Heat Wave safety tips

ভ্যাপসা গরমে শুধু দিনে নয়, বিপদ রাতেও, বদ্ধ ঘরে হতে পারে হিট স্ট্রোক! সতর্ক করছেন চিকিৎসক

কেবল দিনের বেলা নয়, রাতেও হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা প্রবল। বিশেষ করে যাঁরা জল কম খান, যাঁদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল অথবা ক্রনিক অসুখ রয়েছে, তাঁরা বেশি ঝুঁকিতে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৫ ১২:২৪
Share:

রাতে হিট স্ট্রোক থেকে কী ভাবে বাঁচবেন? ফাইল চিত্র।

ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস উঠছে। দিনের বেলা তাপমাত্রা চল্লিশ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছোচ্ছে। রাতেও গরম কমার নাম নেই। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, দেশের অন্তত ৪১৭টি জেলা তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে। তাপমাত্রার সঙ্গে আর্দ্রতার পাল্লাও ভারী। এই প্রচণ্ড গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কেবল দিনের বেলা নয়, রাতেও হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা প্রবল। বিশেষ করে যাঁরা জল কম খান, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল অথবা ক্রনিক অসুখ রয়েছে, তাঁরা বেশি ঝুঁকিতে।

Advertisement

রাতের বেলা বদ্ধ ঘরেও হতে পারে হিট স্ট্রোক

প্রখর রোদে শুধু রাস্তায় ঘোরাঘুরি করলে নয়, বাড়িতে থেকেও হতে পারে হিট স্ট্রোক! তাপপ্রবাহ চলাকালীন এই বিষয়টি নিয়েও সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। অনেক সময়েই দেখা যায়, বাড়িতে থাকা অবস্থাতেও শরীর খারাপ লাগছে, মাথা ঘোরা, বমি ভাব, অতিরিক্ত ক্লান্তি রয়েছে। সেই সঙ্গে বারে বারেই গলা শুকিয়ে যাওয়া, মাথা যন্ত্রণাতেও ভুগছেন অনেকে। এই সবই হচ্ছে অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্যেই।

Advertisement

এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, তীব্র গরমে ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখা খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। বাইরের রোদে থাকা অবস্থায় হিট স্ট্রোক হলে বা হওয়ার আগে যে উপসর্গ কিংবা লক্ষণ দেখা যায়, সেই একই রকমের সমস্যা ঘরে থেকে আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও দেখা যায়। তাই রাতে যখন শোয়ার সময়ে ঘর যাতে ঠান্ডা থাকে, তা দেখবে হবে। বাতানুকূল যন্ত্র না থাকলে জানলা খোলা রাখুন, ঘরে গাছ রাখা ভাল। ছাদের নীচে ঘর হলে ছাদ ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ৪০ থেকে ৬৪ শতাংশের ক্ষেত্রে মৃত্যু এড়ানো সম্ভব না হওয়ার প্রধান কারণই হল ঠিক সময়ে শরীর ঠান্ডা (কুলিং) না করা। রাস্তায় থাকা অবস্থায় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে যতটা দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়, বাড়িতে সেটা কিছুটা সময় নিয়ে হয়। বাইরের তাপের কারণে ঘরের ভিতরেও গরম বাতাস তৈরি হয়, সেটিকে বাইরে বার করে দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। না হলে পুরো ঘরটাই আস্ত ‘হিট চেম্বার’-এ পরিণত হয়। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৭.৭-৯৯.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত থাকে। সেই তাপমাত্রা গরমে এবং ঠান্ডায় কতটা বাড়বে বা কমবে, তা নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস। যদি তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছয়, তখন শরীরে অস্বস্তি শুরু হয়। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেলে ঝুঁকি তৈরি হয়। শরীরে জলের ঘাটতি যেমন শুরু হয়, তেমনই খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। তাতে শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং হিট-শক প্রোটিন তৈরি হতে থাকে এবং হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

ঘরের ভিতরেও যদি শরীরে অস্বস্তি হতে থাকে, তা হলে দেরি না করে শরীর ঠান্ডা করতে হবে আগে। চিকিৎসকের পরামর্শ, হিট স্ট্রোকে আক্রান্তকে বাতানুকূল ঘরে রেখে যতটা লাভ হবে, তার চেয়েও বেশি হবে স্নান করিয়ে দিলে। সেই সঙ্গে ঘাড়ে, কানে, বাহুমূলে অথবা কুঁচকিতে আইসপ্যাক দিলে ভাল। প্রচুর পরিমাণে জল, ওআরএস খাওয়াতে হবে। যদি অবস্থার অবনতি হয়, তা হলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement