প্রসবের আগের মুহূর্তে গওহরের নাচ ঘিরে উঠছে নানা প্রশ্ন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
সদ্য দ্বিতীয় বার মা হয়েছেন অভিনেত্রী গওহর খান। অভিনেত্রী সমাজমাধ্যমের পাতায় সিংহ-সিংহী ও তাঁদের শাবকদের ছবি দিয়ে পুত্রসন্তান আগমনের কথা ঘোষণা করেন। সম্প্রতি গওহরের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শুট করা একটি ভিডিয়ো ঘিরে নেটমাধ্যম জুড়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সন্তান প্রসবের ঠিক আগের মুহূর্তে স্বামী জ়ায়েদ দরবারের সঙ্গে ইংরেজি গানের ছন্দে নাচতে দেখা গিয়েছে অভিনেত্রীকে। প্রসবের আগে সমাজমাধ্যমে এসে এমন নাচ করার কী দরকার, সেই নিয়েই উঠেছে নানা প্রশ্ন।
ইনস্টাগ্রামে গওহর খান যে ভিডিয়োটি দিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে গোলাপি রঙের হাসপাতালের পোশাক পরে স্বামী জ়ায়েদের সঙ্গে বেশ খোশমেজাজে হালকা নাচানাচি করছেন গওহর। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নাচানাচি করা আদৌ কি ঠিক? গওহরের নাচ এই প্রশ্নই তুলছে অনেকের মনে। স্ত্রীরোগ চিকিৎসক সাত্যকি হালদার বলেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নাচানাচি করা একেবারেই উচিত নয়। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার প্রথম দিকে এমনিতেই হবু মায়েদের খুব সাবধানে থাকতে বলা হয়। এই সময়ে গর্ভপাতের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। কোনও রোগীকে আমি কখনওই নাচ করার পরামর্শ দেব না। এই সময়ে অনেক অভিনেত্রীকে শীর্ষাসনের মতো যোগাসন করতেও দেখা যায়, তাঁদের দেখাদেখি অনেকেই সেই স্রোতে গা ভাসান। এতে কিন্তু নিজেদের বিপদ তাঁরা নিজেই ডাকছেন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হালকা শরীরচর্চা কিংবা কিছু বাছাই করা যোগাসন, প্রাণায়াম করাই যায়। তবে নাচ কিংবা ভারী শরীরচর্চা কখনওই করা উচিত নয়।’’
গওহরের নাচে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই নেটাগরিকদের কেউ কেউ বলছেন, তিনি নাকি হবু সন্তানকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন। এই অবস্থায় সমাজমাধ্যমে চর্চায় থাকার জন্য নাচ করাটা কি খুব জরুরি ছিল? অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর মহিলাদের নিজেকে অসুস্থ ভাবার কোনও কারণ নেই, এমনটাই মত চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজের কাজের মধ্যে থাকাই ভাল। প্রয়োজনের বেশি খাওয়াদাওয়া, শরীরচর্চা বন্ধ রাখা এ অবস্থায় ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। বরং সঠিক ডায়েট, সাঁতার কাটা, হাঁটাহাঁটি করা, যোগাসন করার অভ্যাস করতে হবে। তা হলেই কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।’’
চিকিৎসকদের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেকেই ডান্স মুভমেন্ট থেরাপি করান, অবশ্যই প্রশিক্ষকের কড়া নজরদারি থাকে সেখানে। খুব বেশি লাফানো-ঝাঁপানো নয়, মন ভাল রাখতে হালকা শরীর দোলানো মুভমেন্ট করানো হয় সে ক্ষেত্রে। তবে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অতিরিক্ত লাফালাফি করা মোটেও উচিত নয়। বিশেষ করে যাঁদের প্রেগন্যান্সি ঝুঁকিপূর্ণ, তাঁদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক থাকা জরুরি।