হরমোনের ভারসাম্য যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য কোন নিয়ম মানা জরুরি। কোন পানীয়ে চুমুক দিলে স্বাস্থ্য ভাল থাকবে? ছবি: সংগৃহীত।
দিনভর কতটা চনমনে থাকবেন, মেজাজ কেমন থাকবে— ভাবছেন এই সব শুধু পরিপার্শ্বের উপর নির্ভর করে। মোটেই তা নয়। কিছুটা হলেও নেপথ্যে প্রভাব থাকে হরমোনের। পিটুইটারি, থাইরয়েড, অ্যাড্রিনাল-সহ শরীরের একাধিক গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোন মনমেজাজ, শারীরিক সক্ষমতা, চনমনে ভাবের উপর প্রভাব ফেলে। হরমোন তৈরি, তা নিঃসরণের প্রক্রিয়া এবং বিভিন্ন প্রত্যঙ্গের উপর এর প্রভাব বা কার্যকারিতা সামগ্রিক ভাবে এন্ড্রোক্রাইন সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত। এই সিস্টেম বিগড়ে গেলে তার প্রভাব পড়বে সামগ্রিক স্বাস্থ্যেই।
কিন্তু কী ভাবে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে। প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি পানীয় কি আদৌ সেই কাজটি করতে পারে? মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালের অভিজ্ঞ চিকিৎসক তৃপ্তি দুবে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ এবং পরিমাণ মতো জল খেলে এন্ড্রোক্রাইন সিস্টেম ভাল থাকে। তবে দিনের শুরুতে বেশ কিছু পানীয়ও শরীর ভাল রাখতে, লিভার থেকে দূষিত পদার্থ বার করতে এবং বিপাক ক্রিয়ার হার ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
তবে চিকিৎসক এ-ও মনে করাচ্ছেন, হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে গেলে বিশেষ এই পানীয় তার সমাধান করতে পারবে, এমন ভ্রান্ত ধারণাও ঠিক নয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা, ঘুম— এই সব কিছুই হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য জরুরি। তার সঙ্গে এই পানীয় নিয়ম করে খেলে শরীর ঠিক থাকবে। তবে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে প্রয়োজন পড়ে চিকিৎসার।
কোন পানীয় খাওয়া দরকার?
তিসি-চিয়ার জল: স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই দিন শুরু করেন তিসি অথবা চিয়ার বীজ খেয়ে। তবে চিকিৎসক বলছেন এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ জলে ১ টেবিল চামচ তিসি বীজের গুঁড়ো এবং চিয়া বীজ ভিজিয়ে রেখে সেই জল খেতে।
তিসি বীজে লিগন্যান্স রয়েছে যা ফাইটোইস্ট্রোজেনে পরিণত হয়। শরীরে খানিকটা ইস্ট্রোজেনের মতো কাজ করে। প্রাক রজোনিবৃত্তিপর্বে হরমোনের ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে এটি। দিনভর শরীর চনমনে রাখতে, পেট পরিষ্কারেও এই পানীয় সহায়ক।
অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার: কার্বোহাইড্রেট সম্পন্ন খাবার খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তা বশে রাখতে সাহায্য করে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার। চিকিৎসক বলছেন, প্রাতঃরাশ শুরু করার ঠিক আগে ২০০ মিলিলিটার জলে ১ চা-চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে খাওয়া ভাল। সঙ্গে একটু দারচিনির গুঁড়ো এবং পাতিলেবুর রস মিশিয়ে নেওয়া যায়।
অশ্বগন্ধা চা: দু্শ্চিন্তা, উদ্বেগ কমাতে এবং স্নায়ুকে শান্ত রাখতে অশ্বগন্ধার চা বা পানীয় অত্যন্ত উপকারী। তবে থাইরয়েডের ওষুধ চললে বা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ জলে আধ চা-চামচ অশ্বগন্ধা গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।