Universal Kidney

বিকল কিডনির জায়গা নেবে ‘ইউনিভার্সাল কিডনি’! দাতার আশায় দিন গুনতে হবে না, সাফল্যের মুখে গবেষণা

কৃত্রিম কিডনি গড়ে নজির গড়তে চলেছে কানাডা ও চিনের বিজ্ঞানীরা। নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইউনিভার্সাল কিডনি’। যে কোনও ব্যক্তির শরীরেই মানিয়ে যাবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১২:২৫
Share:

যে কোনও মানুষের শরীরেই কাজ করবে কৃত্রিম কিডনি, রক্তের গ্রুপ যা-ই হোক না কেন। ছবি: ফ্রিপিক।

ঠিক কিডনির মতোই গড়ন। নকল হলেও কাজ করবে দ্রুত। আর সেটা দিয়েই কিডনির কাজটা হয়ে যাবে! নকল সেই কিডনিকে শুধু বসিয়ে দিতে হবে শরীরের ভিতরে। কৃত্রিম কিডনি গড়ে নজির গড়তে চলেছে কানাডা ও চিনের বিজ্ঞানীরা। নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইউনিভার্সাল কিডনি’। রক্তের গ্রুপ যা-ই হোক না কেন, তা যে কোনও ব্যক্তির শরীরেই সক্রিয় হবে।

Advertisement

কৃত্রিম কিডনি নিয়ে গবেষণা বহু বছর ধরেই চলছে। মাঝে পশুর কিডনি মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন নিয়ে বেশ হইচই হয়েছিল। শূকরের কিডনি মানুষের শরীরে বসানো হলেও তা বেশি দিন টেকেনি। এ দিকে একটি বা দু’টি কিডনিই বিকল হয়েছে যে রোগীর, তাঁকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করিয়ে রাখাও যায় না। উপযুক্ত দাতার আশায় দিন গুনতে গুনতে বিপদ আরও বাড়ে। তাই এই সব কিছুর ঝক্কি ঝেড়ে ফেলতে কৃত্রিম কিডনি বানানোর দিকেই ঝুঁকেছেন গবেষকেরা। কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়ার গবেষকেরা জানিয়েছেন, মানুষের শরীরেরই কোষ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম কিডনি। যে কোনও ব্যক্তির শরীরেই তা বসানো যাবে। আপাতত ব্রেন ডেথ হওয়া এক রোগীর শরীরে বসিয়ে দেখা গিয়েছে, সেটি দিব্যি কাজ করছে। সব ঠিক থাকলে খুব তাড়াতাড়ি বাণিজ্যিক ভাবে তা বাজারে নিয়ে আসাও হবে।

তলপেটে যেখানে শরীরের দু’পাশে দু’টি কিডনি রয়েছে, সেখানেই যে কোনও এক দিকে ওই কিডনি বসিয়ে দেওয়া যাবে। তাকে চালাবে হার্ট থেকে আসা রক্তই। তবে সেই রক্তকে ফিল্টার করে নেবে ওই কৃত্রিম কিডনি। নজর রাখবে শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে গুরুত্বপূর্ণ হরমোনগুলির ক্ষরণ যেন ঠিকমতো হয়। শুধু তা-ই নয়, শরীরে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজও করবে ওই কৃত্রিম কিডনি।

Advertisement

আসল কিডনির সঙ্গে পার্থক্য কোথায়?

শরীরের ভিতরেই হিমো-ডায়ালিসিসের প্রক্রিয়া চলে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, আসল কিডনি দু’টি বয়ে চলা রক্তস্রোত থেকে শুধুই বিষ বা দূষিত পদার্থগুলিকে ছেঁকে নেয়। কিন্তু কৃত্রিম কিডনির গায়ে আলাদা করে ‘মেমব্রেন’ বা ঝিল্লির স্তর বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা যে কোনও রকম টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থকে চিনে নিয়ে তাকে ছেঁকে বার করে দেবে। তার সঙ্গে থাকবে একটি বায়ো-রিঅ্যাক্টরও। সেই বায়ো-রিঅ্যাক্টর বানানো হয়েছে কিডনির সুস্থ, সবল কোষগুলি দিয়ে। সেগুলিই শরীরের স্বাভাবিক ডায়ালিসিস প্রক্রিয়াকে চালু রাখবে।

কিডনির অসুখ চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে ক্রমশ। আর কিডনির সেই অসুখগুলির জন্য মূলত দায়ী দু’টি বিষয়। ডায়াবিটিস আর উচ্চ রক্তচাপ। কিডনির অসুখে ভুগে মৃত্যুর ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। বার বার ডায়ালিসিস করানো বা কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচ সামলানোও সকলের সাধ্যের মধ্যে নেই। কাজেই এই সমস্যার সমাধান যদি কৃত্রিম কিডনি দিয়ে হয়, তা হলে প্রাণ বাঁচবে বহু জনের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement