কোকোনাট সুগার খেলে কি ওজন বাড়বে না? ছবি: সংগৃহীত।
চিনিকে দেখতে যতই নিরীহ মনে হোক, তা আদতে নয়। খেতে মিষ্টি হলেও শরীরের জন্য তা যে একেবারেই মিঠে নয়, সে কথা সকলেরই জানা। চিনি বা মিষ্টি খেলে শুধু ডায়াবিটিস নয়, এর সঙ্গে জড়িত নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। তাই চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ— সকলেই চিনিকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। ইদানীং চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসাবে অনেকেই নারকেলজাত চিনি বা কোকোনাট সুগার ব্যবহার করছেন। চিনির এই বিকল্পটি কি সত্যিই স্বাস্থ্যকর?
নারকেল থেকে তৈরি চিনির মধ্যে রয়েছে আয়রন, জ়িঙ্ক এবং পটাশিয়ামের মতো খনিজ। এই সমস্ত উপাদান শরীরের বিভিন্ন খনিজের ঘাটতি পূরণ করে। পাশাপাশি, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাল রাখতেও কোকোনাট সুগারের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। নারকেলজাত চিনির মধ্যে ‘পলিফেনল’ নামক এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যাল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। শরীরের ‘সেলুলার ড্যামেজ’ সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ন্ত্রণে রাখে। নারকেলজাত চিনির মধ্যে রয়েছে ‘ইনিউলিন’ নামক এক ধরনের সহজপাচ্য ফাইবার। এই উপাদানটি অন্ত্রে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়িয়ে তোলে। ‘প্রিবায়োটিক’ গোত্রের এই খাবার খেলে অন্ত্র ভাল থাকে। এই সব উপকার অন্য যে কোনও স্বাস্থ্যকর খাবার থেকেই পাওয়া সম্ভব। তার উপর এই প্রকার চিনির ক্যালোরির মাত্রাও সাধারণ চিনির মতোই বেশি। তাই বেশি মাত্রায় খেলে স্থূলত্বের ঝুঁকি এখানেও থাকছে।
অনেকেই মনে করেন, নারকেলজাত চিনির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) কম, তাই এই চিনি নিশ্চিন্তে খাওয়া যায়। সাধারণ চিনির জিআই ৬০ হলে নারকেলজাত চিনির জিআই ৫৪। সুতরাং দু'টির মধ্যে খুব বেশি ফারাক নেই। তাই রক্তের শর্করার মাত্রা কোকোনাট সুগার খেলেও বাড়তে পারে। যে কোনও প্রকার চিনিকেই একেবারে বাদ দিতে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। একান্তই যদি চিনি খেতে হয়, তা হলে সাধারণ চিনির বদলে নারকেলজাত চিনি খাওয়া যেতে পারে। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা ভেবে পরিমাণে লাগাম না টানলেই মুশকিল।