ছবি : সংগৃহীত।
জনপ্রিয় এক কার্টুন ধারাবাহিকের ‘রোগাপাতলা’ নায়ককে প্রায়শই দেখা যেত টিন খুলে ঢকঢক করে পালংশাক গিলতে। আর তার পরেই সে হয়ে উঠত অসীম বলশালী। নিজের থেকে চার গুণ বড় চেহারার এক পালোয়ান খলনায়ককে এক ঘুষিতে ঘায়েল করে দিত সে! যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের ওই কার্টুন চরিত্র এবং কার্টুনের নাম মনে করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়— ‘পপাই দ্য সেলর ম্যান’। পপাই, তাঁর প্রেমিকা অলিভ আর ‘কাবাব মে হাড্ডি’ খলনায়ক ব্লুটোর ওই গল্পের মুখ্য চরিত্র ছিল টিনে ভরা পালং শাক। শীতকাল সেই পালং শাকের মরসুম। এখন রেস্তরাঁ থেকে বাড়ি সর্বত্র পালং শাকের পদ। পালং পনির, পালং চিকেন হয়ে পালং শাকের ঘণ্ট। প্রশ্ন হল, শীতের মরসুমে এই পালং শাক কি রোজ খাওয়া যায়?
ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলির পুষ্টিবিদ রায়ান ফার্নান্দো এর জবাব দিয়েছেন। তিনি বলছেন, ‘‘পালং শাক অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। তা রোজ খেলে শরীরের নানা উপকার হতে পারে। তবে রোজ পালং শাক খাওয়া শুরু করার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। কারণ কিছু কিছু রোগের রোগীদের ক্ষেত্রে পালং শাক একটু সামলে খাওয়াই ভাল।’’
কারা পালং শাক নিয়মিত খাবেন না?
১। যাঁদের কিডনি স্টোনের সমস্যা হয়েছে বা যাঁরা কিডনির কোনও না কোনও সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের পালং শাক বেশি না খাওয়াই ভাল।
২। যাঁরা নিয়মিত রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান, তাঁদের পালং শাক বুঝে খাওয়া উচিত। রায়ান বলছেন, ‘‘পালং শাকে থাকা ভিটামিন কে ১ রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। ফলে কেউ যদি রক্ত তরল করার ওষুধ খান, তবে সেই ওষুধের কাজে বাধা পড়তে পারে।’’
৩। বাতের ব্যাথা বা ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকলেও পালং শাক সামলে খাওয়া উচিত। কারণ, পালং শাকে রয়েছে পিউরিন। এই পিউরিন শরীরে যাওয়ার পরে তা ইউরিক অ্যাসিডে বদলে যায়। রায়ান বলছেন, ‘‘কিছু গবেষণা অবশ্য বলছে, সব্জিতে পিউরিন বেশি থাকলে তা বাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে না। কিন্তু যাঁদের ইতিমধ্যেই ইউরিক অ্যাসিড বা বাতের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের পালং শাক মেপে খাওয়াই ভাল।’’
৪। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলেও পালং শাক পরিমিত পরিমাণে খেতে বলছেন রায়ান। কারণ, পালং শাকে রয়েছে গয়েট্রোজেনস। যা থাইরয়েডের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তবে এটি কাঁচা বা আধ সেদ্ধ পালং শাক থেকেই হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
৫। অনেকের অ্যালার্জিরও সমস্যা থাকে। তাঁদেরও পালং শাক বুঝে খাওয়া উচিত বলে জানাচ্ছেন রায়ান।