কী রোগে ভুগছেন শেফালি? ছবি : সংগৃহীত।
পর্দায় দেখলে মনেই হবে না, অভিনেত্রীর মনের ভিতর অদ্ভুত সব ভাবনা ডালপালা মেলে বেড়াচ্ছে! এমনই দাপুটে অভিনয়। সেই অভিনয়ের জোরে ইতিমধ্যে জাতীয় পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন শেফালি শাহ। অথচ এখনও প্রতিবার যে কোনও কাজে নামার সময় তিনি আত্মপ্রত্যয়ের অভাব বোধ করেন। সম্প্রতি আলোচনায় তিনি বলেছেন, “আমি সর্ব ক্ষণ ইমপোস্টার সিনড্রোম- এ ভুগতে থাকি।”
শেফালি যে ইম্পোস্টার সিনড্রোমের কথা বলছেন, তা আদতে এক ধরনের রোগ বা মানসিক সমস্যা। এই ধরনের সমস্যায় যিনি ভুগছেন তিনি কিছুতেই নিজের কাজ, নিজের যোগ্যতা নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেন না। যা-ই করেন তা-ই কম মনে হয়। ভাল হয়নি মনে হয়। কাজ করে সহজে তৃপ্তি পান না। এমনকি, সাফল্য চোখে দেখেও অনেকের সন্দেহ না কাটতে পারে!
সাদা চোখে এই ধরনের সমস্যায় ভোগা মানুষজনকে খুঁতখুঁতে বা পারফেকশনিস্ট অর্থাৎ নিখুঁতত্ত্ববাদী বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আদতে বিষয়টি তা নয়। এই সমস্যায় যাঁরা ভোগেন, তাঁদের প্রতি মুহূর্তে নিজের সঙ্গে একটা লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। তেমনই জানাচ্ছেন শেফালি।
একজন অভিনেত্রী, যাঁর কাজটা পুরোটাই প্রায় লেন্সের সামনে তাঁর ক্ষেত্রে এই ধরনের সন্দেহ বা খুঁতখুঁতে ‘বাতিক’ কাজে প্রভাব ফেলতে পারে। হাবেভাবে যাতে বোঝা না যায়, কাজে যাতে তার জন্য আরও বাড়তি পরিশ্রমও করতে হতে পারে। একই পরিশ্রম করতে হতে পারে ইমপোস্টার সিনড্রোমে ভোগা যে কোনও পেশাদারকে। যিনি তাঁর আত্মপ্রত্যয়ের অভাব আশপাশের মানুষকে বুঝতে দিতে চান না। তাতে স্বাভাবিক কাজ করার ছন্দে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ইমপোস্টার সিনড্রোম তাই একটি গুরুতর সমস্যা। যার চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন। তবে শেফালি অন্য কথা বলছেন।
শেফালি জানিয়েছেন, এই যে নিজের কাজ নিয়ে প্রত্যয়ের অভাব, তাতে তাঁর ভালই হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। কারণ, ওই আরও ভাল করার চাপই তাঁকে নিজের সেরা অভিনয়টুকু উজাড় করে দিতে প্রেরণা জুগিয়েছে। অভিনেত্রী বলছেন, “যে দিন কোনও কাজ দেখে মনে হবে, এটা তো আমি সহজেই করে ফেলব, সেই দিন বুঝব, আমার আর নতুন কিছু দেওয়ার নেই।”
অবশ্য শেফালির মতো সকলেই ইমপোস্টার সিনড্রোমকে সহজে যুঝতে পারেন না। তথ্য বলছে, বিশ্বে এই মুহূর্তে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এই সমস্যায় ভোগেন। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন সংরক্ষিত এক সমীক্ষার রিপোর্টে ১১ হাজার ৪৮৩ জনকে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে তাঁদের মধ্যে ৬২ শতাংশই ওই সমস্যায় ভোগেন। আর যাঁরা ভুক্তভোগী তাঁদের অধিকাংশেরই আত্মপ্রত্যয়ের অভাবে কাজের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হয়। অনেকের মানসিক স্বাস্থ্যেও এর প্রভাব পড়ে।