এয়ার ফ্রায়ারে রান্না করলে কি ক্যানসার হতে পারে? ছবি: শাটারস্টক।
কম তেলে রান্নার জন্য ননস্টিক বাসন ব্যবহারের চল শুরু হয়েছিল আগেই। তবে এখন ননস্টিকের পাশাপাশি এয়ার ফ্রায়ারও স্বাস্থ্য সচেতন বাঙালিদের হেঁশেলে দিব্যি জায়গা করে নিয়েছে। এতে রান্না করলে তেলের প্রয়োজন প্রায় পড়ে না বললেই চলে। অথচ আলুভাজা কম তেলেই যথেষ্ট মুচমুচে হয়। কেবল রান্নার আগে একটু তেল মাখিয়ে নিলেই হল। সুস্বাদু ও মুখরোচক ভাজাভুজি, চপ-কাটলেট বানানোর জন্য এখন অনেকেই এয়ার ফ্রায়ার ব্যবহার করছেন। খাদ্যরসিকদের কাছে এই যন্ত্রের কদর দিন দিন বাড়ছে। তবে অনেকেই আবার বলেন এয়ার ফ্রায়ারে রান্না করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। এই তথ্য কি আদৌ ঠিক?
যন্ত্রটির ব্যবহার স্বাস্থ্যকর কি না তা বুঝতে হলে আগে জানতে হবে এয়ার ফ্রায়ার ঠিক কী ভাবে কাজ করে? এয়ার ফ্রায়ারের ভিতর থাকে একটি হাই স্পিড ফ্যান, যা যন্ত্রটির ভিতরে গরম হওয়া চলাচল করতে সাহায্য করে। সেই তাপেই খাবার তৈরি হয়ে যায়। খাবারের উপর মুচমুচে আবরণ তৈরি হয়ে যায় কোনও রকম তেল ছাড়াই। ১৭৫-৪০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় রান্না হয় এয়ার ফ্রায়ারে।
উচ্চতাপে এয়ার ফ্রায়ারে রান্না করলে ‘অ্যাক্রিলামাইড’-সহ বেশ কিছু রাসায়নিক উপাদান তৈরি হয়। তবে শুধু এয়ার ফ্রায়ারে নয়, উচ্চ তাপমাত্রায় ডুবো তেলে ভাজাভুজি করলে কিংবা মাইক্রোওয়েভ আভেনে বেকিং করলেও খাবারে ‘অ্যাক্রিলামাইড’ তৈরি হতে পারে। মোটামুটি ১২০-২৪৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় রান্না করলেই এই রাসাায়নিকটি তৈরি হতে পারে।
চিকিৎসক সৌরভ শেঠি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে ‘অ্যাক্রিলামাইড’ পশুদের শরীরে ক্যানসার কোষ তৈরি করে, তবে মানুষের শরীরেও ওই একই ক্ষতি করে কি না, সেই নিয়ে এখনও তেমন কোনও জোরাল তথ্য পাওয়া যায়নি। উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজাভুজি করলে এয়ার ফ্রায়ারের থেকেও অনেক বেশি রাসায়নিক উপাদান তৈরি হয়, যা শরীরের ক্ষতি করতে পারে।’’
এয়ার ফ্রায়ারে রান্না করলে কী মাথায় রাখতে হবে?
চিকিৎসকের মতে, এয়ার ফ্রায়ারে রান্না করলে খুব বেশি সেঁকার প্রয়োজন নেই, তাতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। অর্থাৎ কাবাবজাতীয় খাবার না বানানোই ভাল। আর রান্নার সময় এমন তেল ব্যবহার করতে হবে যার ধূমাঙ্ক বেশি। যেমন- পরিশোধিত বাদাম তেল কিংবা পরিশোধিত সূর্যমূখী তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটুকু সাবধানতা অবলম্বন করলে খাবারে ‘অক্সিডেশন’-এর ঝুঁকি কমবে।