ছবি : সংগৃহীত।
সমাজ মাধ্যমে অল্প সময়ের ভিডিয়ো বা রিলস জনপ্রিয় হওয়ার পর থেকে বোলবোলাও বেড়েছে স্বাস্থ্য-পরামর্শদাতাদের। সমাজ মাধ্যম খুললে অন্তত ৮-১০টি স্বাস্থ্য সচেতনতা সংক্রান্ত রিলস চোখে পড়েই। তার মধ্যে আবার ইদানীং বেশি জনপ্রিয় হয়েছে ‘ভারতীয় প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি’ নাম দিয়ে প্রচারিত নানা টোটকা। ওজন কমানো থেকে শুরু করে পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখা সবেরই সমাধানের জন্য ভারতীয় প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতির দ্বারস্থ হতে বলছেন সকলে। সম্প্রতি তেমনই এক টোটকা দাবি করেছে, প্রাচীন ভারতীয় টোটকায় চশমা থেকেও নিষ্কৃতি পাওয়া সম্ভব!
চশমা এক বার চোখে উঠলে যে, সে সারাজীবনের সঙ্গী— তা মোটামুটি, যাঁরা চশমা পরেন, তাঁদের অধিকাংশই জানেন। ব্যতিক্রম থাকলেও অধিকাংশেরই চশমা থেকে মুক্তিলাভ ঘটেনি। কেউ হয়তো চশমার বদলে লেন্স পরেছেন। কিন্তু তাকে ঠিক ‘মুক্তি’ বলা চলে না। কারণ লেন্সের রক্ষণাবেক্ষণ এবং যত্ন চশমার থেকেও বেশি। ফলে চশমা থেকে মুক্তি পেলেও ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি মেলেনি। সমাজ মাধ্যমে এক পুষ্টিবিদ সম্প্রতি সেই ঝঞ্ঝাট-মুক্তিরই উপায় বাতলেছেন।
—ফাইল চিত্র।
কী উপায়ে চশমা থেকে মুক্তি?
ওই পুষ্টিবিদের নাম সোনাক্ষী বি গান্ধী। তিনি বলছেন, ‘‘এক বিশেষ পানীয়ে নিয়মিত চুমুক দিলে চোখের জ্যোতি তো ফিরবেই পাশাপাশি, চিরতরে মুক্তিও মিলতে পারে চশমা থেকে।’’
কী ভাবে বানাবেন পানীয়?
ওই পানীয় বানানোর জন্য উপকরণ হিসাবে লাগবে— ৫০ গ্রাম কাঠবাদাম, ৫০ গ্রাম মৌরী, ৫০ গ্রাম মিছরি, ২০ গ্রাম সাদা গোলমরিচ এবং সামান্য জাফরান।
প্রণালী: সবক’টি উপকরণ মিক্সিতে দিয়ে ভাল করে গুঁড়িয়ে নিতে হবে।
ব্যবহার: ঘুমনোর আগে দুধের সঙ্গে ওই গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। আবার গ্রিন টিয়ের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে।
অনুপান: প্রাপ্তবয়স্কেরা এক বারে ৫ গ্রাম পর্যন্ত ওই গুঁড়ো খেতে পারবেন। ছোটদের ক্ষেত্রে ২-৩ গ্রাম পর্যন্ত দেওয়া যেতে পারে।
—ফাইল চিত্র।
সত্যিই কি উপকারী?
পুষ্টিবিদ সোনাক্ষী সমাজ মাধ্যমে ওই প্রাচীন ভারতীয় টোটকার কথা জানিয়ে বলেছেন, কাঠবাদামে ভিটামিন ই এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। মৌরী এবং সাদামরিচ চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ওই দুই উপকরণও চোখের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। জাফরানে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস এবং প্রদাহবিরোধী উপাদানের পাশাপাশি স্নায়ুকে রক্ষাকারী উপাদানও রয়েছে। যা চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।’’ সোনাক্ষীর সঙ্গে কিছুটা একমত চোখের চিকিৎসক দিগ্বিজয় সিংহ। তিনি বলছেন, ‘‘ভিটামিন ই চোখকে অক্সিডেশন জনিত ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। সাদা মরিচ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, জাফরান চোখের রেটিনার স্বাস্থ্যের জন্য ভাল বলে মনে করা হয়। আর মৌরীতে থাকা ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।’’ কিন্তু ওই পানীয় খেলে কি চশমা থেকে নিষ্কৃতি মিলবে? চিকিৎসক সিংহ বলছেন, ‘‘ওই উপকরণগুলি চোখের সার্বিক স্বাস্থ্য ভাল রাখলেও তা মায়োপিয়া বা হাইপারোপিয়ার মতো সমস্যার সমাধান করতে পারে না। তাই চশমা থেকে মুক্তি মিলবে এমনটা বলা সম্ভব নয়।’’