্সলেশনাল মেডিসিন' নামের এক মেডিক্যাল জার্নালে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ওই টিকা ক্যানসার ঘটানো সেই সমস্ত প্রোটিনকে আক্রমণ করে, যা হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস বা এইচপিভি থেকে তৈরি হয়েছে এবং শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। গবেষকদের এক জন, জাপানের চিবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজিস্ট রিকা নাকাহাসি উশিরা বলছেন, ‘‘এই টিকাকে ঠিক পুরোপুরি ক্যানসার প্রতিরোধক বলা যায় না। কারণ, এখানে রোগকে প্রতিরোধ করা হচ্ছে না। তার বদলে রোগের চিকিৎসা করা হচ্ছে। এই ধরনের চিকিৎসা নিয়ে অবিলম্বে আরও বিস্তারিত গবেষণা করা প্রয়োজন এবং সেই সমস্ত রোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন, যাঁরা ইতিমধ্যেই এইচপিভি-তে আক্রান্ত এবং যাঁদের জরায়ুমুখে ক্যানসারাস টিউমার ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।’’
সমীক্ষালব্ধ তথ্য বলছে, গোটা দুনিয়ায় প্রতি বছর কম পক্ষে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার মহিলা নতুন করে জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যার কারণ এইচপিভি বা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস। তবে এই ভাইরাসকে ঠেকানোর টিকা আছে। এইচপিভিকে প্রতিরোধের জন্য গার্ডাসিল-৯ প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছে ২০০৮ সাল থেকে। এ যাবৎকালের তথ্য বলছে, সে টিকা সফলও।
২০০৮ সালে যে সমস্ত ১২-১৩ বছর বয়সিকে ওই টিকা দেওয়া হয়েছিল, ১৭ বছর পরও তাঁদের কারও জরায়ুমুখের ক্যানসার হয়নি বা তার লক্ষণ দেখা যায়নি। কিন্তু সে তো যাঁদের শরীরে ওই ভাইরাস ছড়ায়নি, তাঁদের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। যাঁদের শরীরে ইতিমধ্যেই ওই ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে, তাঁরা কী করবেন? নতুন পরীক্ষাটি সেই চিকিৎসার ক্ষেত্রে আশার আলো দেখাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন গবেষকেরা।