Kusha Kapila Weight Loss

রোগা হতে গিয়ে বড় মাশুল দেন অভিনেত্রী! খাদ্যাভ্যাসে কোন ভুলের জন্য গুরুতর রোগের শিকার হন?

কমেডিয়ান তথা অভিনেত্রীর ওজন কমানোর যাত্রা আর পাঁচজন তারকার থেকে খানিক আলাদা। কিন্তু সাধারণ বাড়ির অনেক ছেলেমেয়ে এই গল্পের সঙ্গে পরিচিত। নিজেকে সুন্দর বলে মনে হত না কুশার। কিন্তু তার ফলে বড় ভুল করে ফেলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৫ ১৯:০০
Share:

কুশা কপিলার ওজন কমানোর যাত্রা আর পাঁচজন তারকার থেকে খানিক আলাদা। ছবি: সংগৃহীত।

ওজন কমানোর যাত্রা তাঁর জন্য সুখকর ছিল না, আনন্দের ছিল না। ছিল অসম্মান থেকে বাঁচার উপায় মাত্র। ছোট থেকে দেহের আকার-আকৃতি এবং ওজন নিয়ে হাসির পাত্র ছিলেন আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবের কাছে। কমেডিয়ান তথা অভিনেত্রী কুশা কপিলার ওজন কমানোর যাত্রা আর পাঁচজন তারকার থেকে খানিক আলাদা। কিন্তু সাধারণ বাড়ির মেয়েদের (কোনও কোনও ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্যও) জন্য এই গল্প বেশ চেনা।

Advertisement

১০ বছর বয়সে হঠাৎই অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায় কুশার। ১২-১৩ বছর বয়সে ঘটা বিভিন্ন ঘটনা তাঁকে উপলব্ধি করায়, তাঁর দেহের আকার নিখুঁত নয়। সেই থেকে শুরু হল ‘রোগা’ হওয়ার চেষ্টা। ২০-২২ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেন খুদে কুশা। কিন্তু তার পরেও নিজেকে সুন্দর বলে মনে হত না তাঁর। কুশার খাবার খাওয়ার ধরন, কুশার শরীর, সবই ঠাট্টার খোরাক ছিল। ১৩ বছর বয়সেই অভিনেত্রীর মা তাঁকে জিমে ভর্তি করান। ওজন হয়তো অনেকখানি কমল, কিন্তু এই প্রক্রিয়ার কারণে মনের ভিতরে হীনম্মন্যতার বীজ বপন হল। শরীর নিয়ে স্বচ্ছন্দ হতে পারলেন না কিশোরী। ১৫-১৬-তে পৌঁছে তাঁর চেহারায় ঔজ্জ্বল্য আসতে শুরু করে। আর মন থেকে ধীরে ধীরে হীনম্মন্যতার সমস্যা দূর হতে থাকে। এখানেই শেষ নয়, ২০-তে পা রাখার পর আবার সেই অন্ধকারেই প্রবেশ করতে শুরু করেন কুশা। নিজেকে সুন্দর মনে না হওয়া, নিজেকে যথেষ্ট নিখুঁত মনে না হওয়া, ইত্যাদি চিন্তা ঘিরে ধরে মনকে। জেদ চেপে যায়। স্থির করেন, তিনি ছিপছিপে হবেন। এর পর থেকে মাত্র ৮০০-৯০০ ক্যালোরি খাদ্য গ্রহণ করতে শুরু করেন কুশা। হঠাৎ তাঁর এই পরিবর্তন দেখে প্রশংসার বন্যা বয়ে যায়। এ দিকে অত কম খেয়ে কুশার খিদে মেটে না, পেট ভরে না। জেদের বশে খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেওয়ার ফলে টিউবারকিউলোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে যান অভিনেত্রী। চিকিৎসকেরা জানালেন, এর ফলে তাঁর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে কমে গিয়েছে।

৩০-এ পৌঁছে উপবাস বা কৃচ্ছ্রসাধন নয়, স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমান কুশা। ছবি: সংগৃহীত।

কুশা বুঝতে পারেন, নিজের শরীরের প্রতি এই অত্যাচার তাঁর কেবল ক্ষতিই করেছে। নিজেকে ভালবাসতে পারেননি, বরং সমাজের চোখে সুন্দর হওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন ক্রমাগত। কিন্তু এই রোগ তাঁকে সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করায়। তিনি নিজের পথ বদলে ফেলেন। তার পর ধীরে ধীরে পেশাজীবনে পায়ের তলার মাটি শক্ত করার দিকে মন দেন।

Advertisement

এখন ৩৩ বছর বয়সি কুশা নিজেকে ভালবাসেন। এখন তিনি নিজেই ওজন ঝরিয়ে ফিট থাকতে চান। সারা জীবনে এই প্রথম বার তিনি নিজে থেকে ওজন কমাতে চেয়েছেন। আর উপবাস বা কৃচ্ছ্রসাধন করে নয়, স্বাস্থ্যকর উপায়ে সেই রাস্তায় হাঁটেন কুশা।

৩০-এর পর ডায়েট করতে হলে কয়েকটি কৌশল মাথায় রাখা উচিত। যেমন সুষম আহার অর্থাৎ ফলমূল, সব্জি, দানাশস্য, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটে পরিপূর্ণ খাবার খেতে হবে। বার বার ছোট ছোট মিলে ভরসা রাখতে হবে। জলের ঘাটতি মেটানো উচিত। ওজন কমানোর জন্য হাইড্রেটেড থাকা দরকার। বার বার খিদে পাওয়ার প্রবণতা কমবে। সক্রিয় থাকতে হবে। রোজ নিজের শরীর বুঝে শরীরচর্চা, যোগাসন করতে হবে। এক ধাক্কায় অনেকখানি ওজন কমানোর লক্ষ্য‌ে বেঁধে দেবেন না নিজেকে। বরং ধীরে ধীরে ওজন কমানোর পথে হেঁটে চলা উচিত, যেখানে নিজের শরীরের উপর অত্যাচার না করতে হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement