মাতৃত্বকালীন ওজনবৃদ্ধি নিয়ে অকপট রুপালি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
মাতৃত্বের পর শরীরের বদল মেনে নেওয়া অনেক নারীর পক্ষেই কঠিন হয়ে ওঠে। ওজন বেড়ে যাওয়া, আগের মতো তন্বী চেহারার অধিকারী না থাকা, সবচেয়ে বড় কারণ, চারপাশের তির্যক মন্তব্য— এ সব কিছু তাঁর আত্মবিশ্বাসের ভিতকে নাড়িয়ে দেয়। মুম্বইয়ের টেলিভিশন জগতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুপালি গঙ্গোপাধ্যায়ও এর ব্যতিক্রম নন। মাতৃত্বকালীন ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার পর বহু দিন আয়নার দিকে তাকানোর সাহস পাননি রুপালি। তার উপর আবার কটূক্তির শিকার হয়েছেন বার বার। তবু এই অন্ধকার সময়েই তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন শক্তির উৎস, তাঁর স্বামীর কাঁধ। সম্প্রতি সেই বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেছেন বাঙালি অভিনেত্রী। রুপালির যন্ত্রণা ও লড়াইয়ের গল্প, যা শুধু তাঁর নয়, অসংখ্য মায়েরই অভিজ্ঞতার প্রতিধ্বনি।
২০১৩ সালে পুত্রসন্তান রুদ্রাংশের জন্ম দেন অভিনেত্রী। সন্তানজন্মের পর ওজন বেড়ে গিয়ে ৮৩ কেজি হয়ে গিয়েছিল। ২৪ ইঞ্চির কোমরের মাপ সে সময়ে ৪০-এ পৌঁছেছিল। হঠাৎ এই পরিবর্তন তিনি মেনে নিতে পারেননি শুরুর দিকে। রুপালি বলছেন, ‘‘আমার সাহস ছিল না আয়নার সামনে দাঁড়ানোর। নিজের শরীরটাই যেন আর চিনতে পারতাম না। শুধু তা-ই নয়, আশপাশের মানুষের মন্তব্যও কষ্ট দিত। কেউ কেউ বলত, তুমি তো ভীষণ মোটা হয়ে গিয়েছ। যত্রতত্র এমন মন্তব্য ছুড়ে দিত লোকে, যা হজম করতে অসুবিধা হত।’’ এ ধরনের তির্যক মন্তব্য এক সময় তাঁর আত্মবিশ্বাসকে ভেঙে দেয়।
তবে এই কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্বামী অশ্বিন বর্মা। রুপালি বলেন, ‘‘অশ্বিন আসলে অত্যন্ত কোমল স্বভাবের মানুষ। সহ্যক্ষমতাও বেশি। ও-ই আমায় ভালবেসে আগলে রেখেছিল।’’ শরীরের বদল তাঁকে স্বামীর চোখে কোনও দিনই অপ্রিয় করে তোলেনি। বরং সেখান থেকেই তিনি নতুন করে আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন।
মাতৃত্ব আসার সঙ্গে সঙ্গে নতুন প্রাণের জন্ম। পাশাপাশি মায়ের শরীর ও মনের পরিবর্তনও অনিবার্য ভাবেই আসে। কিন্তু সমাজ সেই পরিবর্তনকে প্রায়শই ঠাট্টার পর্যায়ে নিয়ে চলে যায়। রুপালির যন্ত্রণার এই অকপট স্বীকারোক্তি অন্য মায়েদেরও সাহস জোগাতে পারে।