বাসি পিৎজ়াই সকালে উঠে খাচ্ছেন? স্বাস্থ্যের কথা ভাবছেন কি? ছবি: সংগৃহীত।
বাসি তরি-তরকারি মুখে না রুচলেও, বেঁচে যাওয়া পিৎজ়া কিন্তু অনেকের কাছেই সুখাদ্য। বিশেষত সকালের তাড়াহুড়োয় বেরোনোর আগে এক টুকরো পিৎজ়া খেয়ে নেওয়া মানেই ঝামেলা মিটে যাওয়া। লোভনীয় খাবারটির স্বাদ নিয়ে প্রশ্নই নেই, পেটও ভরে যায়। তবে এই অভ্যাসের ফলাফল কী হতে পারে?
পিৎজ়ায় তেল-মশলা সে ভাবে থাকে না। ছাঁকা তেলে ভাজাও হয় না। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এ খাবার মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। তার কারণ, সাধারণত পিৎজ়া তৈরিতে ব্যবহার হয় ময়দা। ময়দা সহজপাচ্য স্টার্চ। পিৎজ়া খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। ডায়াবেটিকদের জন্য তো বটেই, ছোট থেকে বড়— কারও জন্যই তা স্বাস্থ্যকর নয়। তা ছাড়া, এতে ক্যালোরির মাত্রাও বেশি থাকে। নিয়মিত খেলে স্থূলত্বের সমস্যা হতে পারে, ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতায় প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি, শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও বৃদ্ধি পেতে পারে।
চেন্নাইয়ের এক হাসপাতালের পুষ্টিবিদ দীপলক্ষী শ্রীরাম বলছেন, খালি পেট পিৎজ়া খাওয়া আরও ক্ষতিকর। তবে পিৎজ়া যদি রাতভর ফ্রিজে রাখা হয়, তা হলে তার মধ্যে কিছু বদল ঘটে। তৈরি হয় রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ। ফ্রিজ থেকে বার করে তা গরম করে খেলেও রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ রয়ে যায়। যদিও জলের বাষ্প কাজে লাগিয়ে তা ভাপিয়ে নিলেই ভাল। রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ ফাইবার হিসাবে কাজ করে। ফলে টাটকা পিৎজ়া খেলে রক্ত যতটা শর্করার মাত্রা এক ধাক্কায় বেড়ে যায়, এতে ঠিক ততটা বাড়ে না।
তবে তা সত্ত্বেও, এটি অভ্যাসে পরিণত করা অনুচিত, সতর্ক করছেন পুষ্টিবিদ। তাঁর কথায়, পিৎজ়া তৈরি হয় ময়দা, প্রক্রিয়াজাত মাংস, এবং প্রচুর চিজ় দিয়ে। সোডিয়াম, কার্বোহাইড্রেট এবং স্যাচুরেটেড কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবারটি সকালে খালি পেটে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যন্ত দ্রুত বেড়ে যাবে। তাই খালি পেটে তা না খাওয়াই ভাল। তবে কখনও যদি বাসি পিৎজ়া খাওয়াও হয়, খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে।
ক্ষতির পরিমাণ কমানোর জন্য উপকরণে বদল আনা যেতে পারে। পিৎজ়া বেস তৈরির জন্য ময়দার বদলে আটা ব্যবহা করে, চিজ়ের মাত্রা কমিয়ে, নানা রকম সব্জি দিয়ে এর পুষ্টিগুণ বাড়ানো যেতে পারে। তা ছাড়া প্রক্রিয়াজাত মাংসের বদলে টাটাকা মাংসের ব্যবহারও ক্ষতির সম্ভাবনা কমায়।