অম্বল-গ্যাসের সমস্যায় কোন ফল ভাল? কোনটাই বা বাদ দেবেন? ছবি: সংগৃহীত।
সুস্থ হোন বা অসুস্থ— নিয়মিত ফল খাওয়া দরকার, বলেন চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদেরা। কারণ, ফলে আছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখা থেকে অন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি-সহ হরেক সমস্যায় কাজে আসে রকমারি ফল। এতে থাকে ফাইবারও। সেই কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের কষ্ট দূর করতে ফাইবার বেশি, এমন ফল খেতে বলেন চিকিৎসকেরা।
উপকার সব ফলেই রয়েছে। কিন্তু কোন সমস্যায় কোন ফল উপকারী? আবার কখন ফল ক্ষতিকরও হয়ে উঠতে পারে, বলছেন পুষ্টিবিদেরা। চেন্নাইয়ের পুষ্টিবিদ দীপলক্ষী শ্রীরাম জানাচ্ছেন, কোন ক্ষেত্রে কোন ফল কাজে আসে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
শিশু থেকে বয়স্ক— মলত্যাগের সময় কষ্টের সম্মুখীন হন যে কোনও বয়সিরাই। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করার জন্য ভাল উপায় পাকা পেঁপে। এতে থাকা প্যাপাইন নামক উৎসেচক প্রোটিন পরিপাকে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। পেঁপেয় থাকা ফাইবারও পেটফাঁপা কমাতে, পেট পরিষ্কারে সাহায্য করে।
অম্বল
অম্বলের সমস্যায় ভোগেন? কলা বেছে নিতে পারেন। কলায় অ্যাসিডের পরিমাণ কম। এতে থাকে পেকটিন, যা এক ধরনের ফাইবার। পাকস্থলির গায়ে এই ফাইবার হালকা পরত ফেলে দেয়। ফলে অম্বলের জন্য হওয়া জ্বালা ভাব কমে। পাকস্থলির পিএইচ মাত্রা বা অম্ল-ক্ষারের মাত্রা ঠিক রাখতেও কলা সাহায্য করে। তবে পুষ্টিবিদ বলছেন, কলা পাকা হতে হবে। আধ কাঁচা বা কাঁচাকলা কিন্তু কখনও কখনও কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি নির্ভর করে ব্যক্তি বিশেষের শরীরের উপরে।
পেটফাঁপা
খাওয়ার পরে অনেকেরই পেটে ফোলা ভাব লক্ষ করা যায়, পেট ফাঁপে। অস্বস্তি হয়। বিশেষত খুব বেশি প্রোটিন জাতীয় খাবার খেলে বা অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে গেলে এমন সমস্যা হয়। খাওয়ার কিছু পরে কয়েক টুকরো আনারস খেলে এমন সমস্যার সমাধান হতে পারে। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন। প্রোটিন পরিপাকে এই উৎসেচক অত্যন্ত কার্যকর। এতে রয়েছে প্রদাননাশক উপাদান। ফলে পেটে যে অস্বস্তি হয়, তা কমতে পারে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ ফল
পেয়ারায় শুধু ফাইবার নয়, আর পাঁচটি ফলের চেয়ে বেশি প্রোটিনও মেলে। ১০০ গ্রাম পেয়ারায় ২.৬ গ্রাম-৩ গ্রাম প্রোটিন মেলে। এ ছাড়াও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পেয়ারায় মেলে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
ক্ষতিকর হতে পারে কোন ফল?
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ উপকারী মুসাম্বি লেবু ক্ষেত্রবিশেষে সমস্যার কারণ হতে পারে। লেবুতে অ্যাসিডের মাত্রা বেশি। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর পরামর্শ, যাঁদের অম্বলের ধাত আছে তাঁদের খালিপেটে পাতিলেবুর জল না খাওয়া ভাল। লেবু খেলে যদি সমস্যা হয়, সেটা এ়ড়িয়ে যাওয়া দরকার। পুষ্টিবিদ দীপলক্ষ্মী জানাচ্ছেন, পেঁপে বা আনারসের মতো হজমে সহায়ক উৎসেচক মেলে না এতে। উল্টে খাওয়ার পরে মুসাম্বি লেবু খেলে অম্বলের সমস্যা হতে পারে। বিশেষত পরিমাণে বেশি খেলে। যদিও কোনও কোনও পুষ্টিবিদ বলেন, মুসাম্বি লেবুর রস জল মিশিয়ে পাতলা করে খেলে এমন সমস্যা এড়ানো যেতে পারে।