বরফজল খেলে কি ওজন বাড়তেও পারে? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
গরমে রাস্তায় বেরোলে ফ্রিজে রাখা জলের বোতলই কিনতে চান সকলে। বাড়ি ফিরেও যেন ঠান্ডা জলে গলা ভেজালেই স্বস্তি! কিন্তু অনেকে যে বলেন, ফ্রিজের ঠান্ডা জল খেলে ওজন বাড়ে! তা হলে কি পুজোর আগে মেদ গলাতে ঠান্ডা জলে চুমুক দেওয়া যাবে না?
জল খাওয়া যে জরুরি, তা নিয়ে দ্বিমত নেই। চিকিৎসকেরা বলেন, শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ সঠিক ভাবে সম্পাদনের জন্য জল খাওয়া জরুরি। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, শরীর থেকে টক্সিন বার করে দেওয়া, শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখা, হজম-সহ একাধিক কাজে জলের দরকার হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেলে শরীর যেমন সুস্থ থাকে, তেমনই জলাভাব অনেক সমস্যার জন্ম দিতে পারে।
কতটা জল খাবেন?
ওজন যদি পাউন্ডে ধরা হয়, তার অর্ধেক আউন্স জলের দরকার একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের জন্য। এই অঙ্কে কারও ওজন ৭০ কেজি হলে তিনি ২.৩ লিটার জল খাবেন। জলের চাহিদা মরসুম, কায়িক শ্রম ভেদে ভিন্ন হয়।
জলের তাপমাত্রা এবং ওজন
ঠান্ডা জলে তেষ্টা মিটলেও, ফ্রিজের জল খেলে ওজন বাড়ে, বলেন অনেকেই। ওজন কমাতে চাইলে গরম জল খাওয়া ভাল— এমনও ধারণা আছে। কিন্তু তা কি ঠিক? পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ঠান্ডা বা গরম জল খাওয়ার সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি বা কমার সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। কেউ গলা ভেজাতে ঠান্ডা জল খেলে ওজন বেড়ে যাবে, সে ধারণা ঠিক নয়। বরং শরীরের নিজস্ব যে তাপমাত্রা থাকে, তাতেই বিপাকক্রিয়া ভাল হয়। জলের তাপমাত্রা ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে হজম ভাল হয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয় না।’’ মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ অমিতা গাদরে সমাজমাধ্যমে মাঝেমধ্যেই নান রকম পরামর্শ দেন। তিনিও বলছেন, ‘‘ঠান্ডা জল খেলে ওজন বৃদ্ধির ভয় নেই।’’
গরম জল খেলে ওজন কমে, এমন ধারণাও সঠিক নয় বলেই জানাচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়, জলের তাপমাত্রার সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি বা কমার সম্পর্ক নেই। কিন্তু জল শরীরের জন্য জরুরি। জল কম খেলে বিপাকহার কমে যেতে পারে। তার ফলে হজমের সমস্যার পাশাপাশি ওজন বেড়ে যেতে পারে।
তবে শম্পা মনে করাচ্ছেন, ঠান্ডা জল অধিক পরিমাণে খেলে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। বিপাকহারের গতি কমতে পারে। এক-আধ বার ঠান্ডা জল খেলে সমস্যা নেই। কিন্তু কেউ যদি দিনভর অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খাওয়া অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেন, সে ক্ষেত্রে মেটাবলিজ়মে প্রভাব পড়তে পারে। বিপাকহার কমলে ওজন বাড়তেও পারে। গরম জল খাওয়া নিয়ে তিনি জানাচ্ছেন, জলের তাপমাত্রা হওয়া দরকার ৩৭-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। সুতরাং গরম নয়, ঈষদুষ্ণ জল খেলে বিপাক, হজম ভাল হবে।