অ্যাভোকাডো উপকারী, কিন্তু সকলের জন্যই ভাল কি? ছবি: সংগৃহীত।
সমাজমাধ্যমে যে সব উপকারী ফল নিয়ে চর্চা চলে, তার মধ্যে অ্যাভোকাডো একটি। কেউ তা খাচ্ছেন পাউরুটিতে মাখনের মতো মাখিয়ে, কেউ আবার অ্যাভোকাডো দিয়ে বানাচ্ছেন স্মুদি। যে খাবার খোদ তারকারাই খান, সেই খাবারই কি পাতে রাখতে চাইছেন?
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘অ্যাভাকোডো বেশ দামি ফল ঠিকই, তবে কেউ কেউ সেটি খাচ্ছেন এই দেশেও। ফলটির পুষ্টিগুণ নিয়ে কোনও সংশয় নেই। অন্যান্য ফলের চেয়ে এতে ক্যালোরির পরিমাণ একটু বেশি। তবে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কম। এতে মেলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, নানা রকম ভিটামিন, যেমন বি, সি, বি৬ এবং বিভিন্ন খনিজ। অ্যাভোকাডোয় রয়েছে হার্টের পক্ষে ভাল মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ফাইবার।’’
এত উপকারী বলেই কি বাড়তি দাম দিয়ে এত দিনের চেনা ফলের পাশাপাশি অ্যাভোকাডোও রাখতে চাইছেন? তা হলে জেনে রাখা দরকার, কারও কারও জন্য এই ফল ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষত পরিমিত পরিমাণে না খেলে সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক।
ল্যাটেক্স অ্যালার্জি: প্রাকৃতিক ল্যাটেক্স বা গাছ থেকে প্রাপ্ত সাদা তরলবিশেষে যে ধরনের উপাদান থাকে, তেমনই উপাদান মেলে অ্যাভোকাডোর প্রোটিনেও। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ'-এ ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা বলছে, কারও ল্যাটেক্স অ্যালার্জি থাকলে অ্যাভোকাডো খেলেও তা হতে পারে। একে বলা বয় 'ল্যাটেক্স-ফ্রুট সিনড্রোম'।
কিডনির সমস্যা: কিডনির অসুখ থাকলেও অ্যাভোকাডো খাওয়া দরকার চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে। এই ফলে যথেষ্ট পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। কিডনির অসুখে পটাশিয়াম খাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ থাকে। পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে জটিল সমস্যা হতে পারে। কিডনির সমস্যা থাকলে যে কোনও খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
ওজন: রোগা হতে চাইলেও বুঝে খেতে হবে ফলটি। অ্যাভোকাডোয় থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে, কিন্তু স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যথেষ্ট মাত্রায় থাকায় এই ফলের ক্যালোরিও অন্যান্য অনেক ফলের চেয়ে বেশি। ফলে ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে ফলটি খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। স্যালাডের সঙ্গে আধখানা ফল খাওয়া যেতে পারে।
হজম: হজমের সমস্যা যদি বাড়াবাড়ি রকম হয়, তা হলে অ্যাভোকাডো এড়িয়ে চলাই ভাল। এই ফলের পুষ্টিগুণ অনেক। ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি রয়েছে ফাইবারও। তবে বাড়তি ফাইবার কখনও কখনও হজমের সমস্যা তৈরি করে। পেটফাঁপা, আন্ত্রিকের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে তখন। তাই কেউ অ্যাভোকাডো খেতে চাইলে অল্প করে ডায়েটে জোড়া ভাল।
রক্ত তরল করার ওষুধ: কেউ রক্ত তরল করার ওষুধ খেলে এই ফলটি নিয়মিত খাওয়া ঠিক না-ও হতে পারে। এতে মেলে ভিটামিন কে, যা রক্ত জমাট বাঁধতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিকর ভেবে কেউ নিয়মিত এবং বেশি পরিমাণে অ্যাভোকাডো খেলে ওষুধের প্রভাব কমে যেতে পারে।