ইনহেলারের ব্যবহার কমাবে শ্বাসের ব্যায়াম, ছোটরাও করতে পারে। ছবি: এআই।
কালীপুজোর আগে থেকেই বাজির দাপট দেখা যাচ্ছে নানা জায়গায়। এই সময়ে দূষণের পাল্লা সপ্তমে ওঠে। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ সহনশীল মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বিশেষ করে রাতের দিকে বাজির ধোঁয়ায় কুয়াশার মতো চাদরে ঢাকা পড়ে যায় চারদিক। পরিবেশকর্মীদের আশঙ্কা, কালীপুজোর আগে থেকেই বাতাসের গুণমান খারাপের দিকেই যাবে। বাজির ধোঁয়া কেবল নয়, সঙ্গে যানবাহনের ধোঁয়াও মিশবে। ফলে বাতাসে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম দূষিত কণা সহজেই শ্বাসের সঙ্গে ঢুকে যাবে ফুসফুসে। সেখানে গিয়ে জমা হতে থাকবে এবং শ্বাসজনিত নানা রোগের কারণ হয়ে উঠবে। হাঁপানি, সিওপিডি অথবা নিউমোনিয়া রোগীদের এই সময়ে যন্ত্রণা বাড়ে। বয়স্ক ও শিশুরাও শ্বাসের সমস্যায় ভোগেন। কাজেই এই সময়টাতে ফুসফুস বাঁচাতে হলে কেবল ইনহেলারের উপরে ভরসা রাখলে চলবে না। নিয়মিত কিছু শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়ামও করতে হবে। তাতে ফুসফুসে জোর বাড়বে ও শ্বাসকষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কমবে।
কী ধরনের শ্বাসের ব্যায়াম ফুসফুস ভাল রাখবে?
এই বিষয়ে যোগাসন প্রশিক্ষক অনুপ আচার্য জানিয়েছেন, শুরুটা অ্যাবডমিন্যাল ব্রিদিং দিয়ে হতে পারে। এই ব্যায়াম যে কোনও বয়সেই করা যায়।
অ্যাবডমিন্যাল ব্রিদিং
পিঠ সোজা করে পদ্মাসনে বা সুখাসনে বসতে হবে। চোখ বন্ধ রেখে মনোনিবেশ করতে হবে শরীরে শ্বাসবায়ুর প্রবেশ এবং নির্গমনের প্রতি। নাক দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস নিতে হবে। সাধ্যমতো কয়েক সেকেন্ড ধরে রেখে তার পর ধীরে ধীরে ছেড়ে দিতে হবে। পুরো পদ্ধতিটি সাত-আট বার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাভি যেন বাইরের দিকে ঠেলে ওঠে এবং শ্বাস ছাড়ার সময়ে যেন তা ভিতরের দিকে ঢুকে যায়। এই ব্যায়াম নিয়মিত করলে ফুসফুস ও মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ হবে, হাঁপানির কষ্টও কমবে।
ফুসফুস ভাল রাখবে শ্বাসের ব্যায়াম। ছবি: এআই।
নোজ়ট্রিল ব্রিদিং
প্রথমে ডান দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, বাঁ দিক দিয়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার কাজ করতে হবে। পরে বাঁ দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, ডান দিক দিয়ে শ্বাস গ্রহণ ও বর্জনের অভ্যাস করতে হবে। এই প্রাণায়ামে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হবে তিন ধাপে।
কপালভাতি
সুখাসনে বসতে হবে। পদ্মাসনেও বসতে পারেন। স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে শ্বাস নিতে হবে। শ্বাস ছাড়ার সময় পেটের পেশির উপর চাপ দিতে হবে। দ্রুত শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। সবে সবে শুরু করলে প্রতি দশ বারে একটি সেট করুন। পাঁচটি সেটে সম্পূর্ণ হয় এই প্রাণায়ামের অভ্যাস।
আরও একটি সহজ শ্বাসের ব্যায়াম আছে। সোজা হয়ে বসে, প্রথমে মুখ দিয়ে শ্বাস ছেড়ে ফুসফুসের সব বাতাস বার করে দিতে হবে। আবার গভীর শ্বাস নিয়ে যতটা সম্ভব ফুসফুসে বাতাস ভরে নিতে হবে। এর পর যত ক্ষণ সম্ভব শ্বাস আটকে রাখুন। আবার সব বাতাস বার করে দিন। এই অভ্যাস দিনে অন্তত দু’বার করা যেতে পারে। এতে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। লম্বা শ্বাস নিয়ে কমপক্ষে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখার চেষ্টা করুন। অফিসে বা কাজের জায়গায় বসেও এই ব্যায়াম করা যেতে পারে।