Sugar in Food

স্বাস্থ্যকর ভেবে রোজ যা খাচ্ছেন তাতেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চিনি, কোন কোন খাবার বুঝে খেতে হবে?

স্বাস্থ্যকর ভেবে প্রাতরাশে যে সব সিরিয়াল খাওয়ার চল হয়েছে এখন, তাতে কিন্তু ভাল পরিমাণে ফ্রুক্টোজ বা সুক্রোজ় মেশানো থাকে। আবার শরীরচর্চার পরেই যে প্রোটিন বারে কামড় বসাচ্ছেন, তাতেও কিন্তু মেশানো থাকে চিনি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৫ ১৩:৪৫
Share:

চিনি নেই ভেবে এত দিন খাচ্ছিলেন, কোন কোন খাবারে চিনির মাত্রা খুব বেশি? ছবি: ফ্রিপিক।

ওজন কমাতে চিনি বা ময়দা খাওয়া ছাড়ছেন অনেকেই। রোজের রান্নায় চিনির বদলে গুড় বা মধুও ঢালছেন। চা-কফিও চিনি ছাড়াই খাওয়া শিখে গিয়েছেন। কিন্তু গোল বাধছে অন্য জায়গায়। সরাসরি চিনি না খেলেও রোজ দোকান থেকে কেনা যা যা খাচ্ছেন, তাতে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে শর্করা মেশানো আছে। যেমন স্বাস্থ্যকর ভেবে প্রাতরাশে যে সব সিরিয়াল খাওয়ার চল হয়েছে এখন, তাতে কিন্তু ভাল পরিমাণে ফ্রুক্টোজ বা সুক্রোজ় মেশানো থাকে। আবার শরীরচর্চার পরেই যে প্রোটিন বারে কামড় বসাচ্ছেন, তাতেও কিন্তু মেশানো থাকে চিনি। এমনকি, গ্রিক ইয়োগার্ট থেকে নানা রকম স্বাদের যে সব দই দোকানে পাওয়া যায়, সেগুলিও কি একেবারেই শর্করামুক্ত, তা কিন্তু নয়।

Advertisement

রোজের যে যে খাবারে চিনি মেশানো থাকে, তার একটা তালিকা দেওয়া রইল।

ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল ও কর্নফ্লেক্স

Advertisement

কর্নফ্লেক্স তো বটেই, নানা ধরনের ও স্বাদের ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল এখন পাওয়া যায়। বাড়ির ছোটদেরও তা খাওয়ানো হয়। এগুলিতে চিনি একেবারেই নেই বলে ভাবেন অনেকেই। আসলে কর্নফ্লেক্স হোক বা সিরিয়াল, সবেতেই স্বাদের জন্য চিনি বা সিরাপ মেশানো হয়েই থাকে। কোনও কোনওটিতে আবার মাত্রাতিরিক্ত মধুও মেশানো হয়। এমনও দেখা গিয়েছে, এক বাটি সিরিয়াল খেলে তিন চা-চামচ অবধি চিনি খাওয়া হয়ে যাবে।

প্রোটিন বার বা এনার্জি বার

শরীরচর্চার পর প্রোটিন বার অনেকেই খান। বাড়িতে তেমন জিনিস বানানো গেলেও দোকান থেকে কেনা প্রোটিন বা এনার্জি বারই খান বেশির ভাগই। এই ধরনের প্রোটিন বারে চিনি ভাল পরিমাণেই মেশানো থাকে। বেশ কিছু ব্র্যান্ডের প্রোটিন বারে চিনির মাত্রা নাকি ক্যান্ডি বারের চেয়েও বেশি থাকে।

বারবিকিউ সস, টম্যাটো কেচাপ

স্যান্ডউইচ বা অন্যান্য খাবারের সঙ্গে প্রায়ই টম্যাটো কেচাপ বা বারবিকিউ সস খাওয়া হয়। জানলে অবাক হবেন, মাত্র এক চামচ বারবিকিউ সসে ১৬ গ্রামেরও বেশি চিনি থাকে।

ফ্লেভার্ড দই

রোজকার পাতে দই থাকে অনেকেরই। রান্নাতেও ব্যবহার করেন কেউ। আবার কেউ খান দুধের বিকল্প হিসেবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজমশক্তি আরও ভাল করতে দইয়ের জুড়ি মেলা ভার। তবে মিষ্টি দই নয়, রোজের পাতে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ টক দই রাখতেই বলেন পুষ্টিবিদেরা। আর এখন নানা স্বাদের দই খাওয়ার চল হয়েছে। এই প্রকার দইয়ে নানা রকম রাসায়নিক মেশানো থাকে, যা স্বাস্থ্যকর নয়। এ ছাড়া চিনির মাত্রাও থাকে বেশি। অনেক প্যাকেটজাত দই পাস্তুরাইজেশন পদ্ধতিতে তৈরি হয়। ফলে এর মধ্যে ল্যাক্টোব্যাসিলি ব্যাক্টেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়। এই ব্যাক্টেরিয়াই প্রোবায়োটিকের যোগান দেয় শরীরে। তাই এই ধরনের দই না খাওয়াই ভাল।

প্যাকেটজাত ফলের রস এবং স্মুদি

প্যাকেটজাত ফলের রস এবং স্মুদিতে প্রচুর পরিমাণে চিনি যোগ করা হয়। এই সব ফলের রসে ম্যাপেল সিরাপ, সুক্রোজ় অত্যধিক পরিমাণে মেশানো থাকে। তাই প্যাকেটজাত ফলের রস বেশি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

ড্রাই ফ্রুটস

ওজন কমাতে সকালের বা বিকেলের জলখাবারে বা স্ন্যাক্সে অনেকেই ড্রাই ফ্রুটস খান। মনে রাখতে হবে, তাজা ফলের মতো ড্রাই ফ্রুটসে অতটা ফাইবার থাকে না, বদলে চিনির ঘনত্ব বেশি থাকে। তাই ড্রাই ফ্রুটস সকলের জন্য উপকারী না-ও হতে পারে। যেমন, শুকনো খেজুরে চিনির ঘনত্ব প্রায় ৬৪-৬৬ শতাংশ, কিশমিশে প্রায় ৫৯ শতাংশ, শুকনো অ্যাপ্রিকটে প্রায় ৫৩ শতাংশ।

সতর্ক থাকতে

খাবার কেনার সময় প্যাকেটের উপর কী কী পুষ্টি উপাদান লেখা আছে তা খেয়াল করতে হবে। লেবেলে যদি ‘সুক্রোজ়’, ‘ফ্রুক্টোজ়’, ‘গ্লুকোজ়’ বা ‘কর্ন সিরাপ’ লেখা দেখতে পান, তা হলে বুঝতে হবে সেই খাবারে চিনির মাত্রা বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement