কেন নাক ডাকে শিশুরা? ছবি: শাটারস্টক।
পাঁচ বছরের রাশি, ঘুমোনোর সময়ে প্রবল নাক ডাকত। এত কম বয়সে এমন নাক ডাকে কেন, সে নিয়ে খানিকটা অবাক হলেও ব্যাপারটাকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি রাশির মা-বাবা। কিন্তু কিছু দিন পর থেকে দেখা দিল আরও নানা সমস্যা। ঘুমের সময়ে মুখ বন্ধ হয় না, নিঃশ্বাসের কষ্ট, মাঝেমধ্যেই সর্দি-কাশি, খেতে অসুবিধা, গলা শুকিয়ে যাওয়া, কানে কম শোনা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে অসুস্থ হয়ে পড়তে লাগল সে। চিন্তিত মা-বাবা ছুটলেন চিকিৎসকের কাছে। পরীক্ষার পর জানা গেল, এই সমস্যার জন্য দায়ী একটি বিশেষ গ্রন্থি, যার নাম অ্যাডিনয়েড। বহু শিশুই এই গ্রন্থির নানা সমস্যায় ভোগে।
শিশুদের নাকের পিছনে একটু উপরের দিকে থাকে অ্যাডিনয়েড গ্রন্থি। পাঁচ বছর বয়সের পর থেকে এটি একটু একটু করে ছোট হতে থাকে এবং বয়ঃসন্ধির পরে প্রায় মিলিয়ে যায়। এমনিতে শ্বাস-প্রশ্বাস বা খাওয়ার সময় এটি নানা রকম ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করে। কিন্তু কোনও কারণে অ্যাডিনয়েড গ্রন্থি ফুলে উঠলে শিশুরা নানা ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই ঠিক সময় চিকিৎসা না হলে তাদের কথা বলা, শোনা, শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা হয়। এমনকি, টানা মুখ দিয়ে নিশ্বাস নিতে হয় বলে দাঁতের গঠন খারাপ হয়ে মুখের বিকৃতিও দেখা দিতে পারে। হতে পারে ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো রোগও। আর অ্যাডিনয়েডের সমস্যার প্রধান উপসর্গই হল নাক ডাকা।
তবে এই একটি কারণেই নয়, আরও বেশ কিছু কারণের জন্য অল্পবয়সিদের মধ্যে নাক ডাকার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোন কোন অসুখ রয়েছে সেই তালিকায়?
১) ওজন বেশি হওয়া মানেই শরীরে হাজারটা রোগ বাসা বাঁধবে। অতিরিক্ত বাইরের খাবার খাওয়া, খেলাধুলো না করা, মোবাইলের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতার কারণে ঘাড় ও গলার কাছে মেদ জমতে শুরু করে। তাই নাক ডাকার সমস্যাও বাড়ে। তাই শিশুর ওজনের দিকেও নজর দিতে হবে অভিভাবকদের।
২) শিশুদের অ্যাজ়মার সমস্যা শুরু হলে নাক ডাকার মতো উপসর্গ শুরু হয়। তাই এই রকম উপসর্গ দেখলেই আগেভাগে সতর্ক হোন।
৩) নাক ডাকার সমস্যা কখনও কখনও অ্যালার্জিরও উপসর্গ হতে পারে। অ্যালার্জির সমস্যা থেকেও নাকের মধ্যে সর্দি জমে গিয়ে নাক বন্ধ হয়ে যায়।
৪) স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণেও শিশুদের নাক ডাকার সমস্যা দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে নাক ডাকার পাশাপাশি রাতে ঘাম হওয়া, বিছানায় প্রস্রাব করে দেওয়া, ঘুমোনোর সময়ে হাত-পা চালানোর মতো উপসর্গগুলিও প্রকট হয়।